শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বেতন পরিশোধ না করায় অনলাইন ক্লাসে বাধা প্লেপেন স্কুলের

মাসিক বেতন পরিশোধ না করায় শিক্ষার্থীদের ইউজার ব্লক করে অনলাইন ক্লাস করতে না দেয়ার অভিযোগ উঠেছে বসুন্ধরাস্থ প্লেপেন স্কুলের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ক্লাস শুরু করতে গেলে এমন ঘটনা ঘটে বলে জানান ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অবিভাবকরা।

হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে বারবার বেতনের জন্য চাপ প্রয়োগের অভিযোগ অবিভাবকদের। অবিভাবকরা জানান, দীর্ঘ তিন মাস স্কুলের কোন প্রকার কার্যক্রম না চালিয়েও মাসিক বেতন সম্পূর্ণ পরিশোধের চাপ দিয়ে আসছিল প্লেপেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

গত মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকে করোনার প্রাদুর্ভাবের জন্য স্কুল বন্ধ করে দেয়া হয়। কিন্তু অন্যান্য ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলো কিছুদিনের মধ্যে অনলাইন ক্লাস চালু করলেও প্লেপেন স্কুল কর্তৃপক্ষ কোন প্রকার কার্যক্রম শুরু করেননি। বরং তারা নিয়মিত স্কুলের মাসিক বেতন পরিশোধের জন্য অভিবাবকদের চাপ দিয়ে আসছিলেন। স্কুলের মাসিক বেতনের অনলাইন পোর্টালে গিয়ে দেখা যায়, এপ্রিল ও মে মাসের বকেয়া বেতনের জন্য জরিমানা ধার্য করা হয়েছে। বিভিন্ন অভিবাবকেরা তাদের অপারগতার কথা জানিয়ে এপ্রিল, মে ও জুন মাসের বেতন বিশেষ বিবেচনায় ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ছাড় দেয়ার অনুরোধ জানিয়ে প্লেপেনের অফিসিয়াল ইমেইল আইডিতে ইমেইলকরেন।

প্লেপেন গার্ডিয়ান এসোসিয়েশন নামে অভিবাবকদের একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে গত ৩০ মে বিশেষ বিবেচনার জন্য এই ইমেইল করা হয়। কিন্তু মাসিক বেতনের কোন প্রকার সুরাহা না করেই স্কুল কর্তৃপক্ষ ১৪ জুন থেকে স্বল্প পরিসরে শুধুমাত্র ক্লাস এইট থেকে এ লেভেল পর্যন্ত অনলাইনে ক্লাস শুরু করে।

আরও পড়ুনঃ  চলতি মাসেই এইচএসসির ফল প্রকাশ

অবিভাবকদের অভিযোগ, বকেয়া বেতন বাকি থাকার কারণে বৃহস্পতিবার অনেক শিক্ষার্থীকে অনলাইন ক্লাসের সুযোগ দেয়া হয়নি। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে স্কুল ড্রেস পরে কম্পিউটারের সামনে বসে নিজের স্কুলের এহেন কার্যক্রমে মুষড়ে পরে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অবিভাবক বলেন, বেতন পরিশোধের জন্য প্রতিনয়তই টেক্সট মেসেজের মাধ্যমে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছিল। এমনকি জরিমানা ছাড়া বেতন পরিশোধের জন্য ২৫ জুন পর্যন্ত সময়ও বেধে দিয়েছিল। কিন্তু সময় পার হবার আগেই আমার সন্তানের ইউজার আইডি ব্লক করে তাকে ক্লাস করতে বাধা দেয়া হলো।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক অবিভাবক বলেন, সবার আর্থিক অবস্থা তো সবসময় এক থাকে না। করোনা পরিস্থিতিতে অতি উচ্চবিত্তরাও সমস্যায় আছেন। সন্তানদের সব পরিস্থিতিতে আগলে রাখার চেষ্টা করছি। আজকে তাকে অনলাইন ক্লাসে ঢুকতে না দেয়ায় সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। একজন শিশুকে এভাবে মানসিক নির্যাতন করার দায় কে নিবে।

এ বিষয়ে জানতে প্লেপেন স্কুলের অধ্যক্ষ সোরাবন তহুরাকে ফোন দেয়া হলে তিনি ফোন কেটে দেন। পরে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। প্লেপেনের চেয়ারম্যান মান্নান খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি স্কুল চালাই না, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।

উল্লেখ্য, ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোতে করোনাকালীন বন্ধে ৫০ শতাংশ বেতন মওকুফের জন্য কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়ে গত ১৫ জুন (সোমবার) সরকারকে আইনি নোটিশ দেয় হাইকোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ মহিদুল কবির সত্ত্বর ব্যবস্থা চেয়ে ই-মেইলে এ নোটিশ পাঠান। কিন্তু নোটিশ পাঠানো হলেও বেশিরভাগ স্কুলই তা মানছে না বলে জানান মহিদুল কবির।

আরও পড়ুনঃ  ধর্ষণের প্রতিবাদে কুবি ছাত্রলীগের মোমবাতি প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি

আনন্দবাজার/ডব্লিউ এস

সংবাদটি শেয়ার করুন