ঢাকা | শনিবার
৮ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
২৩শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হালকা প্রকৌশল শিল্পে সুবাতাস

হালকা প্রকৌশল শিল্পে সুবাতাস

প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে আমদানি নির্ভরতা কমবে। কর্মসংস্থান হবে ১০ হাজার মানুষের

হাফিজুর রহমান, অফিস প্রধান, বিসিক যশোর

যশোরবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। এ জেলায় নির্মাণ হতে যাচ্ছে বহুল প্রত্যাশিত ‘বিসিক লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প পার্ক’। শিল্প মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে জেলা বিসিকের কর্মকর্তারা এ নিয়ে প্রাথমিক সার্ভে শুরু হয়েছেন। শহরতলীর বিল হরিণায় কাজীপুর, রামনগর, ভাটাপাড়া মৌজার জমি পরিদর্শন করেছেন। অধিগ্রহণের জন্য প্রয়োজন হওয়া সেখানকার ৪শ’ একর জমির বর্তমান অবস্থা পর্যবেক্ষণ ও স্থানীয় ভূমি অফিস থেকে খতিয়ান পর্চা সংগ্রহ করেছেন। একই সাথে যশোর জেলা প্রশাসকের সম্মতি চেয়ে গত মঙ্গলবার বিসিকের কর্মকর্তারা চিঠি দিয়েছেন।

যশোর শহর ও শহরতলীতে রয়েছে কয়েকশ ছোট বড় অটোমোবাইল কারখানা। সেখানে তৈরি করা হয় গাড়ির মূল্যবান যন্ত্রাংশ। মূল্যবান যন্ত্রাংশ সেখানে তৈরি হওয়ায় সাশ্রয়ী দামে কিনতে পারেন দেশের গাড়ির মালিকরা। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের দক্ষ করে গড়ে তোলা গেলে আমদানি নির্ভরতা কমে যাবে। একই সাথে প্রতিষ্ঠানগুলো এক ছাতার নিচে এনে সেখানে আধুনিক মানের যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ তৈরি করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশের রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টির দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা প্রতিশ্রুতি দিলেও দৃশ্যমান কিছুই দেখননি যশোরবাসী।

সর্বশেষ বিসিকের চেয়ারম্যান যশোরের সন্তান মুহা. মাহবুবর রহমানের আন্তরিকতায় সুখবর পেতে যাচ্ছে যশোরবাসী। তিনি যশোর বিসিকে চিঠি দিয়ে জমি দেখার নির্দেশ দেন। গত সপ্তাহে যশোর শিল্পনগরী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বে) মেহেদী হাসানসহ অন্যরা বিল হরিণায় জমি পরিদর্শনে যান।

মেহেদী হাসান মুঠোফোনে বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে প্রাথমিক সার্ভে করা হচ্ছে। তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে পাঠানো হবে। তবে সবকিছুই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তবে ‘বিসিক লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প পার্ক’ স্থাপিত হলে এ জেলা বদলে যাবে।

বিসিক যশোরের উপ মহাব্যবস্থাপক (ভারপ্রাপ্ত) ও অফিস প্রধান হাফিজুর রহমান মুঠোফোনে জানান, বাংলাদেশে লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্যের বর্তমান বাজার প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। বছরে দেশে ৯ হাজার মিলিয়ন ডলার আমদানি করতে হয় হালকা প্রকৌশল খাতে। যশোরে এটা বাস্তবায়ন করতে পারলে আমদানি নির্ভরতা কমে যাবে। এখানে প্রায় ১০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে।

তিনি আরো বলেন, বিসিক যশোর মাত্র ৫০ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত। ১৯৬৭ সালে গড়ে উঠে এ শিল্পনগরী। এখানে জায়গা নেই। এরপরও সরকার প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে। এখান থেকে ১৯ দেশে পণ্য রপ্তানি করা হয়। যশোরে ‘বিসিক লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প পার্ক’ স্থাপন হলে একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। অর্থনীতির চেহারা বদলে যাবে গোটা যশোরাঞ্চলের।

এক প্রশ্নের জবাবে বিসিক যশোরের উপ মহাব্যবস্থাপক বলেন, কার্যক্রম শুরু করতে মে মাসে যশোর বিসিকে চিঠি আসে। চিঠি পেয়ে কার্যক্রম শুরু করেছি। আমাদের কাজ প্রাথমিক পর্যায়ে। তবে ধাপে ধাপে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের কাছে প্রাথমিক সম্মতিপত্র পেতে চিঠি দিয়েছি। ওই সম্মতিপত্র পেলে বিসিক দফতরে প্রেরণ করা হবে।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন