ঢাকা | মঙ্গলবার
২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৪০ টাকার পেঁয়াজ বিক্রি হয় ২৩০ টাকায়

টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে মিয়ানমার ও মিশর থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছাতে কেজিপ্রতি খরচ পড়ে মাত্র ৪০-৪৫ টাকা। অথচ বিস্ময়করভাবে সেই পেঁয়াজ কয়েক হাত ঘুরে স্থানীয় খুচরা বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে ২০০-২৩০ টাকা। অর্থাৎ কোজিতে লাভ হচ্ছে ১৬০-১৮০ টাকা।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, বিগত দুই মাস ধরে মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানি বেড়েই চলেছে। অথচ স্থানীয় বাজারে দাম কমানোর কোনো প্রভাব নেই। বুধবার অজ্ঞাত এক ফোনকলের সূত্র ধরে সিন্ডিকেটের কারসাজির অভিযোগ পাওয়ার পর টেকনাফ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) রাকিবুল ইসলামকে দ্রুত তদন্তের নির্দেশনা দেয়া হয়।কিন্তু বন্দরে যাওয়ার পর পুলিশকে বন্দর কর্তৃপক্ষ চরম অসহযোগিতা করে।

এরপর উখিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিহাদ আদনান তাইয়ানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল  বন্দরে প্রাথমিক তদন্তে দেখতে পান, আমদানিকৃত পেঁয়াজের সঙ্গে বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহের কোন মিল নেই। কাগজপত্রে হাজার হাজার টন পেঁয়াজ আনার চিত্র দেখালেও বাজারে ছাড়া হয়েছে খুবই সামান্য পরিমানে। অথচ আমদানিকৃত এই পেঁয়াজ কেনা হয়েছে মাত্র ৩২ টাকা কেজি দরে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিহাদ আদনান তাইয়ান জানিয়েছেন, গত অক্টোবর এবং নভেম্বর মাসে ৪২ হাজার ৪০৩ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে। মিয়ানমার থেকে দৈনিক গড়ে ৭০০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ  আমদানি হয়।

আমদানির নথি, বিল অব এন্ট্রি পর্যন্ত ঠিক দেখানো হলেও কি পরিমাণ পেঁয়াজ বাজারে ছাড়া হয়েছে তার কোন হিসাব দেখাতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা। তবে আমদানির কাগজ তারা যত্ন করে রাখলেও বন্দর থেকে ট্রাকে ডেলিভারির কোন কাগজপত্র  তাদের কাছে নেই। এমনকি গত ২৫ নভেম্বর ১ হাজার বস্তা ও ৩০ নভেম্বর ১ হাজার ৮০০ বস্তা আমদানিকৃত পেঁয়াজ কোথায় গেল তা বন্দর, আমদানিকারক এবং সিএন্ডএফ এজেন্ট কর্তৃপক্ষ দেখাতে পারেনি।

অন্যদিকে আমদানিকারকরা বলছেন, মিয়ানমার ও মিশর থেকে আমদানিকৃত চট্টগ্রামসহ সারা দেশে তারা সরবরাহ করছেন মাত্র ৪২ থেকে ৪৫টাকা কেজি ধরে।

টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানিকারকের সংখ্যা হচ্ছে ৩৫-৪০ জন।বিনা শুল্কে পেঁয়াজ আমদানির সুযোগ পেয়েও হাজার হাজার ডলার মিয়ানমারে পাচার করছে আমদানিকারকরা। সেই সাথে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ভোক্তা সাধারণকে হয়রানি ও সরকারকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করছে তারা।

 

আনন্দবাজার/এম.কে

সংবাদটি শেয়ার করুন