গ্যাস সংকটের এক নম্বর সমাধান অনুসন্ধান। এতে চিন্তা অনেক কমে যাবে
–জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক বদরূল ইমাম
দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি বা এশিয়ান ইকোনমিক টাইগার হিসেবে খ্যাতি পাওয়া দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ। মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে এখানে এক ব্যাপক শিল্পায়ন ঘটে যাচ্ছে। আর শিল্পায়নের পূর্বশর্ত হিসেবে টেকসই জ্বালানি নিরাপত্তার গুরুত্ব এখানে দিন দিন বাড়ছে। দেশের শিল্প ও বিদ্যুৎখাতের উন্নয়ন পরিকল্পনা আবর্তিত হচ্ছে প্রাকৃতিক গ্যাসকে কেন্দ্র করেই। যা দেশের জ্বালানি চাহিদার ৪৬ শতাংশই পূরণ করছে। বিদ্যুৎখাতের গ্যাস নির্ভরতা বর্তমানে ৫২ ভাগ। বিদ্যমান ৬৬টি গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে আরো ১১টি নতুন কেন্দ্র যুক্ত হলে এ নির্ভরতা আরো বেড়ে যেতে পারে।
অন্যদিকে আবার প্রতি বছরই দেশের আবাসিক,পরিবহন ও শিল্পোৎপাদনে গ্যাসের ব্যবহারিক চাহিদা বেড়েই চলেছে। অথচ ক্রমবর্ধমান এ চাহিদার বিপরীতে দেশে গ্যাসের যোগান দিন দিন ফুরিয়ে আসছে। পাশাপাশি গ্যাসের আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সাম্প্রতিক রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব। একদিকে সরবরাহ সংকট আর অন্যদিকে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার শঙ্কায় বড় সংকটে গ্যাসের আন্তর্জাতিক বাজার। সবমিলিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়তে যাচ্ছে দেশের দ্রুত সম্প্রসারণশীল শিল্পায়নের অগ্রযাত্রা।
দেশে মজুদ গ্যাস
দেশের প্রাকৃতিক গ্যাসের বার্ষিক চাহিদা এক টিসিএফ বা ট্রিলিয়ন ঘনফুট। এর বিপরীতে গ্যাসক্ষেত্রগুলোতে মোট মজুদ ১০ ট্রিলিয়ন ঘনফুটের কিছু কম। শতভাগ উত্তোলনযোগ্য না হওয়ায় মজুদের সর্বোচ্চ ৭০-৭৫ শতাংশ ব্যবহার করা যেতে পারে। সে হিসাবে দেশে উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের মজুদ সর্বোচ্চ সাড়ে ৭ টিসিএফ।
বছরের চাহিদার বিবেচনায় এ মজুদে স্থানীয় চাহিদা মেটানো যাবে সর্বোচ্চ সাড়ে সাত বছর পর্যন্ত। এরপর বিকল্প কোনো উৎসের দিকে যেতে হবে। অবশ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়ে বলছেন, সাড়ে সাত বছরের আগেই কিন্তু মজুদ ফুরিয়ে আসবে। এ অবস্থায় এখনই বিকল্প উৎসের সন্ধান করা কিংবা নিশ্চিত করা না গেলে সামনের দিনগুলোতে জ্বালানিখাতে বড় ধরনের বিপর্যয়ের শঙ্কা রয়েছে।
গ্যাসের বিশ্ববাজার
প্রাকৃতিক গ্যাসের সঙ্কট বিবেচনায় ২০১৮ সাল থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করে আসছে সরকার। বর্তমানে দেশীয় গ্যাস সংকটে বিশ্ববাজার থেকে এলএনজি আমদানি অনিবার্য হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল কাতার ভ্রমণ করেছে। দেশটির সঙ্গে বিদ্যমান দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি সরবরাহে যে চুক্তি রয়েছে, তার আওতায় অতিরিক্ত আরো ১০ লাখ টন আমদানি করার আগ্রহ দেখিয়েছে জ্বালানি বিভাগ। তবে এ ব্যাপারে দ্রুতই সাড়া মিলবে না বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।
বৈশ্বিক জ্বালানির বাজার বিশ্লেষণকারী সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধে জ্বালানির বাজার এখন উত্তপ্ত। এ অবস্থায় অর্থনৈতিক শক্তিধর দেশগুলো তেল-গ্যাসকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করবে। ফলে বৈশ্বিক রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারে মেতে উঠবে শীর্ষ তেল-গ্যাস রপ্তানিকারক দেশগুলো। এ অবস্থায় রাশিয়াকে দমাতে ইউরোপে গ্যাস রপ্তানি জোরদার করার জন্য কাতারের প্রতি আহ্বান জানায় যুক্তরাষ্ট্র। ফলে এখন কাতার থেকে গ্যাস পাওয়া সহজ হবে না।
এর আগে এলএনজি সরবরাহ বাড়াতে গত বছর কাতার ও ওমানকে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করেছিল পেট্রোবাংলা। কিন্তু তাতেও ইতিবাচক কোনো ফলাফল আসেনি। বরং সরবরাহ কমানোর কথা জানিয়ে দেশ দুটি চিঠির জবাব পাঠায় পেট্রোবাংলাকে।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক বদরূল ইমাম মনে করেন এলএনজি আমদানিতে বছরে ৩০ হাজার কোটি টাকার চেয়ে বেশি খরচ পড়বে। জাপান, দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য এটি কোনো বিষয় না হলেও আমাদের মতো দেশের জন্য সহজ না। অন্যদিকে জ্বালানি আমদানিতে বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশকে শিশু বলে আখ্যা দেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অধ্যাপক ম তামিম।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব ধরণের ভর্তুকি থেকে বেরিয়ে আমার পথ খোঁজার নির্দেশনা দিয়েছেন। তাছাড়া আমদানি করা প্রতি ঘনফুট এলএনজির দাম দেশীয় গ্যাসের চেয়ে অন্তত ২৪ গুণ বেশি। তাই আমদানি থেকে দেশীয় গ্যাস উৎপাদনে নজর দেয়ার তাগিদ বিশেজ্ঞদের।
সংকট থেকে উত্তরণের উপায়
অনুসন্ধান বৃদ্ধি: সর্বশেষ ১৯৯৮ সালে আবিষ্কৃত হবিগঞ্জ জেলার বিবিয়ানা গ্যাস ক্ষেত্রের পর বাংলাদেশে বড় আকারের ক্ষেত্র পাওয়া যায়নি। এজন্য তিন দশকের অনুসন্ধানের উদাসীনতাকে দায়ী করছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক বদরূল ইমাম। দেশের সম্ভাবনাময় দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা এখনো অনুসন্ধানের বাইরে রয়েছে বলেও অভিযোগ এ জ্বালানি বিশেষজ্ঞের। অনুসন্ধানকে এক নম্বর সমাধান আখ্যা দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ অধ্যাপক বলেন, অনুসন্ধানে গেলে অনেক চিন্তা কমে যাবে। আরেক জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম তামিম বলেন, আমাদের নিজস্ব গ্যাস নেই- এ চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বড় ধরণের গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কার হওয়ার জায়গা হচ্ছে গভীর সমুদ্র। ভারত এবং মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সমুদ্র সীমা নিষ্পত্তি হলেও সমুদ্রে গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারের জন্য অনুসন্ধান চালানো হয়নি। যদিও সমুদ্র সীমা নিষ্পত্তির পরে মিয়ানমার বেশ দ্রুততার সঙ্গেই গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করেছে।
বঙ্গোপসাগরের গভীর-অগভীর অংশে ব্লকগুলোয় দুই দশক ধরে কোনো ধরনের অনুসন্ধান কার্যক্রম নেই। দেশে গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য বঙ্গোপসাগরের অফশোর ও অনশোরে (গভীর ও অগভীর) অংশকে মোট ২৬টি ব্লকে ভাগ করা হয়েছিল। এর মধ্যে গভীর সমুদ্রে ১৫টি ও অগভীর সমুদ্রে রয়েছে ১১টি ব্লক। এসব ব্লকে অনুসন্ধানের জন্য মাল্টি ক্লায়েন্ট সার্ভে না থাকায় বিদেশি কোম্পানিকে আকৃষ্ট করা যায়নি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, গভীর সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য বিদেশি কোম্পানিগুলোকে নিয়ে আসতে হবে। তথ্য দেয়া হয় না বলেই বিদেশি কোম্পানি আগ্রহী হয় না- এমন মন্তব্য অধ্যাপক বদরূল ইমামের।
কূপ সংস্কার: দেশে একসময় দিনে তিনশ কোটি ঘনফুট পর্যন্ত গ্যাস উৎপাদিত হয়েছে। পাঁচ বছর আগেও গ্যাসের দৈনিক উত্তোলন ছিল ২৮০ কোটি ঘনফুট। পেট্রোবাংলার হিসাব অনুযায়ী, দেশীয় কূপগুলো থেকে বর্তমানে প্রতিদিন ২৩০ কোটি ঘনফুট জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে। এর সঙ্গে সরবরাহ হচ্ছে আরো ৭৮ কোটি ঘনফুট এলএনজি। যদিও ২৭৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস তোলার সক্ষমতা ছিল এক বছর আগেও। এখন উৎপাদন বাড়াতে সব গ্যাসক্ষেত্রেই প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে।
অধ্যাপক বদরূল ইমাম বলেন, প্রতিটি গ্যাস ক্ষেত্রে আরো কূপ খনন করে উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব। তাছাড়া বসিয়ে রাখা গ্যাসক্ষেত্রগুলোকেও উৎপাদনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। টেকনিক্যাল পদ্ধতিতে বিদ্যমান গ্যাসক্ষেত্র থেকে উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব বলে করছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম. তামিম। তবে এতে দুই-তিন বছর লাগবে বলে তিনি মনে করেন।
ফের উৎপাদন
ভোলা দ্বীপে ২০১৮ সালে আবিষ্কৃত নর্থ গ্যাসক্ষেত্রটি পড়ে রয়েছে। অপর গ্যাসক্ষেত্র শাহবাজপুরে সক্ষমতার অর্ধেক উৎপাদিত হচ্ছে। ভোলা দ্বীপ থেকে মূল ভূখণ্ডে সংযোগ পাইপ তৈরি না করায় এ দুটি ক্ষেত্র থেকে পুরোদমে গ্যাস উত্তোলন ও সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। একইভাবে ২০২০ সালে আবিষ্কৃত সিলেটের জকিগঞ্জ ক্ষেত্র থেকে গ্যাস সরবরাহের জন্য কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ছাতক ক্ষেত্রে বড় আকারের মজুত থেকে মাত্র সামান্য গ্যাস তোলা হয়েছে ২০০৩ সালে। তবে পাশে আরেকটি কূপ খনন করতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটায় নাইকো কোম্পানি। ফলে কূপটি নষ্ট হয় ও গ্যাস উত্তোলন স্থগিত হয়। আন্তর্জাতিক আদালতে মামলায় জড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশ ও নাইকো। আজ প্রায় ১৯ বছর ধরে আইনের লড়াইয়ে আটকে আছে সম্ভাবনাময় এই ক্ষেত্রটির গ্যাস উত্তোলন।
পেট্রোবাংলার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, উৎপাদনে না থাকা সাত ক্ষেত্রে গ্যাসের মজুদ রয়েছে এক টিসিএফের কিছু বেশি। ফলে এসব কূপ পুনরায় চালু করে গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধির কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। দিনে অন্তত ৫ কোটি ঘনফুট উৎপাদন বাড়াতে পারলে ৬ লাখ ৫০ হাজার ডলারের গ্যাস আমদানি ঠেকানো সম্ভব। এতে বছরে দুই হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করা যাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
কূপ বৃদ্ধি: দেশের গ্যাসক্ষেত্রগুলোতে কূপের সংখ্যা অন্য দেশের তুলনায় অনেক কম। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ১০ হাজার বর্গকিলোমিটারে ১৬৮টি কূপ খনন করা হলেও বাংলাদেশে মোট কূপের সংখ্যা মাত্র ৯৫টি। তাই দেশের প্রতিটি গ্যাসক্ষেত্রে কূপের সংখ্যা বাড়ানোর পরামর্শ অধ্যাপক বদরূল ইমামের।
দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধি: দেশীয় গ্যাস কোম্পানির তুলনায় বিদেশি কোম্পানিগুলোর উৎপাদন খরচ ১১ গুণ বেশি। জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের মতে, গ্যাস উৎপাদনে বিদেশি নির্ভরশীলতা বাড়াতে যাচ্ছে ঝুঁকির পরিমাণ। বর্তমানে দেশে মোট উত্তোলনের ৬৯ শতাংশই এসেছে বিদেশি কোম্পানিগুলোর (আইওসি) আওতাধীন গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে। এসব কোম্পানির গ্যাসক্ষেত্র রয়েছে চারটি। যা থেকে প্রতিদিন ১৬১ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। যেখানে ১৯৯৮ সালের আগ পর্যন্ত দেশের গ্যাস উৎপাদনের পুরোটাই করতো দেশীয় কোম্পানিগুলো অথচ গত দুই যুগে তা কমতে কমতে এখন ৩১ ভাগে নেমে গেছে। ২০০৪ সালেও দেশে মোট গ্যাস উৎপাদনের ৭৬ শতাংশ অবদান ছিল দেশীয় কোম্পানিগুলোর।
দেশীয় গ্যাস উৎপাদন কমে যাওয়ায় বাড়তি চাহিদা মেটাতে বিদেশি কোম্পানিগুলোর অতিরিক্ত গ্যাস উৎপাদন করতে বলা হচ্ছে। যেখানে উৎপাদন ক্ষমতার ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ উৎপাদন করার কথা, সেখানে কোনো কোনো গ্যাসক্ষেত্র থেকে উৎপাদন হচ্ছে প্রায় শতভাগ। এর ফলে এক দিকে বিদেশি কোম্পানিগুলো স্বল্প সময়ে বাড়তি উৎপাদন করে অতিরিক্ত অর্থ তুলে নিচ্ছে। যার অন্যতম কারণ দেশীয় গ্যাস কোম্পানিগুলো তাদের কূপ সংস্কারে নজর দিচ্ছে না। তবে বিদেশি কোম্পানি এ সুযোগে সংস্কার কাজ অব্যাহত রেখে নিজেদের উৎপাদন বাড়াচ্ছে। ফলে বেশি দামে গ্যাস কিনতে গিয়ে ব্যয়ের বোঝা বাড়ছে গ্রাহকের।
অন্যদিকে দেশে গ্যাস খাতে সিস্টেমলস দেখানো হয় ১০ শতাংশের উপরে। যেখানে বিশ্বে এ হার সর্বোচ্চ এক শতাংশ থেকে ৫ শতাংশের মধ্যে। সিস্টেমলস হ্রাস এবং সক্ষমতা বাড়ালে ৫/৬ বছরের মধ্যে এনএনজি নির্ভরতা থাকবে না বলে জানান বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) চেয়ারম্যান আব্দুল জালিল।
সবশেষে
দেশের জ্বালানি খাতের বর্তমান পরিস্থিতির সার্বিক বিষয় নিয়ে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ম তামিম, গ্যাস সরবরাহ কমে যাওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে তেলের ব্যবহার বাড়বে। ফলে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাবে। মানুষকে গড়ে ১০/১২ টাকায় বিদ্যুৎ কিনতে হবে। যুক্তরাজ্যে গ্যাসের দাম বাড়ায় বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ৫৪ শতাংশ। জার্মানি, স্পেনেও বেড়েছে।
বিকল্প জ্বালানির বিষয়ে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এ উপদেষ্টা বলেন, গ্যাস আমদানি কমাতে নিজস্ব কয়লায় উৎপাদন বাড়ানোর সিদ্ধান্তও নিতে হতে পারে। তবে কয়লার দামও ৫ গুণ বেড়ে গেছে। ৬০ ডলারের কয়লার টন হয়ে গেছে ২৪০ ডলার।
এ খাতের ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছুটা আশাবাদী অধ্যাপক ম তামিম বলেন, ৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র থেকে আসার কথা রয়েছে। ৬৬০ মেগাওয়াট পায়রায় বসে আছে। আগামী বছর ১২০০ মেগাওয়াট আসবে রামপাল থেকে। ২০২৩ সালে ১২০০ মেগাওয়াট আসবে রূপপুর থেকে। ২০২৪ সালে ১২০০ মেগাওয়াট আসবে মাতারবাড়ি থেকে। সবগুলো উৎপাদনে চলে এলে গ্যাসের ওপর থেকে চাপ কমবে। তার আগ পর্যন্ত তেলের ওপর নির্ভর করে চলতে হবে।
নীতিগত বিষয়ে সতর্ক করে দিয়ে ম তামিম বলেন, আমদানি নির্ভরশীল হলে সরবরাহ ও মূল্য ঝুঁকিতে থাকতেই হবে দেশকে। শুধু বাংলাদেশ নয়, যারাই আমদানির ওপর নির্ভরশীল সেসব দেশকে এখন সাফার করতে হচ্ছে। সবাই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়ছে, সঙ্গে ব্যয়ও বাড়ছে।
আনন্দবাজার/শহক