স্নাতক চতুর্থ বর্ষের শেষ (৮ম) সেমিস্টারের পরীক্ষা দ্রুত নেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বিভিন্ন বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (১৮ অক্টোবর) সকাল ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী রবিউল আলমের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী কাজল রাণী সরকার, এইচ এম শাহীন, ইমরান রনি, কামাল, মাহবুব সহ অনেকেই বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও মানববন্ধন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানান, করোনা ভাইরাসের ফলে গত ১৫ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধের পূর্বেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক শেষ হয়ে ফলাফলও প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু ইংরেজি, নৃবিজ্ঞান, গনিত ও আইন বিভাগসহ অল্প কিছু বিভাগের ৮ম সেমিস্টারের পরীক্ষা এখনো শুরু হয় নি। তাছাড়া, ২০১৯ সালের শেষ দিকে স্নাতক শেষ করার কথা থাকলেও জট এবং করোনা মহামারীর ফলে এইসব বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রায় ১ বছরের সেশন জটের মুখামুখি হচ্ছেন।
নৃবিজ্ঞান বিভাগের ১১ ব্যাচের শিক্ষার্থী কাজল রানী সরকার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের অধিকাংশ শিক্ষার্থীরাই মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা। আমাদের একই শিক্ষাবর্ষের অন্যান্য বিভাগের অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা তাদের স্নাতক শেষ করে হাতে ফলাফল ও পেয়েছে। চলমান সময়ে স্নাতকের সর্বশেষ সেমিস্টারের পরীক্ষা সম্পূর্ণ না হওয়ায় চাকুরী সহ বিভিন্ন স্কলারশিপ পোগ্রাম থেকে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। পরীক্ষাটি হয়ে গেলে আমরা মানসিক চাপ থেকে মুক্ত হতে পারতাম।
গণিত বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী এইচ এম শাহীন অভিযোগ করে বলেন, এই শিক্ষাবর্ষের যারা দ্বিতীয় বার ভর্তি পরীক্ষায় মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনার সুযোগ পেয়েছে স্নাতক শেষ করতে তাদের ব্যায় হচ্ছে অতিরিক্ত দুই বছর। নিম্ন আর মধ্যবিত্ত পরিবারের হওয়ায় চাকুরী করা তাদের জন্য জরুরী কিন্ত স্নাতক শেষ সেমিস্টারের পরীক্ষা না হওয়ায় তারা চাকুরীতে আবেদনের সুযোগ পাচ্ছেন না। তাছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও বন্ধ নেই সরকারি-বেসরকারী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি তাই তারা তাদের ভবিষ্যৎ জীবন নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ছেন।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, সরকারি নির্দেশনার বাহিরে গিয়ে এই বিষয়ে আমাদের একক সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ নেই। তবে আটকে থাকা পরীক্ষাগুলো যাতে সহজে নেওয়া যায় সেজন্য একটি সফটওয়্যার উন্নত করেছে বশেমুরবিপ্রবি কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে অনেকেই এই সফটওয়্যার মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে ইতিবাচক মতামত দিয়েছেন।
সফটওয়্যারটি কবে নাগাদ আসতে পারে জিজ্ঞেস করলে উপাচার্য বলেন, ইউজিসি সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অনুমতি দিলে নভেম্বর শেষ বা ডিসেম্বরের মাঝে এই সফটওয়্যারটি মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব।
আনন্দবাজার/শাহী/সাইদ