করোনার ধকল কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে রূপগঞ্জের ভোলাবো ইউনিয়নের প্রায় ২৫০ পোল্ট্রি খামার। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আরো শতাধিক পোল্ট্রি খামার রয়েছে বলে উপজেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। করোনার প্রভাবে রূপগঞ্জের ধুন্ধুমার বাণিজ্যখ্যাত এলাকা ভোলাবোপোল্ট্রি শিল্পে ধ্বস নেমেছিলো। গোটা উপজেলার ৩৬০ খামারের সঙ্গে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে জড়িত দুই হাজার শ্রমিক ও তাদের পরিবারে হাসি ফুটেছে। শুধু ভোলাবো পোল্ট্রি খামারগুলো থেকে মাসে ৪ কোটি আর বছরে ৫২ কোটি টাকা লেনদেন হয় বলে পোল্ট্রি মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে।
ভোলাব ঘুরে খামারী মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভোলাবোর পোল্ট্রি শিল্পের বাণিজ্য কম করে হলেও দুই যুগ আগের। শুরুতে কয়েকজন ব্যবসা শুরু করলেও এক দশক আগে ভোলাবো এলাকায় ঘরে ঘরে পোল্ট্রিশিল্প গড়ে উঠে। একসময় ভোলাবোতেই গড়ে উঠে ৪০০ পোল্ট্রি খামার। কয়েক বছর আগে হঠ্যাৎ বার্ড ফ্লু নামক ঝড় এসে এক ধাক্কায় এ সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ২৫০-তে।
খামারী মালিকরা বলেন, করোনার প্রভাবে পোল্ট্রি মুরগির বিকিকিনিতে এক প্রকার ধ্বস নেমেছিলো। বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনা প্রভাবে পোল্ট্রি মুরগির উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছিলো। করোনার প্রভাব না থাকায় এ শিল্প আবারো ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
খামারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখানকার ব্রয়লার-লেয়ার মুরগী ও উৎপাদিত ডিম ডাঙ্গা পোল্ট্রি শিল্প মালিক সমিতির মাধ্যমে রাজবাড়ি, ভৈরব, গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাইকারী যায়। শীতলক্ষ্যা পোল্ট্রি খামারের মালিক মনির হোসেন বলেন, ভোলাবোর ২৫০ খামার থেকে প্রতিদিন গড়ে প্রায় এক লাখ কেজি ব্রয়লার মুরগীর মাংস উৎপাদিত হয়। স্থানীয় খামারীরা জানান, ভোলাবোতে প্রতিদিন এক লাখ ডিম উৎপাদিত হয়। এছাড়া উপজেলার আরো শতাধিক খামারে মাংস ও ডিম উৎপাদিত হয়।
ভাই ভাই পোল্ট্রি খামারের মালিক আলমগীর হোসেন দেওয়ান বলেন, ভোলাবোর পোল্ট্রি খামারের ডিম সারাদেশে যায়। আগে প্রতিদিন এক থেকে দেড় লাখ ডিম পাইকারী যেতো। বিশ্বাস পোল্ট্রি খামারীর মালিক শফিকুল ইসলাম বলেন, বার্ড-ফ্লু আইসা একবার বড় ক্ষতি করে গেছে। এবার করোনা আইসা আরো ক্ষতি কইরা দিলো। তবে এখন আবার বাজার ভালো।
ভোলাবো ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন বলেন, রূপগঞ্জে অর্থনীতির চাকা সচল রাখে জামদানি শিল্পের পরে এ পোল্ট্রি শিল্প। অথচ এ শিল্পের দিকে কারো কোনো নজর নেই।
আনন্দবাজার/শহক