পটুয়াখালীর বাউফল সরকারি কলেজে নয় মাস ধরে অধ্যক্ষ না থাকায় চড়ম ভোগান্তির শিকার প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত শিক্ষক ও কর্মচারীরা। অন্যদিকে হয়রানির স্বীকার হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। বর্তমানে ২৭ জন প্রভাষক তিন মাস ও ১২ জন কর্মচারী নয় মাস ধরে বেতন বোনাস থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। অপরদিকে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে অধ্যক্ষের স্বাক্ষরের জন্য মাসের পর মাস কলেজের বারান্দায় ঘুরতে হচ্ছে।
জানাগেছে, ২০১৬ সালের ১২এপ্রিল উফল ডিগ্রী কলেজ জাতীয়করণ হয়। পূর্ণাঙ্গ অধ্যক্ষ যোগদানের পূর্ব পর্যন্ত একই কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক রফিকুল ইসলাম উপধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পেয়ে পরে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এরপর ২০২০সালের ১৫ জানুয়ারি পটুয়াখালী সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের সহকারি অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বাউফল সরকারি কলেজে পূর্ণাঙ্গ অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। তিনি যোগদান করার পর কর্মচারীদের বেতন তার স্বাক্ষরে ব্যাংক থেকে উত্তোলন শুরু হয়। কিন্তু যোগদানের ১মাস ১০দিনের মাথায় তাকে ঢাকা ডিজি অফিসে বদলি করা হয়। এরপর অধ্যক্ষ হিসেবে কাউকে এখন পর্যন্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।
আগে শিক্ষকরা তাদের নিজেদের স্বাক্ষরে ব্যাংক থেকে বেতন উত্তোলন করতো তাও তিন মাস পর্যন্ত বন্ধ হয়ে আছে। অধিকাংশ শিক্ষক জানান, অধ্যক্ষ না থাকায় কলেজটি এখন অভিভাবকহীন। একজন অধ্যক্ষ নিয়োগ দিয়ে কষ্ট লাগবের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানানো হয়েছে। আয়ন ব্যয়ন কর্মকর্ত (ডিডিও) নিয়োগের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে জানানো হলেও এখন অবদি সংশ্লিষ্ট তফতর কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
অধ্যক্ষ না থাকায় উন্নয়ন ফান্ডের টাকা নির্দিষ্ট সময় কাজে না লাগানোর জন্য ইতিমধ্যে ফেরত চলে গেছে। ছাত্র ছাত্রীর যত ধরনের টাকা ব্যাংকে জমা হচ্ছে সেসব টাকাও কলেজের কাজে ব্যয় করার জন্য তুলতে পারা যাচ্ছেনা। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। একজন শিক্ষার্থীর প্রবেশপত্র প্রত্যয়ন পত্র সহ বিবিধ কাগজপত্রের প্রয়োজন হয়। কিন্তু অধ্যক্ষ না থাকায় আজ তারাও হয়রানির স্বিকার হচ্ছে। যে কারনে মাসের পর মাস তাদের কলেজের বারান্দায় ঘুরতে হচ্ছে। অপরদিকে তৃতীয় চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীরা বেতন বোনাস না পেয়ে অনেকেই মানবেতর জীবন যাপন করছে।
কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অনির্বান শাহরিয়ার রুদ্র বলেন, অধ্যক্ষ যোগদানের পরে কলেজে শিক্ষার্থীরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলো। কলেজের পরিবেশ বদলে গিয়েছিলো, জানি না কি কারণে অল্প সময়ের মধ্যে স্যারকে(অধ্যক্ষ) বদলি করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত অধ্যক্ষ নিয়োগ দিয়ে শিক্ষার্থীদের দূর্ভোগ লাঘব করার দাবী জানাচ্ছি।
একাধীক কর্মচারী জানান, স্যারেরাতো বেতন না পাইলেও প্রাইভেট পড়াইয়া চলেন, আমরা চলমু ক্যামনে?করোনা মহামারীর জন্য না খেয়ে থাকতে হয়েছে অনেক সময়। আমাদের এখন অন্য কাজ করে পরিবারের ছেলে মেয়েদের ভরপোষনের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। আমরা আমাদের এই কষ্ট থেকে মুক্তি চাই। আমরা কর্তৃপক্ষের আশু দৃষ্টি কামনা করছি।
আনন্দবাজার/শহক