বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় তারুণ্যের স্পন্দন ‘জয় বাংলা ভাস্কর্য’

পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ নামক স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্মের সঙ্গে যে স্লোগানটি সম্পৃক্ত সেটি ‘জয় বাংলা’। এর মতো তীব্র, সংহত ও তাৎপর্যপূর্ণ স্লোগান আর নেই। এই একটি পদেই প্রকাশ পায় রাজনীতি, সংস্কৃতি, দেশ, ভাষার সৌন্দর্য ও জাতীয় আবেগ। ইস্পাতের থেকে দৃঢ়, দাবানলের থেকেও ক্ষিপ্র এই অমিত শব্দদ্বয় আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলন ও চূড়ান্ত বিজয়ের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই স্লোগানটির মধ্যমে নতুন প্রজন্মের মাঝে যাতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগ্রত হয় সে লক্ষ্যে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ করা হয়েছে ‘জয় বাংলা’ ভাস্কর্য।

‘জয় বাংলা’ স্লোগানটি ছিল মুক্তিযুদ্ধের সময় জনগণের অনুপ্রেরণার মাধ্যম। আর এই ভাস্কর্যটি বর্তমান সময়ে নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের বিমূর্ত সেই স্মৃতিকে পৌঁছে দেয়।

২০১৭ সালে ৩ মে তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এ ভাস্কর্যের উদ্বোধন করেছিলেন। তৎকালীন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়েরউপাচার্য ড. মোহীত উল আলম, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আপেল মাহমুদের উদ্যোগে ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী পলাশ শেখ ভাস্কর্য নির্মাণে প্রধান শিল্পীর ভূমিকা পালন করেছিলেন এবং সহযোগী শিল্পী হিসেবে ছিলেন কমল কুমার ঘোষ ও মাহবুবুর রহমান।

পুরো ভাস্কর্যটি একটি বেদির ওপর স্থাপিত। কয়েক ধাপ সিঁড়ি পাড়ি দিয়ে ভাস্কর্যের মূল বেদিতে উঠতে হয়। ভাস্কর্যের কেন্দ্রীয় অংশে রয়েছে দুজন তরুণ ও একজন নারী মুক্তিযোদ্ধার প্রতিকৃতি। একজন তরুণ মুক্তিযোদ্ধা পরনে শার্ট প্যান্ট কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে দুই হাত দৃঢ় মুষ্টিবদ্ধের মধ্যে, বাঁ-হাত মাথার উপরে সবাইকে জাগ্রত করতে তুল ধরে রেখেছে এবং নারী মুক্তিযোদ্ধা পরনে শাড়ি দুহাতে আমাদের জাতীয় পতাকা ধরে রয়েছে। অন্য প্রতিকৃতিতে তরুণ মুক্তিযোদ্ধা পরনে প্যান্ট-শার্ট দুই হাতে দৃঢ়ভাবে রাইফেল ধরে রয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের একটি বড় অংশ ছিল তরুণ ছাত্রসমাজ। ছাত্র যোদ্ধাদের প্রতীক এই ভাস্কর্য।

আরও পড়ুনঃ  বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের প্রতিবাদে নোবিপ্রবিতে মানববন্ধন

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশমুখেই এ ভাস্কর্য মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মৃতির প্রতি উৎসর্গ করা হয়েছে। সন্ধ্যা নামলেই সড়কবাতির আলোয় এটি যেন হয়ে ওঠে স্বর্গের অমরাবতীর মতোই অনিন্দ্য সুন্দর। ভাস্কর্যটিকে ঘিরে তখন শিক্ষার্থীদের আড্ডা প্রাণবন্ত করে তোলে রাতের ক্যাম্পাসকে।

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে মূল উপজীব্য রেখে ভাস্কর্যটিতে ফুটে ওঠে অতীতের গৌরব। এ যেন ধাপে ধাপে মুক্তির দিকে এগিয়ে যাওয়াকে নির্দেশ করে স্বগৌরবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘জয় বাংলা’ ভাস্কর্য।

আনন্দবাজার/শাহী/সৈকত

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন