ঢাকা | রবিবার
২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পোশাকের মতোই সম্ভাবনা প্রিন্টিং খাতে

পোশাকের মতোই সম্ভাবনা প্রিন্টিং খাতে
  • সরকারি নীতিসহায়তা পেলে পোশাকের মতোই অবদান রাখবে

প্রিন্টিংখাতের পরোক্ষ রপ্তানি প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার। যা দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখছে

-আমিন হেলালী, সহ-সভাপতি, এফবিসিসিআই

দেশে মাত্র ১১ ধরনের কাগজ উৎপাদন হয়। বাকি কাগজের যোগান আমদানি নির্ভর। তবে সেসব কাগজ আমদানিতে ৪৭ শতাংশ শুল্ক পরিশোধ করতে হয়। অথচ কাগজ উৎপাদনে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েও ভারতে আমদানি শুল্ক ১৮ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ায় ১৯ শতাংশ এবং চীনে এ হার মাত্র ১৭ শতাংশ। আমদানি নির্ভরতার কারণে বাংলাদেশে এই হার ৩ থেকে ৫ শতাংশ করার জোর দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। সেই সঙ্গে জাতীয় পাঠ্যক্রমের বইয়ে ব্যবহৃত কাগজ শুল্কমুক্ত করার আহ্বানও জানান তারা।

কার্টন প্রস্তুতকারক ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, কাগজসহ অন্যান্য কাঁচামালের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে কোনো নিয়মনীতি মানা হয় না। তাই বেশিদামে পণ্য কিনে কম দামে কার্টন বিক্রি করে লোকসান দিতে বাধ্য হন তারা। এ কারণে প্রতিবছরই এই ব্যবসা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন উদ্যোক্তারা। এছাড়াও কাঁচামাল কেনার সময় ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়করের পাশাপাশি উৎপাদিত পণ্যের ওপর ৭ শতাংশ টিডিএস দিতে হয়- যা অযৌক্তিক বলে মনে করেন কার্টন প্রস্তুতকারকরা।

কার্টন প্রস্তুতকারকরা আরও বলছেন, গেল এপ্রিলে রপ্তানিতে আগ্রহী করে তুলতে আংশিক রপ্তানিতব্য পণ্যের আমদানিকৃত কাঁচামাল ও প্রয়োজনীয় উপকরণ শতভাগ ব্যাংক গ্যারান্টির বিপরীতে ইউডি ও ইউপির ভিত্তিতে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ছাড় প্রদান করার নির্দেশনা দিয়ে গেজেট প্রকাশ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম কাস্টমসের কোনো সহযোগিতা মিলছে না বলে অভিযোগ করেন তারা।

এমন পরিস্থিতিতে দেশীয় প্রস্ততকারকরা যেসব কাগজ উৎপাদন করেন না সেসব কাগজ আমদানিতে শুল্ক কমানোর দাবি জানিয়েছেন কাগজ আমদানিকারক, প্রিন্টিং ও প্যাকেজিং ব্যবসায়ীরা। গত শনিবার এফবিসিসিআইতে আয়োজিত পেপার, পেপার প্রডাক্টস ও প্যাকেজিং ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথম বৈঠকে এ দাবি জানান তারা।

বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআই সহ-সভাপতি আমিন হেলালী জানান, বিশ্বে প্রিন্টিং ও প্যাকেজিং পণ্যের আউটসোর্সিং বাজারের আকার ২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ বাজার ধরার জন্য বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের চেষ্টা করা উচিৎ। এছাড়াও প্রায় প্রতিটি প্যণ্যের উৎপাদন খরচের ১৫ শতাংশ ব্যয় হয় প্যাকেজিং খাতে। সে হিসেবে এ খাতের পরোক্ষ রপ্তানি প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার। তাই দেশের অর্থনীতিতে প্রিন্টিং ও প্যাকেজিং খাতের অবদান অনেক। তবে সে অনুযায়ী সরকারের নীতি নির্ধারণে পর্যাপ্ত মনোযোগ পাচ্ছে না। এ খাতের উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে একটি সমন্বিত নীতিমালা প্রণয়নের ওপর জোর দেন তিনি।

স্ট্যান্ডিং কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম ভরসা বলেন, কাগজ ও কাগজজাত পণ্যখাতের উন্নয়নে উৎপাদক ও আমদানিকারকদের মধ্যে সহযোগিতামূলক সমন্বয় প্রয়োজন। এসময় দেশীয় কাগজজাত পণ্য উৎপাদকদের বিদেশি বাজার বিশেষ করে ভারতের সেভেন সিস্টার্সের বাজার ধরার জন্য আহ্বান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে কমিটির চেয়ারম্যান এশারত হোসেন বলেন, সরকারি নীতি সহায়তা পেলে প্রিন্টিং খাত তৈরি পোশাকের মতোই অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারবে। সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, এফবিসিসিআইর পরিচালক বিজয় কুমার কেজরিওয়াল, আবু মোতালেব, হারুন অর রশীদ, রেজাউল ইসলাম মিলন ও এফবিসিসিআইর মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হকসহ অন্যান্যরা।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন