ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিএনসিসির ২৩ ক্যাডেট সার্জেন্টের সিইউওতে পদোন্নতি

ক্যাডেট আন্ডার অফিসার হলো ক্যাডেটদের সর্বোচ্চ র‌্যাংক। এখানে সাদারণত চৌকশ ক্যাডেটকেই ক্যাডেট আন্ডার অফিসার বানানো হয়। আশা করা হয় যে তারা ভবিষ্যতে দেশের জন্য মূল্যবান নেতৃত্বে অবদান রাখবে। বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) সিইউও র‌্যাংক ব্যাচ অনুষ্ঠানে লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাহাত নেওয়াজ এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, সিইউওদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা হলো রুট লেবে যে সব ক্যাডেট আছে তাদের সাথে যোগাযোগ করে আমাদের বিএনসিসি উদ্দেশ্যগুলোর কার্যক্রম সঠিকভাবে গড়ে তুলে আনবে যাতে বিএসিসির উত্তরোত্তর সুনাম বৃদ্ধি পায় এবং বিএনসিসি যাতে গতিশীল থাকে।

বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের সদর দপ্তরে এক জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে রমনা রেজিমেন্টের রেজিমেন্ট কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাহাত নেওয়াজ ও ব্যাটালিয়ন অ্যাডজুট্যান্ট মেজর কাউছার জাহান আকন্দ, মেজর আব্দুস সামাদ, মেজর এস এম বদরুল হাসান শামীম ক্যাডেটদের সর্বোচ্চ র‌্যাংক সিইউওর ব্যাচ পড়িয়ে দেন।

র‌্যাংক ব্যাচ প্রদান অনুষ্ঠানে এসময় উপস্থিত ছিলেন ২ বিএনসিসি ব্যাটালিয়ন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট খন্দকার আবদুল মান্নান, ৫ নং ব্যাটালিয়ন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট এনামুল তালুকদারসহ বিএনসিসি স্টাফ এবং ক্যাডেটবৃন্দ।

র‌্যাংক ব্যাচ প্রদান শেষে মেজর কাউছার জাহান আকন্দ বলেন, সিইউও একটা ক্যাডেটের সর্বোচ্চ র‌্যাঙ্ক। এখানে এক একটা কোম্পানিতে ৪ থেকে ৫ টা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকে তাই আমরা এখানে যোগ্য সার্জেন্টকে এই পদে ভূষিত করি।

তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করবো যে যারা সিইউও হয়েছে তারা নিজের কোম্পানির যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো আছে সেগুলোকে নিজের ভাইবোনের মতো করে নিজেরমতো করে যাতে তারা গড়ে তুলতে পারে এবং সুষ্ঠভাবে সুনাম এবং সুনাগরিকের নেতৃত্ব গুনাবলী যাতে বিকশীত করতে পারে। তাদের মধ্যে যে সুপ্ত প্রতিভা আছে সেগুলো যাতে প্রকাশ করতে পারে একজন ক্যাডেট এগুলোই হলো মূলত একজন সিইউওর বড় দায়িত্ব।

রমনা রেজিমেন্টের ৫টি ব্যাটালিয়ন থেকে এ বছর ২৩ জন সিইউও নির্বাচিত হোন। এর মাঝে ১ নং ব্যাটালিয়ন থেকে ৫ জন, ২ নং ব্যাটালিয়ন থেকে ৫ জন, ৩ নং ব্যাটালিয়ন থেকে ৫ জন, ৪ নং ব্যাটালিয়ন থেকে ৩ জন এবং ৫ নং ব্যাটালিয়ন থেকে ৫ জন সিইউও নির্বাচিত হোন।

জানা যায়, গত ১৩ জানুয়ারি ২ নং ব্যাটালিয়নের আলফা কোম্পানির জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কন্টিনজেন্ট ক্যাডেট সার্জেন্ট মোঃ মামুন শেখ সিইউও পদের জন্য বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের সদর দপ্তরে লিখিত পরীক্ষা, ড্রীল, কমান্ড এবং মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়ে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের সর্বোচ্চ র‌্যাংক ক্যাডেট আন্ডার অফিসার (সিইউও) অর্জন করেছেন।

মামুনের ক্যাডেট আন্ডার অফিসার র‌্যাংক পাওয়ায় জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, ‘তার এ প্রাপ্তিতে আমরা সকলেই আনন্দিত। জ্ঞান, শৃঙ্খলা ও একতার মাধ্যমে অন্যান্য ক্যাডেটরা সমাজ সেবা ও শিক্ষামূলক কার্যক্রমে উৎসাহিত হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘মামুনের সিইউও প্রাপ্তি অন্যান্য ক্যাডেটদের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যে এমন একটি সম্মান বয়ে আনার জন্যে তাকে অভিনন্দন ও শুভ কামনা জানাচ্ছি।’

আলফা কোম্পানি কমান্ডার পিইউও আতিয়ার রহমান নতুন সিইউও হিসেবে মামুনকে নির্বাচিত হওয়ায় তাকে অভিনন্দন জানান এবং কোম্পানির সকল প্লাটুনের ক্যাডেটদের নিয়ে ভালোভাবে কাজ করতে বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ মামুন শেখকে অভিনন্দন ও শুভ কামনা জানান।

২০১৮ সালের পর মামুন শেখ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বিএনসিসি কন্টিনজেন্ট ক্যাডেট আন্ডার অফিসার পেলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ সিইউও ছিলেন মোঃ শামীম। আগামী ১ বছরের জন্য মামুন রমনা রেজিমেন্ট এর ২ নং বিএনসিসি ব্যাটালিয়নের আলফা কোম্পানির সিইউও হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

সার্জেন্ট থেকে সিইউওতে পদন্নোতি হওয়ায় মোঃ মামুন শেখ বলেন, আমি খুবই আনন্দিত আর শুধু আনন্দ করে বসে থাকলেই আমার হবে না। এখন আমার দায়িত্ব বেড়েছে। দায়িত্ব যাতে ভালভাবে পালন করতে পারি এবং আমার মাধ্যমে যেন দেশ ও জাতির সর্বোচ্চ সফলতা আসতে পারে সেজন্য সবার দোয়া প্রার্থী।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি) হচ্ছে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী ক্যাডেটদের সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দ্বিতীয় সারির, আধাসামরিক, স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী। এটি সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা, জেসিও, এনসিও, বেসামরিক কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে গঠিত। বিএনসিসি’র মূলমন্ত্র হলো জ্ঞান, শৃঙ্খলা, স্বেচ্ছাসেবা।

আনন্দবাজার/শাহী/সাইদ

সংবাদটি শেয়ার করুন