সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে আগামীকাল (বুধবার) সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ কর্মসূচি পালিত হবে।
মঙ্গলবার (০৯ জুলাই) এক সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এসময় সারাদেশের সব মহাসড়ক ও রেলপথ এ ব্লকেডের আওতাভুক্ত থাকবে বলে জানান তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সন্ধ্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে ব্যাপক ছাত্র আন্দোলনের মুখে সরকার নবম থেকে ত্রয়োদশ গ্রেডের চাকরি থেকে সব ধরনের কোটা বাতিল করেছিল। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ কোটাও বাতিল হয়। গত ৫ জুন মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। এর পর কোটা বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন ক্যাম্পাসে ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়। এর ধারাবাহিকতায় চলতি সপ্তাহে ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ করে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করছে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো-
১। ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকুরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে।
২। ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকুরিতে (সকল গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। সেক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে।
৩। সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে।
৪। দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম মাত্রায় এনে সংসদে আইন পাস করে কোটাপদ্ধতিকে সংশোধন করার দাবি জানাচ্ছি। দাবি আদায়ে আগামীকাল সকাল-সন্ধ্যা ব্লকেড কর্মসূচি পালিত হবে। কর্মসূচি চলাকালে দেশের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও রেলপথ এর আওতাভুক্ত থাকবে। দেশের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠানের নিকটবর্তী সড়ক অবরোধের আহ্বান জানান তিনি। নাহিদ বলেন, ৫ জুলাই থেকে আমরা আন্দোলনে আছি। আন্দোলন শিক্ষার্থীরা নিজ উদ্যোগে করেনি। হাইকোর্টের রায়ের কারণে আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে। অনেকে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কথা বলছেন। আমরাও চাই না সাধারণ মানুষের কোনো ভোগান্তি তৈরি হোক। কিন্তু এখনো নির্বাহী বিভাগ থেকে আমরা কোনো আলোচনা বা আশ্বাস পাইনি। সংসদে আইন পাসের মাধ্যমে কোটা বৈষম্য নিরসনের কথা বলছি আমরা। আমাদের এখন আদালতের কাছে কোনো দাবি নেই, আমাদের দাবি এখন নির্বাহী বিভাগের কাছে বলে মন্তব্য করেন নাহিদ ইসলাম।