বায়ু দূষণে রীতিমতো বিপর্যস্ত রাজধানী ঢাকা। দীর্ঘমেয়াদী এই বায়ু দূষণের জন্য স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, হার্ট অ্যাটাক, ফুসফুস ক্যান্সার এবং ফুসফুসের রোগে বছরে প্রায় লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। তবে বায়ুদূষণজনিত রোগে দেশে কত সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হয়েছে তার কোনো সরকারি পরিসংখ্যান নেই।
চিকিৎসকেরা বলছেন, বায়ুদূষণজনিত রোগ বেড়েই চলছে। দূষনের করণে সব চেয়ে বেশি ঝুঁকিতে পড়ছে গর্ভবতী মা ও শিশুরা। অটিস্টিক শিশুর জন্ম হওয়ার একটি কারণ হচ্ছে দূষিত বায়ু। বায়ুদূষণের করণে বাচ্চাদের জন্মকালীন ওজন কম হয়ে থাকে এবং স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয়। হাঁচি-কাশি, ব্রঙ্কাইটিস, শ্বাসকষ্ট থেকে শুরু করে হতে পারে ফুসফুসের ক্যানসার। এছাড়াও কিডনি ও হৃদ্রোগের কারণও হতে পারে বায়ুদূষণ।
পরিবেশ অধিদপ্তরের বায়ুমান পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, গত ৪ বছর ধারাবাহিকভাবে দূষণের সময় বা দিন বাড়ছে। সাধারণত নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত রাজধানীর বাতাসে দূষণের মাত্রা বেড়ে অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে এবং সবচেয়ে বেশি দূষণ থাকে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। কিন্তু গত দুই বছর ধরে দেখা যাচ্ছে, মার্চ ও এপ্রিলের বাতাসও জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসের মতো খারাপ থাকছে।
জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক শাহেদুর রহমান খান জানিয়েছেন, গেল কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে শীতের সময় ছাড়া অন্য সময়েও রোগী বাড়ছে। এখন প্রতিদিন গড়ে ৮০০ থেকে ১ হাজার রোগী আসছে বহির্বিভাগে। যেখানে পাঁচ বছর আগে গড়ে প্রতিদিন ২০০-৩০০ জন রোগী আসত।
তিনি বলেন, বায়ুদূষণের কারণে হাঁচি, কাশি, নাক-চোখ জ্বালা হতে পারে। বক্ষব্যাধির অনেক রোগ বায়ুর সঙ্গে সম্পৃক্ত। সাম্প্রতিক সময়ে রোগী বেড়ে যাওয়ার একটি বড় কারণ বায়ুদূষণ। এ সময়টাতে বিশেষ করে শহরে ধুলাবালু বেড়ে যায়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, অকালমৃত্যু ডেকে আনার ক্ষেত্রেও বড় ভূমিকা রাখে বায়ুদূষণ। বছরে বায়ুদূষণজনিত রোগে জন্য বিশ্বব্যাপী ৭০ লাখ মানুষের অকালমৃত্যু হয়। এসব রোগের মধ্যে আছে হৃদ্রোগ, স্ট্রোক, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসে ক্যানসার এবং বাচ্চাদের তীব্র শ্বাসকষ্ট।
আনন্দবাজার /এম.কে