ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার উপকূলী অঞ্চলে সুমিষ্ট ফল তরমুজ চাষ করে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। এতে চাষিদের মাঝে প্রতিনিয়িত তরমুজ চাষে আগ্রহ বাড়ছে। এখানকার চরাঞ্চলে ভিক্টর সুগার, ওশেন সুগার, গেন্ডারি, বাংলালিংক, ব্ল্যাক বেরি, স্থানীয় অন্যান্য জাতের তরমুজ চাষ হচ্ছে। উপকূলীয় এ অঞ্চলে আবহাওয়া ও পরিবেশ তরমুজ চাষের বেশ উপযোগী হওয়ায় বেড়েছে এর চাষ। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় কৃষকরা বেশ আগ্রহী হয়ে উঠেছে তরমুজ চাষে। অন্য জেলার তুলনায় সোনাগাজীর তরমুজ সুমিষ্ট হওয়ায় ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের কাছে এর চাহিদাও বেশি। গত বছর প্রায় ১৬ হাজার টন তরমুজ উৎপাদন হয়েছে। এবার আরও বেশি পরিমাণে তরমুজ উৎপাদন হবে বলে আশা করছে কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তারা।
সোনাগাজী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন মজুমদার বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর ২৮ হেক্টর জেিমত বেশি তরমুজ চাষ হয়েছে। চলতি মৌসুমে এ চরাঞ্চলের ৩৪৫ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে।
‘উপজেলার চর দরবেশ, চর চান্দিয়া, আমিরাবাদ ও সদর ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এসব চরের জমি এক সময় মৌসুমে খালি পড়ে থাকত। আর এখন সেসব জমিতে আবাদ হচ্ছে। কৃষকরাও আগ্রহ নিয়ে তরমুজ চাষ করছেন। অনেক সম্মানিত ব্যক্তিরাও চরাঞ্চলে তরমুজ চাষে ঝুঁকছে। আগে নোয়াখালীর লোকজন এসে চাষ করত।
তরমুজ চাষি নিজাম উদ্দিন বলেন, অন্য এলাকার তরমুজের চেয়ে সোনাগাজীর তরমুজ আকারে অনেক বড় ও সুস্বাদু হওয়ায় বাজারেও এসব তরমুজের প্রচুর চাহিদা আছে। চট্টগ্রাম, নোয়াখালীসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকাররা এসে সরাসরি ক্ষেত থেকে তরমুজ কিনে নিয়ে যায়। অনেকে মৌসুমের আগেই চাষিদের অগ্রিম টাকা দিয়ে যায়।
ফেনী শহরের তরমুজ ব্যবসায়ী আব্দুল হক বলেন, গত বছর তরমুজ বিক্রি করে দেখেছি অন্য জেলার তুলনায় সোনাগাজীর তরমুজের প্রতি মানুষের চাহিদা বেশি। সোনাগাজী চরাঞ্চলের তরমুজের দাম বেশি হলেও মানুষের নেয়ার আগ্রহ বেশি। পরিবহন খরচ অল্প হওয়ায় আমাদের লাভ বেশি হয়। এজন্য আগেই চাষিদের সঙ্গে কথা বলে রেখেছি।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র নাথ জানান, সাধারণত ডিসেম্বরের শুরু থেকে জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত তরমুজের আবাদ শুরু হয়। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে মার্চের মাঝামাঝি পর্যন্ত জাতভেদে ফল বাজারজাত শুরু হয়। তিনি বলেন, এবার জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বৃষ্টি হওয়ায় কিছু কৃষকের জমিতে পানি জমে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চাষিরা সেসব জমিতে আবার চাষাবাদ করে। তরমুজ চাষের প্রতি কৃষকরা বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছে। আমরাও তাদেরকে সবসময় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। এবারও তরমুজের বাম্পার ফলনের আশা করছি।