রপ্তানিবাণিজ্যে তৃতীয়–
রপ্তানি বাড়াতে সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা
বাংলাদেশ থেকে পণ্য রপ্তানিতে শীর্ষে রয়েছে তৈরি পোশাক। তৃতীয় স্থানে পাট ও পাটজাত পণ্য। এরপরই চামড়া শিল্প। বাংলাদেশের মোট রপ্তানিতে চামড়া শিল্পের অবদান প্রায় ৪ শতাংশ আর দেশের মোট জিডিপির ০.৫ শতাংশ। এই খাতে প্রত্যক্ষভাবে প্রায় ৬ লাখ ও পরোক্ষভাবে আরও তিন লাখ মানুষের কর্মসংস্থান। আগামী নয় বছরে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য থেকে রপ্তানি আয়ে দশগুণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়েছে সরকার। এ বিষয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান বলেছেন, ২০২৫ সালের মধ্যে চামড়া রপ্তানিতে শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় বাংলাদেশকে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে একটি সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা প্রস্তুত করা হয়েছে।
গত সোমবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ লেবার ফেডারেশনের যৌথ আয়োজনে চামড়া শিল্পের সোশ্যাল কমপ্লায়েন্স কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে করণীয় শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকার চামড়া শিল্পকে অন্যতম অগ্রাধিকার শিল্প হিসেবে ঘোষণা করেছে এবং এই শিল্পটি ২০১৭ সালে ‘প্রডাক্ট অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ২০২৪ সাল নাগাদ এ খাত থেকে মোট রপ্তানি আয় বৃদ্ধি করে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং মোট জিডিপির ১ শতাংশ করার জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ট্যানারির জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ও গ্রহণযোগ্য এলডবলিউজি সার্টিফিকেট অর্জিত হলে কমপ্লায়েন্স চাহিদা পূরণের পাশাপাশি সরকার নির্ধারিত ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, চামড়া শিল্পের সোশ্যাল কমপ্লায়েন্স কর্মপরিকল্পনাটি বাস্তবায়নের গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হলো সব অংশীজনের সক্রিয় সম্পৃক্ততা। এজন্য প্রয়োজন একটি সময়াবদ্ধ পরিকল্পনা গ্রহণ করা। এ খাতের বিকাশে বেসরকারি খাতের সম্পৃক্ততা যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি পর্যাপ্ত কার্যকর অবকাঠামো গঠন, অর্থায়ন এবং অন্যান্য আইনকানুন ও বিধি-বিধান নিশ্চিত করা, অভিজ্ঞতা স্থানান্তরে সহায়তা এবং আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করার জন্য সরকারি খাতের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। পোশাক শিল্পের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী শিল্প হিসেবে গড়ে তুলতে এই কর্মপরিকল্পনাটি বাস্তবায়নে বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প হাতে নিতে হবে।
অনুষ্ঠানে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ এর সভাপতিত্বে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. এহছানে এলাহী, বিএসসিআইসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাক আহমেদ, আইএলও’র অফিসার ইন-চার্জ মরিস ব্রুক, বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ, শ্রমিক নেতা বাংলাদেশ লেবার ফেডারেশনের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম খান, সাধারণ সম্পাদক জে এম কামরুল আনাম এবং নির্বাহী পরিচালক একেএম আশরাফ উদ্দিন বক্তৃতা করেন।