দেশে উৎপাদিত কৃষিপণ্যের ৩০ শতাংশই নষ্ট হয় মোড়কিকরণ, পরিবহন ও সংরক্ষণের অভাবে। শুধুমাত্র আলু সংরক্ষণের জন্যই দেশে হিমাগার রয়েছে অন্যান্য ফসলের ক্ষেত্রে এমন কোনো সুবিধাই নেই। তাই দেশে খাদ্য সংরক্ষণ খাতে বিনিয়োগের বড় সুযোগ রয়েছে। আর এ ব্যাপারে আগ্রহী মধ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের দেশ সার্বিয়া।
বাংলাদেশে খাদ্যশস্যের সংরক্ষণ খাতে বিনিয়োগে এই আগ্রহের কথা জানিয়েছেন ঢাকা সফররত সার্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোলা সেলাকোভিক। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবুর সঙ্গে তিনি সৌজন্য সাক্ষাত করেন।
এসময় সার্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, খাদ্য সংরক্ষণে তার দেশের কোম্পানিগুলো বিশ্বের অন্যতম সেরা। সার্বিয়ান অনেক প্রতিষ্ঠান আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে ব্যবসা সম্প্রসারণ করেছে। বাংলাদেশেও এই খাতে সার্বিয়ার বিনিয়োগের মাধ্যমে লাভবান হতে পারে।
সাক্ষাতে আলোচনায় উঠে আসে সার্বিয়ার বৈদেশিক বাণিজ্যের বিষয়। মূলত সার্বিয়ার সঙ্গে ইউরোপ, ইউরেশিয় অর্থনৈতিক ইউনিয়ন ও তুরস্কের সাথে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি রয়েছে। তাই সার্বিয়া ও বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের জয়েন্ট ভেঞ্চারের মাধ্যমে ঐ দেশগুলোতে শূন্যশুল্কের পণ্য রপ্তানির সুবিধা গ্রহণের আহ্বান জানান দেশটির মন্ত্রী।
বাংলাদেশ ও সার্বিয়ার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়াতে সরকারি পর্যায়ে দ্বৈত কর পরিহার ও বিনিয়োগ সুরক্ষা সংক্রান্ত দুটি চুক্তি করা, বাংলাদেশ থেকে নির্মাণ ও কৃষিখাতে দক্ষ ও আধা দক্ষ জনবল নেয়ার ব্যাপারেও আগ্রহ প্রকাশ করেন নিকোলা সেলাকোভিক। একই সঙ্গে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের সার্বিয়া থেকে কৃষি প্রকৌশলী বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণের আহ্বান জানান।
মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, দেশে খাদ্য সংরক্ষণ খাতে সার্বিয়া বিনিয়োগ করলে প্রযুক্তি স্থানান্তরের সুযোগও পাবে বাংলাদেশ। বৈঠকে সার্বিয়ান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ও এফবিসিসিআই’র মধ্যে শিগগিরই সমঝোতা চুক্তি সইয়ের ব্যাপারেও সম্মত হয় দুই পক্ষ। এছাড়াও সূর্যমুখী বীজ আমদানি, সার্বিয়ার গমের চুক্তিভিত্তিক চাষাবাদ এবং ঢাকায় সার্বিয়ার দূতাবাস স্থাপনের ব্যাপারে আলোচনা হয় বৈঠকে।
সৌজন্য সাক্ষাতে আরো উপস্থিত ছিলেন সার্বিয়ার অ্যাসিসট্যান্ট মিনিস্টার ফর বাইল্যাটেরাল রিলেশন্স ভ্লাদিমির ম্যারিক, পররাষ্টমন্ত্রীর উপদেষ্টা ইভান জ্যাকসিক, এফবিসিসিআই’র সহ-সভাপতি হাবীব উল্ল্যাহ ডন, পরিচালক আমজাদ হোসাইন, শমী কায়সার, ড. নাদিয়া বিনতে আমীন, আবুল কাশেম খান ও মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক।
আনন্দবাজার/শহক
