ভারতে পাস হওয়ায় নাগরিকত্ব (সংশোধন) আইনকে মুসলমানদের জন্য ‘বৈষম্যমূলক’ হিসেবে বর্ণনা করে পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর।
বর্ণবাদী ওই আইন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক মুখপাত্র জেরেমি লরেন্স শুক্রবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এক ব্রিফিংয়ে জানান, ‘ভারতের নতুন নাগরিকত্ব আইনটি মৌলিক চরিত্রের দিক দিয়েই বৈষম্যমূলক।’
তিনি আরও জানান এ বিষয় নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা জানি, এই বৈষম্যমুলক আইনের বৈধতা ভারতের সর্বোচ্চ আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে এবং আমাদের আশা মানবাধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক আইনে ভারতের যে দায়বদ্ধতা রয়েছে আদালত তা সতর্কতার সাথে বিবেচনায় নিয়ে নাগরিকত্ব আইনটির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। খবর রয়টার্স
সম্প্রতি ভারতীয় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের প্রস্তাবটি গত ১০ ডিসেম্বর পাস হয়। এর পরপরই তা উচ্চকক্ষ রাজ্যসভাতেও পাস হয়। গত ১২ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাষ্ট্রপতির সাক্ষরক্রমে তা আইনে পরিণত হয়।
বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে গিয়ে ভারতে শরণার্থী হওয়া কেবল মুসলিম ছাড়া- হিন্দু, খ্রিস্টান, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ ও পার্সি সম্প্রদায়ের মানুষকে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা রয়েছে এই আইনে।
কিন্তু বর্তমানে এই আইন থেকে মুসলমানদের বাদ দেয়ার কারণে এটি একটি বর্ণবাদী আইনে পরিনত হয়েছে।
ওই আইনের প্রতিবাদে সহিংস হয়ে পড়েছে গটা ভারত। গত দুদিন ধরে তীব্র বিক্ষোভ চলছে ভারতের বিভিন্ন অংশে। গত বৃহস্পতিবার গুয়াহাটিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন ৫ জন। শুক্রবার সেই সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছে রাজধানী দিল্লিতেও।
জেরেমি লরেন্স জানান, ওই আইনে ছয়টি ধর্মের মানুষের মতো মুসলমান শরণার্থীদের সুরক্ষার কথা বলা হয়নি। এর মধ্য দিয়ে সংবিধানে বর্ণিত সবার জন্য সমতা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতিকে যথাযথভাবে মূল্যায়নও করা হয়নি।
আনন্দবাজার/শাহী