কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) জন্য অনুমোদিত ১৬৫৫ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার মেগা উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বাস্তবায়ন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। দুর্নিতিবাজদের দৌরাত্ম রোধ, স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ ও যথাসময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন এর লক্ষ্যে এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মোঃ আবু তাহের।
তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দেওয়ার যে কথাটি শোনা যাচ্ছে সেটি সত্যি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিপরিষদ সভায় সেনাবাহিনীর মাধ্যমে এই কাজ বাস্তবায়নের জন্য অনুমোদন দিয়েছেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রনালয় সবার অনুমোদন স্বাপেক্ষেই কাজটি সেনাবাহিনীকে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।’
তিনি বলেন, ‘দুর্নীতিবাজ ও সুযোগ সন্ধানীদের দৌরত্মে যেনো এই প্রকল্পে দীর্ঘসূত্রিতা তৈরি না হয় সেজন্যেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই অর্থ সম্পূর্ণ কাজে লাগিয়ে বিশ্বমানের একটি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলার জন্যেই সেনাবাহিনীকে এই কাজটি দেওয়া হচ্ছে।’
রেজিস্ট্রার আরও বলেন, ‘অনেক বিশ্ববিদ্যালয় চেষ্টা করেও সেনাবাহিনীর মাধ্যমে তাদের উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ করাতে পারেনি। কিন্তু আমাদের বেলায় মাননীয় অর্থমন্ত্রী নিজে উদ্যোগী হয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন, প্রকল্পের অর্থ যেনো একটুও নষ্ট না হয় সেজন্য এই কাজটি সেনাবাহিনীকে দেওয়ার জন্য।’
প্রকল্পের কাজ সেনাবাহিনীর দায়িত্বে যাওয়ার প্রক্রিয়া কতদূর তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পুরো প্রক্রিয়াটিই চলমান। এখনো কিছু সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর বাকি আছে।’
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬৫৫.৫০ কোটি টাকার প্রকল্পটি বাস্তবায়নের প্রধান প্রধান কার্যক্রমগুলো হল- ভূমি অধিগ্রহণ (২০০.২২ একর), ভূমি উন্নয়ন (১০০ একর), অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণ ০৪ টি (প্রতিটি ১০ তলা), ২য় প্ৰশাসনিক ভবন ০১টি (৬ তলা), ছাত্র-ছাত্রী হল নির্মাণ ০৪টি (২টি করে প্রতিটি ১০ তলা), উপাচার্যের বাসভবন নির্মাণ ১টি (২ তলা), শিক্ষকদের আবাসিক ভবন নির্মাণ ০১টি (১০ তলা)।
ডরমেটরি ভবন নির্মাণ ০১টি (১০ তলা), কর্মচারীদের আবাসিক ভবন নির্মাণ ০১টি (১০ তলা), স্কুল বিল্ডিং নির্মাণ ০১টি (৬ তলা), ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র নির্মাণ ০১টি (৫ তলা), অডিটোরিয়াম নির্মাণ ০১টি (৩ তলা), ইন্টারন্যাশনাল কমপ্লেক্স নির্মাণ ০১ টি (৬ তলা), মেডিকেল ও ডে কেয়ার সেন্টার নির্মাণ ০১ টি (৩ তলা), কেন্দ্রীয় মসজিদ নির্মাণ, স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ,স্পোর্টস কমপ্লেক্স নির্মাণ, পারিবারিক বিনোদন এলাকা উন্নয়ন, প্রধান ফটক, অভ্যন্তরীণ রাস্তা (৫০০০০.০০ বর্গ মিটার), লেক খনন, লেকের ওপর ব্রিজ নির্মাণ, ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ, মোটরযান ক্রয় ২০ টি (৫ টি মাইক্রোবাস, ৫টি বাস, ২টি অ্যাম্বুলেন্স, ১টি জীপ, ১টি পিকআপ, ১টি কার, ৫টি মোটরসাইকেল), শেডসহ গাড়ির ওয়ার্কশপ ও যন্ত্রপাতি ক্রয় এবং পরামর্শক ব্যয়।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর, মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসির সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় এ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন একনেকের চেয়ারপার্সন ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আনন্দবাজার/মাহমুদুল