কাগজের অস্বাভাবিক মূলবৃদ্ধি-—
- বন্ধ হয়ে গেছে বহু শিল্প
- অসম ভ্যাট-ট্যাক্স নীতির শিকার
প্যাকেজিং কাগজের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধিসহ রাজস্বনীতির কারণে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে লোকাল প্যাকেজিং শিল্প এমনটাই দাবি করেছে বাংলাদেশ লোকাল কার্টন ম্যানুফেকচারার্স এসোসিয়েশন। গতকাল সোমবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলন করে এসোসিয়েশনটি এ দাবি জানায়। স্থানীয় শিল্প কারখানায় কার্টনের চাহিদা দিনদিন বাড়ছে।
কাগজকল মালিকদের স্বেচ্ছাচারী মনোভাবে প্রতি বছর কাগজের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে জানিয়ে সংগঠনটির সভাপতি এম এ বাসার পাটোয়ারী বলেন, ফলে বেশকিছু প্যাকেজিং শিল্প বন্ধ হয়ে গেছে। পাশাপাশি লোকাল প্যাকেজিং শিল্প অসম ভ্যাট-ট্যাক্স নীতির শিকার হয়েছে।
গত ২০১৮ সালের ৩০ মার্চ হঠাৎ করে কাগজের দাম টন প্রতি দশ হাজার টাকা বাড়ানো হয়েছিল। সেসময় লোকাল কার্টন শিল্প মালিকরা লাখ লাখ টাকা লোকশান করেছে। সেই লোকসান কাটিয়ে না উঠতেই সরকার ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশ রাজস্ব বৃদ্ধি করে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে। যা তখন প্যাকেজিং শিল্পের উপর
একপেশে হিসেবে চাপিয়ে দেওয়া হয়।
অস্বাভাবিকহারে কাগজের মূল্যবৃদ্ধি, অসম রাজস্ব নীতির প্রতিবাদ ও কার্টন শিল্পকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার দাবি করে এম এ বাসার পাটোয়ারী বলেন, আমদানি নীতিতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ১০ শতাংশ শুল্ক ডিউটি এবং ৫ শতাংশ এএইটি আরোপ লোকাল প্যাকেজিংয়ের জন্য বাইরে থেকে কাগজ আমদানির সুবিধা কঠোর করে রেখেছে। যে আমদানি নীতিকে পুঁজি করে দেশি কাগজ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো একচেটিয়া অনৈতিক ব্যবসা করছে। এ পুঁজিবাদীদের সুযোগ দেওয়ার কারণে চলতি অর্থবছরে প্রথম ৫ মাসে সরকারের রাজস্ব আদায় কমপক্ষে ২৭ হাজার কোটি টাকা কমে গেছে।
প্যাকেজিং শিল্প ১৫ শতাংশ বা আদর্শ হারে ভ্যাট প্রদান করে, তাই উৎপাদনে ব্যবহৃত
কাঁচামালের ওপর ভ্যাট ১৫ শতাংশ হওয়া বাঞ্ছনীয় জানিয়ে এম এ বাসার পাটোয়ারী বলেন, কাঁচামাল কেনায় যেহেতু নিট মূল্যের ওপর ভ্যাট প্রদান করি, তাই প্যাকেজিং পেপারের ভ্যাট ৫ থেকে ৭ দশমিক ৫ শতাংশের পরিবর্তে ১৫ শতাংশ করার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানায়।
পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য উৎসে আয়কর কর্তন বাতিল করার বিশেষ অনুরোধ জানিয়ে বাসার পাটোয়ারী বলেন, প্রতি বছর অযৌক্তিকভাবে কাগজের মূল্য বৃদ্ধি করে অতি মুনাফা অর্জনের নিয়ম বন্ধ করার নীতি প্রণয়নের জন্য সরকারের কাছে আহ্বান। একই সঙ্গে প্যাকেজিং শিল্পের সব সমস্যা মোকাবিলায় সরকারি রুগ্ন ও লোকসানি কাগজকল কর্ণফুলী পেপার মিলস এবং এ ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলোকে আয় থেকে দায় শোধ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ লোকাল কার্টন ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের কাছে হস্তান্তরে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি রাখেন।