সিন্ডিকেটের কারসাজিতে
- দরিদ্র মানুষের নাগালের বাহিরে
- বাজার তদারকির দাবি সাধারণ মানুষের
সারাদেশের মত পাহাড়ের বাজারেও ভোজ্যতেলের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে দরিদ্র মানুষের নাগালের বাহিরে চলে গেছে ভোজ্যতেল। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নজরদারির অভাবসহ বাজার তদারকি না করায় রান্নার কাজে ব্যবহৃত তেলের দাম বাড়ানো হচ্ছে হচ্ছেমত। সচেতনমহল মনে করছে রমজানকে সামনে রেখে এবং মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণার ফাঁদ সৃষ্টির মাধ্যমে ব্যবসায়ী ও কোম্পানীর সিন্ডিকেটচক্র ক্রেতাদের চাহিদাকে পুঁজি করে অতি মুনাফা আদায় করছে কিনা তা দ্রুত খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে বাজার ব্যবস্থাপনা, মনিটরীংসহ গুদামগুলোতে তেল মজুদ রেখে কৃত্রিম সংকট তৈরির অপচেষ্টার বিষয়টি নজর দিলে তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণ ও তেলের বাজারের আস্বাভাবিক আগুণ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব বলে মনে করছেন সচেতন স্থানীয়বাসী।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ^বাজার ও দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির অযুহাতকে কাজে লাগিয়ে বাজারে থাকা পুষ্টি, ফ্রেশ, ফরচুন, রূপচাঁদা, রাধুনিসহ বিভিন্ন তেলে বাজার এখন সয়লাভ হলেও হঠাৎ এসব তেল বাজারে সংকট দেখা দিয়েছে। আবার প্রয়োজনের অতিরিক্ত দাম দিলেই এসব তেল গোপনে বিভিন্ন দোকানি ফোনালাপের মাধ্যমে বিক্রেতাদের সরবরাহ করতে দেখা গেছে।
শহরের বাসিন্দা ক্যাজরি মারমা, নোবেল চাকমা, রিপন বলেন, তেলের সরবরাহ থাকার কথা থাকলেও ব্যবসায়ী ও কোম্পানির এক শ্রেণির সিন্ডিকেট চক্রের কারণে বর্তমানে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মধ্য দিয়ে বাজারে তেলের অতিরিক্ত মূল্য দেওয়া হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে তেল ব্যবহার বন্ধ করে দিতে হবে।
তাঁরা বলেন, গুদাম থেকে তেল অন্যত্র সরিয়ে রেখে কৃত্রিম সংকট তৈরির কাজে ব্যস্ত দোকানদারা। চক্রটি সাধারণ মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।
এ বিষয়ে ফ্রেশ সয়াবিনের ডিলার জাফর উল্লাহ বলেন, কোম্পানির নির্ধারিত কমিশনে আমরা তেল বিক্রি করছি। তবে বর্তমানে কোম্পানি তেল সরবরাহ করছে না।
ফ্রেশ সয়াবিন তেল কোম্পানির খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি নারায়ণ কান্তি দেব বলেন, সয়াবিন তেল বর্তমানে কোম্পানির তরফ থেকে সরবরাহ নেয় এবং তেলে বেশ চাহিদা থাকলেও মূল্য বৃদ্ধির পর থেকে কোম্পানির সাপ্লাই বন্ধ করে দিয়েছে। তিনি আরো জানান, কোম্পানির দামে লিটার প্রতি ১৬৪ টাকা পাইকারির বিপরীতে খুচরা বাজারে বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬৮ টাকা। ২ লিটারে ৩২৬ টাকার বিপরীতে ৩৩৫ টাকা, ৫ লিটারে ৭৮০ টাকার বিপরীতে ৭৯৫টাকা ও আধা লিটারে ৮৫ টাকার বিপরীতে ৮৮টাকা মূল্য নির্ধারিত আছে। তবে কোনো ব্যবসায়ী নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিলাভের জন্য বেশি নিলে সে দায়ভার কোম্পানির নয় বলেও তিনি জানান।
আবির এন্টারপ্রাইজ সত্ত্বাধিকারী জসিম উদ্দিন বলেন, রূপচাঁদা, মিজান বর্তমানে আমরা বিক্রয়ের কাজ করছি। গত সপ্তাহে তেলের সরবরাহ কম থাকলেও বর্তমানে তেল এসেছে। মূল্য বৃদ্ধির কারণ হিসেবে কোম্পানীর পক্ষ থেকে বিশ^বাজারে তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার কথা কোম্পানির প্রতিনিধিরা বলছেন।
খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী বলেন, ভোজ্যতেল নিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটি দোকানে মোবাইল কোর্ট চালু করেছে। অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়াতে না পারে পৌর প্রশাসন নজর রেখেছে।