সময়ের বিবর্তনে ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলায় বিলুপ্তির পথে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাটিম খেলা। গ্রামের শিশু কিশোররা এক সময় মনের আনন্দে গ্রামের মেঠোপথে, বাড়ির আঙ্গিনায়, হাতের তালুতে লাটিম ঘুরাতো। গ্রামেই তৈরি করা হতো নরম কাঠ, গাব গাছের ডাল, পেয়ারা ও লৌহশলা দিয়ে তৈরি করা হতো এই লাটিম এবং ঘুরানোর জন্য পাট দিয়ে রশি বা ফিতা বানানো হয়। প্রায় সময় প্রতিটা গাঁয়ে প্রতিটি মহল্লার অলি, গলি, বাঁশ ঝাড়, ভিটে, কিংবা মাঠে সারাদিন লাটিম খেলায় সারাদিন ব্যস্ত সময় পার করতো দুরন্ত কিশোরেরা।
গ্রামীণ এই লাটিম খেলা আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিলুপ্তির পথে। দেশীয় যত প্রকার খেলা আছে এর মধ্যে অন্যতম একটি লাটিম খেলা, ছোট ছোট কিশোরেরা নানা কসরত করে খেলতো লাটিম। আধুনিক যুগে দেশ প্রবেশ করার পর দিন দিন বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে দেশীও অনেক খেলা। অথচ আমাদের ঐতিহ্যের একটি অংশ এই গ্রামীণ লাটিম খেলা। বাংলার সব গ্রামের কিশোরদের কাছে লাটিম খুবই পরিচিত একটি খেলা, বাংলার সব গ্রামে এ খেলার প্রচলন থাকলেও দাগনভূঞা উপজেলায় এই অঞ্চলে লাটিম খেলার প্রচলন ছিলো অনেক বেশি
এই বিষয়ে সাংবাদিক মোয়াজ্জেম হোসেন মালদার বলেন, আধুনিকতার ছোঁয়ায় কম্পিউটার গেমস,ভিডিও গেমসসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ে ব্যস্ত হয়ে থাকে কিশোররা। বর্তমান প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা এসব খেলার ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছে লাটিম খেলা। অভিভাবকদের তাদের সন্তানকে হারিয়ে যাওয়া গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা সম্পর্কে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। তা না হলে ভবিষ্যতে লাটিম খেলা বিলুপ্ত হয়ে যাবে
সিনিয়র সাংবাদিক আজাদ মালদার বলেন, আমরা ছোট বেলায় অনেক খেলতাম এই ঐতিহ্যবাহী লাটিম খেলা। কিন্তু এখন তো বাচ্চারা ফোনে বিভিন্ন গেমস্ খেলে সময় পার করছেন। নানা ঋতুভিত্তিক মেলায়ও খেলনা-পসরায় লাটিম তেমন দেখা যায় না। খেলাধুলার অভাবে যুবসমাজ ঝুঁকছে মাদকের দিকে। আগামী ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হয়তোবা জানবে না যে লাটিম খেলা বলতে কিছু আছে।
অনন্দবাজার/শহক