ঢাকা | বুধবার
২৬শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
১২ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রবাসী আয়ে সুখবর

প্রবাসী আয়ে সুখবর

হাওয়া লেগেছে রেমিট্যান্সের পালে। মানুষের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় পরিবার-পরিজনের কথা মাথায় রেখে প্রবাসীরা পাঠাচ্ছেন বাড়তি টাকা। আর এতেই বেড়ে গেছে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স। গতকাল রবিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, রোজাকে কেন্দ্র করে প্রবাসীরা মার্চ মাসে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ১৮৬ কোটি ডলার। যা আগের মাসের চেয়ে ২৪ শতাংশ বা ৩৬ কোটি ৫৫ লাখ ডলার বেশি। গত ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৪৯ কোটি ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চে রেমিট্যান্স বাড়লেও; গত বছরের একই সময়ের সঙ্গে তুলনা করলে তা কমেছে। মার্চ মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী বাংলাদেশিরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ১৮৫ কোটি ৯৯ লাখ মার্কিন ডলার। যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫ কোটি ১০ লাখ ডলার বা প্রায় ৩ শতাংশ কম। গত বছরের মার্চে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯১ কোটি ৯ লাখ ডলার।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের ৯ মাসে (জুলাই-মার্চে) দেশে রেমিট্যান্স এসেছে এক হাজার ৫২৯ কোটি ৮৫ লাখ ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ এক লাখ ৩১ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল এক হাজার ৮৫৯ কোটি ৮২ লাখ ডলার। সে হিসেবে এ বছর ৩৩০ কোটি বা প্রায় ১৮ শতাংশ কম রেমিট্যান্স এসেছে। ২০২০-২১ অর্থবছরের পুরো সময়ে রেমিট্যান্সের উল্লম্ফন ছিল। ওই অর্থবছরে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসীরা, যা তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের ১২ মাসের মধ্যে সাত মাসেই ২০০ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে দেশে।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের টানা পাঁচ মাস কমার পর ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে প্রবাসী আয়ের গতি কিছুটা বেড়েছিল। এরপর ফেব্রুয়ারিতে আবারও ধস নামে। ফেব্রুয়ারিতে আসা রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ২১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, মার্চে ১৮৬ কোটি ডলার ব্যাংকিং চ্যানেলে আসা রেমিট্যান্সের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৩৩ কোটি ৩৪ লাখ ডলার। বিশেষায়িত দুটি ব্যাংকের মধ্যে একটিতে এসেছে ৩ কোটি ডলার। অন্যটিতে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি। এছাড়া বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৪৮ কোটি ৭৩ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৮৪ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। বরাবরের মতো বেসরকারি ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। মার্চে ব্যাংকটির মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৩৯ কোটি ১৪ লাখ মার্কিন ডলার। এছাড়া ডাচ-বাংলা ব্যাংকে এসেছে ২৬ কোটি ৬৩ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে ১২ কোটি ১৬ লাখ ডলার, সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ১০ কোটি ৮০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৮৭ কোটি ১৫ লাখ, আগস্টে ১৮১ কোটি, সেপ্টেম্বর মাসে ১৭২ কোটি ৬৭ লাখ, অক্টোবরে ১৬৪ কোটি ৬৮ লাখ, নভেম্বর ১৫৫ কোটি ৩৭ লাখ, ডিসেম্বরে ১৬৩ কোটি, জানুয়ারিতে ১৭০ কোটি ৪৫ লাখ এবং ফেব্রুয়ারি মাসে প্রবাসীরা পাঠান ১৪৯ কোটি ডলার। ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। অর্থাৎ কোনো প্রবাসী ১০০ টাকা দেশে পাঠালে তার সঙ্গে আরও ২ টাকা যোগ করে মোট ১০২ টাকা পাচ্ছেন সুবিধাভোগী।

এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালানাগাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত জানুয়ারিতে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৭০ কোটি ৪৩ লাখ ডলার। আগের মাসের চেয়ে ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স কমেছে প্রায় ২১ কোটি ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসের মধ্যে জুলাইয়ে রেমিট্যান্স এসেছে ১৮৭ কোটি ১৪ লাখ ডলার, আগস্টে ১৮১ কোটি, সেপ্টেম্বর মাসে ১৭২ কোটি ৬৭ লাখ, অক্টোবরে ১৬৪ কোটি ৬৮ লাখ, নভেম্বর ১৫৫ কোটি ৩৭ লাখ, ডিসেম্বরে ১৬২ কোটি ৯০ লাখ, জানুয়ারিতে ১৭০ কোটি ৪৪ লাখ এবং ফেব্রুয়ারিতে ১৪৯ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন