বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সরিষা ছেড়ে সূর্যমুখি

সরিষা ছেড়ে সূর্যমুখি
  • লাভের কারণে চাষে ঝুঁকছেন কৃষক
  • সরিষার থেকে ১২ শতাংশ তেল বেশি
  • সূর্যমুখীর তেলে পুষ্টিগুণ বেশি
  • সূর্যমুখির হাসিতে মেতেছে প্রকৃতি

গ্রাম-বাংলার চাষিদের মাঠজুড়ে প্রকৃতিতে অসাধারণ এক রূপ মেলেছে সূর্যমুখী ফুলে। মন কাড়া হলুদ ফুলে সেজেছে প্রকৃতি। এযেনো অপরূপ দৃশ্য। মৌমাছির গুনগুন শব্দে মুখরিত সূর্যমুখী ফুলের মাঠ। হলুদ রঙের হাজারো ফুল মুখ করে আছে সূর্যের দিকে। সবুজ মাঠজুড়ে সূর্যের হাসিতে হাসছে বাসাইলের চাষিরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, দশর্নার্থীরা ভিড় করছেন সূর্যমুখী ফুলের সাথে ছবি তুলতে। স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা ভিড় করেছেন সূর্যমুখী ফুলের মাঠে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, উপজেলার ৫০ হেক্টর জমিতে চাষিরা সূর্যমুখীর আবাদ করেছেন। উপজেলার কাঞ্চনপুর এবং হাবলা ইউনিয়নে সূর্যমুখী ফুলের আবাদ বেশি হয়েছে।

সূর্যমুখী ফুল দেখতে আসা মাসুম মিয়া বলেন, সূর্যমুখী ফুল দেখতে সূর্যের মতো। মাঠজুড়ে সূর্যমুখী ফুলের সমারোহ দেখতে ভালোই লাগছে। বন্ধুদের সঙ্গে এসে সূর্যমুখী ফুলের সাথে ছবি তুলতে পারলাম। রোদের মধ্যে সূর্যমুখী ফুলগুলো চকচক করছে। জমিতে হাজারো সূর্যমুখী ফুল খেলা করছে।

সূর্যমুখী চাষি আলম খান বলেন, সূর্যমুখীর ভালো ফলন হয়েছে। কৃষি অফিস থেকে ১ কেজি বীজ আর ২০ কেজি সার দিয়েছিল। প্রতিটি সূর্যমুখী ফুল থেকে ২৫০ থেকে ৩০০ গ্রাম বীজ হবে। ৫ কেজি সরিষায় সোয়া কেজি তেল হয়। আর ৫ কেজি সূর্যমুখী থেকে দেড় কেজি তেল হয়। সূর্যমুখীর তেল খুবই পুষ্টিকর আমাদের জন্য। প্রতি কেজি সূর্যমুখীর তেল ৩৫০ থেকে ৪৫০টাকা বিক্রি করা যায়। এ মৌসুমে ৪০ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ করেছি। সরিষার চেয়ে সূর্যমুখীর বেশি ফলন হয়।

আরও পড়ুনঃ  বেড়েছে ফ্লাইট স্থগিতের সময়

সূর্যমুখী চাষি ছোরহাব মিয়া বলেন, চলতি মৌসুমে ৫০ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখী ফুলের আবাদ করেছি। সূর্যমুখীর ফলন ভালো হয়েছে। গতবছর সূর্যমুখী আবাদ করে লাভবান হয়েছিলাম। কৃষি অফিস থেকে ৩ কেজি বীজ ও ১০০ কেজি সার দেওয়া হয়েছে। সূর্যমুখী আবাদে আমার ১৩ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আশা করছি ৫০ শতাংশ জমিতে ১০ মণ সূর্যমুখীর বীজ হবে। প্রতি মণ সাড়ে তিন থেকে ৪ হাজারে বিক্রি করতে পারবো। খরচ বাদে ২৫ হাজার টাকা লাভ হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাজনীন আক্তার জানান, উপজেলার ৫০ হেক্টর জমিতে চাষিরা সূর্যমুখীর আবাদ করেছেন। সূর্যমুখীর তেল সবচেয়ে ভালো মানের এবং স্বাস্থ্যসম্মত। চাষিরা সূর্যমুখী আবাদ করলে নিজেরাও তেল খেতে পারবে এবং বিক্রি করে লাভবান হতে পারবে। সূর্যমুখী থেকে ৪৫ থেকে ৫০ শতাংশ তেল পাওয়া যায়। যা সরিষার থেকে ১০ থেকে ১২ বেশি তেল হয়। অন্যসব তেলের চেয়ে সূর্যমুখীর তেলে পুষ্টিগুণ বেশি। বাজারে সূর্যমুখী তেলের চাহিদাও বেশি। চাষিদের বিভিন্ন প্রণোদনার মাধ্যমে সূর্যমুখীর বীজ ও সার দিয়ে থাকি। চাষিদের সূর্যমুখী আবাদে বিভিন্ন পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন