সরকারের শেষ সময়ে বিশেষ বিবেচনায় ৯১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৫টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৫টি, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১১টি, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ ২৩টি ও ডিগ্রি পাস কলেজ রয়েছে ৭টি।
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের বেসরকারি মাধ্যমিক-৩ শাখার যুগ্ম সচিব জহিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত পৃথক ৫টি প্রজ্ঞাপন থেকে এসব তথ্য জানা যায়। এর আগে গত ১৪ আগস্ট শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির নির্বাচনী এলাকার দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হয়েছিল।
তবে শেষ সময়ে এমপিওভুক্তিকে স্রেফ নির্বাচনী ট্রাম্প কার্ড হিসেবে্ই অভিযোগ করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তারা বলছেন, এসব প্রতিষ্ঠান এমপিও নীতিমালার শর্ত পূরণ না করলেও সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক বিবেচনায় এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। তবে বিষয়টি স্বীকার করতে রাজি নয় শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. রবিউল ইসলাম। তিনি বলেন, সরকার প্রয়োজন মনে করলে যে কোনো সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করতে পারে। এতে অন্য কিছু ভাবার সুযোগ নেই।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, সাধারণত তিন-চার বছর পরপর এমপিওভুক্ত করার আবেদন নেওয়া হয়। এটাই প্রচলিত নিয়ম, কিন্তু এবার ঘটেছে উল্টোটা। কারণ এবারের এমপিওভুক্তিতে রাজনৈতিক বিবেচনা মুখ্য বিষয় ছিল। এ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও শিক্ষাবিদ কামরুল হাসান মামুন বলেন, বর্তমান সরকারের শেষ সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার ফলে ভোটের মাঠে ক্ষমতাসীনেরা এটি নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্প কার্ড হিসেবে ব্যবহার করবে।
প্রসঙ্গত, এমপিও হলো মান্থলি পে-অর্ডার বা মাসিক বেতন আদেশ। এমপিওভুক্ত হওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা প্রতি মাসে বেতনের মূল অংশ ও কিছু ভাতা সরকার থেকে পেয়ে থাকেন। আর বাকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকার থেকে কোনো আর্থিক সুবিধা পান না। এ জন্য বেসরকারি স্কুল-কলেজ পর্যায়ে এমপিওভুক্ত করার বিষয়টি অন্যতম আলোচিত বিষয়। এর আগে, গত বছরের ৬ জুলাই ২ হাজার ৭১৬ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ঘোষণা দেওয়া হয়। ২০১৯ সালে ২ হাজার ৬৩৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হয়। ২০১০ সালে ১ হাজার ৬২৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছিল।