ঢাকা | সোমবার
২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভোজ্যতেলে ভ্যাটের লাগাম

ভোজ্যতেলে ভ্যাটের লাগাম
  • ভ্যাট সুবিধা ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি
  • সয়াবিন-পাম অয়েলে ২০ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার

ভোজ্যতেলের মূল্য বৃদ্ধি কম ভোগায়নি দেশের মানুষকে। এবার তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে পরিশোধিত-অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেল আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট সুবিধার মেয়াদ তিন মাস বাড়ানো হচ্ছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে এ বিষয়ে শিগগিরই প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভোজ্যতেলে বিদ্যমান ভ্যাট সুবিধার মেয়াদ ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হতে পারে। এর আগে এই সুবিধা গত ৩০ জুন পর্যন্ত বহাল ছিল। গতকাল রবিবার এনবিআরের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ভোক্তাদের স্বার্থ বিবেচনা করে এ সুবিধার মেয়াদ ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। বর্তমানে ভোজ্যতেলে শুধু আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ আছে।

এর আগে গত ১৬ মার্চ এনবিআর থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে পরিশোধিত অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেল এবং অন্যান্য পরিশোধিত পামওলিন তেলের ওপর আরোপণীয় মূল্য সংযোজন কর ১৫ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। তারও আগে গত ১৪ মার্চ ভোজ্যতেলে স্থানীয় উৎপাদন ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে ভ্যাট মওকুফ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল এনবিআর। ওই আদেশ অনুসারে পরিশোধিত সয়াবিন ও পাম অয়েলে মোট ২০ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছিল।

বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী গত এপ্রিলে পাম অয়েলের টনপ্রতি বুকিং মূল্য ছিল ১ হাজার ৬৮৩ ডলার, সয়াবিনের মূল্য ছিল ১ হাজার ৯৪৮ ডলার। মে মাসের মাঝামাঝি পাম অয়েলের বুকিং মূল্য কমে নেমে আসে ১ হাজার ৪২৫ ডলারে এবং সয়াবিনের বুকিং মূল্য নেমে দাঁড়ায় ১ হাজার ৮৩০ ডলারে। এ হিসেবে পাম অয়েলের বুকিং কমেছে ২০০ ডলারের কিছু বেশি আর সয়াবিনের বুকিং কমেছে প্রায় ১২০ ডলার। স্বাভাবিকভাবে ১০০ ডলারের বেশি দামের উত্থানে দেশীয় আমদানিকারকরা দাম সমন্বয়ের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুরোধ জানালেও দাম কমে যাওয়ার ১২ দিন পেরোলেও ব্যবসায়ী বা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কারো তরফ থেকে কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।

ইতিপূর্বে ১১ মে এক সভায় ১৫ দিন পরপর আন্তর্জাতিক বাজারমূল্যের সঙ্গে সমন্বয় করে ভোজ্যতেলের দাম সমন্বয়ের দাবি জানিয়েছিলেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে ১৫ দিন পরপর ভোজ্যতেলের দাম সমন্বয় করতে হবে। বিশ্ববাজারে দাম কমলে কমাতে হবে, আর দাম বাড়লে বাড়াতে হবে। আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার ছাড়াও আগামী ঈদুল আজহা পর্যন্ত বাণিজ্যিকভাবে পরিশোধিত বোতলজাত ও খোলা সয়াবিন তেল আমদানি উন্মুক্ত করা; সান ফ্লাওয়ার, ক্যানোলাসহ সব ধরনের ভোজ্যতেল আমদানিতে শুল্ক ও কর প্রত্যাহারে সরকারের কাছে সুপারিশ করেছিলেন তিনি।

দেশের বাজারে এ মুহূর্তে ভোজ্যতেলের দাম স্থিতিশীল। বর্তমানে এসও (সাপ্লাই অর্ডার) পর্যায়ে মণপ্রতি (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) পাম অয়েল লেনদেন হচ্ছে ৬ হাজার ২০০ টাকায়, সুপার পাম অয়েল ৬ হাজার ৪০০ ও সয়াবিন লেনদেন হচ্ছে ৭ হাজার ১০০ টাকায়। এসও পর্যায়ে দাম কম থাকলেও পাইকারি (এসও দিয়ে মিলগেট থেকে সংগ্রহ করার পর খুচরা ক্রেতাদের ভোজ্যতেল ক্রয়মূল্য) পর্যায়ে পাম অয়েল বিক্রি হয়েছে মণপ্রতি ৬ হাজার ৭০০ টাকা, সুপার পাম অয়েল ৬ হাজার ৮০০ ও সয়াবিন বিক্রি হয়েছে ৭ হাজার ৫০০ টাকায়।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন