ঢাকা | বৃহস্পতিবার
২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হেলিকপ্টারে চড়িয়ে মা-বাবার স্বপ্ন পূরণ

হেলিকপ্টারে চড়িয়ে মা-বাবার স্বপ্ন পূরণ

একেক মানুষের একেক রকমের শখ থাকে। শখের বশে মানুষ কতো কিছুই না করে। শখ পূরণে করছেন মানুষ লাখ লাখ টাকা খরচ। তাছাড়া মানুষ ভেদে সৌখিনতাও হয় ভিন্ন ভিন্ন। আবার সাধ ও সাধ্যের মধ্যে শখের ধরণও হয় আলাদা আলাদা।

বৃদ্ধা মায়ের ইচ্ছা স্বপ্ন পুূরণ করতে তাকে হেলিকপ্টারে চড়িয়ে বাড়িতে নিয়ে আসলেন প্রবাসী মো: ইসমাইল খাঁ। অপর দিকে মা বাবার ইচ্ছা পূরণ করতে তাদেরকে হেলিকপ্টারে দিয়ে ঘুরতে ঢাকায় নিয়ে যান সন্তান সোহাগ সরকার।

প্রবাসী ইসমাইল খাঁ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের মনিয়ন্দ মধ্যপাড়া এলাকার মৃত আব্দুল আলিমের ছেলে। মঙ্গলবার প্রবাসীর মা ও ভাতিজিসহ ৫ জনকে নিয়ে হেলিকপ্টার চড়ে নিজ এলাকায় এসেছেন।

উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের প্রস্তাবিত জাহানারা হক মহিলা কলেজ মাঠে তারা নামেন। সেখানে হেলিকপ্টার ও তাদেরকে দেখতে স্থানীয় বাসিন্দাসহ আশপাশের নারীপুরুষ -শিশুসহ অন্ত:ত কয়েক হাজার উৎসুক জনতার ভীড় জমে। যা পুলিশ প্রশাসনের লোকজন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হিমসিম খেতে হয়েছে। স্থানীয়রা বলছে সন্তান হয়ে মাকে নিয়ে এভাবে আসা আসলেই গৌরবের বিষয় এটি।

সৌদি আরব প্রবাসী ইসমাইল খাঁ বলেন, আমি দীর্ঘ বছর প্রবাসে রয়েছি। প্রতি বছর গ্রামের বাড়িতে আসি। আমার মা ও প্রায় সময় বেড়াতে সৌদিতে আমার এখানে আসেন। এক সাথে দেশে আসব বলে মাকে নিয়ে আসা। আমার একটা স্বপ্ন ছিল মাকে নিয়ে হেলিকপ্টারে চড়ে গ্রামের বাড়িতে আসার। মায়ের স্বপ্ন পূরণ ও আমার শুভাকাঙ্ক্ষীদের মধ্যে আনন্দ-উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে দিতে আজ ব্যতিক্রমীভাবে বাড়িতে আসি। এভাবে আসতে পেরে আমার খুবই ভালো লেগেছে।

সরকার প্রবাসীদের জন্য অত্যন্ত দারুন একটি সেবা চালু করেছে যেটা নাম হচ্ছে প্রবাসী হেলিকপ্টার। আমি প্রথমবারের মতো আমার এলাকায় প্রবাসী হেলিকপ্টার দিয়ে টাকা বিমানবন্দর থেকে আমার এলাকায় এসেছি। আমি প্রবাসীদের কাছে অনুরোধ করব সামর্থ্য অনুযায়ী যদি কারো সামর্থ্য থাকে তাহলে যেন প্রবাসী হেলিকপ্টার সেবা গ্রহণ করে।

মনিয়ন্দ এলাকার বাসিন্দা আফজাল হোসেন বলেন, গ্রামের লোকজন সকাল থেকেই হেলিকপ্টার ও তাদেরকে দেখতে মাঠের মধ্যে অবস্থান করে। ইসমাইল খাঁ খুবই মা বাবার ভক্ত। সব সময় গ্রামের লোকজনের সাথে যোগাযোগ রাখে সাধ্যনুযায়ী সহযোগিতা করে আসছে।

এদিকে একই হেলিকপ্টারে চড়িয়ে বৃদ্ধ বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করলেন কর্মমঠ এলাকার সোহাগ সরকার। তার
বাবা শফিকুল আলম নোয়াব সরকার ও মাসহ চারজন যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন হেলিকপ্টারটি। সোহাগ সরকার জানান, আমার মায়ের দীর্ঘ দিনের একটা স্বপ্ন ছিল হেলিকপ্টার দিয়ে ঘরানোর। পরে জানতে পারলাম যে আমার এলাকায় প্রবাসী হেলিকপ্টার আসবে তখন আমি মায়ের এ স্বপ্নটা পূরণ করতে তাদের সাথে যোগাযোগ করে টিকিট বুকিং করি মা এবং বাবার। আজ একজন সন্তান হয়ে বাবা-মায়ের এ ছোট স্বপ্ন পূরণ করতে পেরে সত্যিই আমার খুব ভালো লাগছে।

সোহাগের মা জানান, আমার ছেলের কাছে বলেছিলাম আমার স্বপ্ন হেলিকপ্টার দিয়ে ঘুরার আজকে সেই স্বপ্ন পূরণ করেছে আমার ছেলে। আমি এবং আমার স্বামী আমরা দুজনেই এই হেলিকপ্টার দিয়ে ঢাকায় যাচ্ছি।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন