ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনায় কেমন দিন কাটছে ক্যাম্পাস সংগঠকদের

মহামারি করোনা ভাইরাসে প্রাদুর্ভাবে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘ বিরতিতে ক্যাম্পাস সংগঠকদের সময় কেমন কাটছে এ বিষয়ে দৈনিক আনন্দবাজার এর মুখোমুখি হয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার পরিচিত ও প্রিয় মুখ তারেক আজিজ। তিনি একাধারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাইন্স ক্লাবের সাভাপতি, সাংবাদিক সমিতির অর্থ সম্পাদক, আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটি, জাবি চ্যাপ্টারের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনসহ ক্যাম্পাসে একজন বিজ্ঞান সংগঠক, গবেষক, সাংবাদিক ও ফিচার স্টোরি লেখক, রোটার‍্যাক্ট মেম্বার, তার নিজ দক্ষতা দিয়ে ইতোমধ্যে অর্জন করেছেন বিভিন্ন অঙ্গনেই। তার সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন কেএম হিমেল আহমেদ।

আনান্দবাজার: কেমন আছেন?

তারেক: আলহামদুলিল্লাহ ব্যক্তিগতভাবে সুস্থ্য আছি। কিন্তু দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে মানবিক বিপর্যয় দেখে খুব বেশি স্বস্তিতে নেই।

আনান্দবাজার: এই লকডাউনে আপনার অবসর সময় কিভাবে কাটছে?

তারেক: প্রায় ১০ বছর পর পরিবারের সাথে দীর্ঘ সময় আছি। যার কারণে ছোট ভাইবোনদের সাথে আড্ডা-খুনসুটির মধ্যে দিন কাটছে। এগুলো ফিরে পেয়ে জীবনের চিন্তাধারায় অনেক পরিবর্তনও এসেছে। পাশাপাশি এই সুযোগে (প্রাইভেট কার) চালানোটা শিখে নিয়েছি। উচ্চশিক্ষার জন্য নিজেকে টুকটাক প্রস্তুত করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করছি এছাড়াও করোনাভাইরাসের সামাজিক প্রভাব নিয়ে দুইটা রিসার্চ প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি। এলাকার স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছোট ভাইয়েরা কোন টপিক নিয়ে আসলে সাধ্যমতো বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি। তাদের মধ্যে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের আগ্রহ তৈরির চেষ্টা করি। এই অবসরে আমার স্কুলের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের সমন্বয় করে প্রয়াত বাংলাদেশী এস্ট্রোফিজিসিস্ট জামাল নজরুল ইসলামের নামে একটা বিজ্ঞান ক্লাব চালু করেছি। অল্প কথায় বলতে গেলে নিজের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য প্রতিনিয়ত নতুন কিছু শেখার চেষ্টায় আছি।

আনান্দবাজার: করোনা পরিস্থিতিতে আপনার ও জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি সায়েন্স ক্লাবের ভুমিকা কি?

তারেক: করোনা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার সাথে সাথে ক্লাবের ব্যানারে কিছু ভিডিও বার্তা দিয়ে মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করেছি। আর করোনাভাইরাসের সামাজিক প্রভাব নিয়ে যে রিসার্চ প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি, সেখানে জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি সায়েন্স ক্লাবের সদস্যরা প্রত্যক্ষভাবে কাজ করে যাচ্ছে সফল করার জন্য। এছাড়াও আমরা শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য সাধ্যমতো উপহার সামগ্রী পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি।

আনন্দবাজার: ক্যাম্পাসে কোন কোন কাজ কে আপনি এগিয়ে রাখবেন?

তারেক: ক্যাম্পাসে ভর্তি হয় মানুষ উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য কিন্তু দেখা যায় অনেকাংশে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার বাইরে চলে যায়। আমি অবশ্যই পড়াশোনাকে প্রথন গুরুত্ব দিতে বলব। এরপরেই ব্যক্তির রাজনৈতিক সচেতনতা ও কমিউনিটির বৃহত্তর কল্যাণে নিজে থেকে কিছু করার মানষিকতা থাকা চাই। তা নাহলে মানবিক গুণ গুলো চর্চা ব্যহত হয় অনেকাংশে। ছাত্রাবস্থায় কিছু ভলান্টারি কাজ করলে সৌহার্দ্য ও সম্প্রতিপূর্ণ একটি বাংলাদেশ গড়ার মনমানসিকতা তৈরি হয়। আর সামাজিক কাজের মাধ্যমে দূর্নীতি, অপসংস্কৃতি, কলুষতা মুক্ত বুদ্ধিবৃত্তিক চিন্তাভাবনা করার মতো মানুষ তৈরি হয়।

আনন্দবাজার: আপনার পছন্দের কাজ কি?

তারেক: আমার সবচেয়ে পছন্দের আলোচনা ও পরামর্শের ভিত্তিতে মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া ও নতুন কিছু শেখা। বন্ধু তৈরি করতেও অনেক ভালো লাগে। এছাড়াও রান্নাবান্না, ড্রাইভিং, ঘোরাঘুরি, বই পড়া ভালো লাগে। তবে গান শোনা, মুভি দেখা এগুলো খুব একটা হয়ে ওঠেনা।

আনন্দবাজার: লকডাউনে ঘরে বসে থেকে আপনার কোন কোন অভ্যাস তৈরি হয়েছে?

তারেক: লকডাউনে একটা কাজের অভ্যাস হয়েছে যে হলো বিভিন্ন দেশের এডুকেশন সিস্টেম, হায়ার স্টাডি, স্কলারশিপের সুযোগ এগুলো নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা। এটা প্রতিদিনই কিছু কিছু করেছি। এখানে লক্ষণীয় একটা দিক হলো, আমার ভিডিও দেখার অভ্যাস কম ছিলো, এখন বেড়েছে অনেকটা। তাছাড়া লকডাউনের শুরুতে একটানা বেশ কিছু বই পড়েছিলাম।

আনন্দবাজার: ধন্যবাদ আপনাকে।

তারেক: ধন্যবাদ আনন্দবাজারকেও।

আনন্দবাজার/হিমেল

সংবাদটি শেয়ার করুন