হে পথিক একটু দাড়াঁও না, তোমার জন্যই না আমি সুভাস্বনী হয়ে রয়েছি। প্রাচ্যের অক্সফোর্টখ্যাত কারমাইকেল কলেজসহ রংপুরের বিভিন্ন স্থানে প্রকৃতি প্রেমীদের এভাবেই মুগ্ধ করছে বাহারী কাঠগোলাপ ফুল। ফুলটি বছরের প্রায় সবসময়ই ফোটে। তবে গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ ও হেমন্তকালে গাছ ফুলে ফুলে ছেয়ে যায়।
এ ফুল নানা রঙের হয়। কোনোটি দেখতে ধবধবে সাদা, কোনোটি সাদা পাপড়ির ওপর হলুদ দাগ, আবার কোনোটি লালচে গোলাপি রঙের। দূরে বা কাছ থেকে এসব বাহারি কাঠ গোলাপ সহজেই নজর কাড়ে প্রকৃতিপ্রেমীদের। কাঠগোলাপের সৌন্দর্য্যে বিমোহিত হয়ে ফটোসেশন করতেও দেখা যায় অনেক পথিককে। বিমোহিত প্রকৃতিপ্রেমী অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে নয়নাভিরাম কাঠগোলাপে। একটু নিজেকে সতেজ করার জন্যই প্রকৃতির এমন চিরচেনা রুপ।
কারমাইকেল কলেজ প্রাঙ্গণে দূর থেকেই চোখে পড়ে অসংখ্য কাঠগোলাপ পড়ে আছে সবুজ ঘাসের বুকে। শ্বেত শুভ্র ফুলগুলো দেখে আকৃষ্ট হচ্ছেন তরুণ-তরুণীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষজন। শুধু কারমাইকেল কলেজেই নয় রংপুর শহরে বিভিন্ন সড়কের পাশে, বাগানে ও নার্সারিতেও স্নিগ্ধতা ছড়াচ্ছে সুগন্ধিমাখা শুভ্র কাঠগোলাপ।
অনেক অভিভাবক শিশুদেরকে ফুল চেনাচ্ছেন এবং ফুল দিয়ে সাজিয়ে ছবি তুলে তুলছেন। প্রকৃতিপ্রেমীরা যে কাঠগোলাপে বিমোহিত তা বলার আর অপেক্ষা রাখে না। শিশুকে ফুল দেখতে নিয়ে আসা এক অভিভাবক বলেন, শিশুদের মেধা বিকাশে প্রকৃতির সৌন্দর্যের সঙ্গে পরিচয় হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বইয়ে কিংবা মোবাইলে হয়তো চিনিয়ে দেওয়া সম্ভব কিন্তু কাছ থেকে দেখার আনন্দই আলাদা। এ জন্য প্রায় সময়ই ঘুরতে আসি কারমাইকেল কলেজ প্রাঙ্গণে। নিজেও মুগ্ধ হই চমৎকার প্রকৃতিতে নিঃশ্বাস নিতে পেরে, আমার সন্তানও খুশি হয়।
হাতে কাঠগোলাপ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী উম্মেহানী বললেন, কলেজে আসলেই দু একদিন পরপরই কাঠগোলাপ হাতে নিয়ে ঘ্রাণ শুঁকে মুগ্ধ হই। খুবই ভালো লাগে। আমার হ্যান্ডপেইন্টিং এর নকশায়ও কাঠগোলাপকেই বেশি প্রাধান্য দেই।
প্রকৃতি বিশেষঞ্জ ড. তুহিন ওয়াদুদ আনন্দবাজারকে বলেন, এ এক অপূর্ব দৃশ্য, কাঠগোলাপ রংপুর নগরবাসীকে বিমোহিত করেছে। আমি নিজেও রোকেয়া বিশ্বিবিদ্যালয় চত্ত্বরে বেশ কিছু কাঠগোলাপ লাগাইছি। যারা ঘ্রাণ নেওয়ার জন্য সবাই ছুটে যায় সেখানে। অপলক দৃষ্টি নিয়েই পথিক চেয়ে থাকে কাঠগোলাপের দিকে। এটি সত্যিই দারুণ অনুভুতি যোগায়।