বিদ্যালয়ের নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে অনিয়মের প্রতিবাদ করায় প্রধান শিক্ষক ইসলাম উদ্দিনকে মারধোরের অভিযোগ পাওয়া গেছে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য রাশেদের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পাবনার সাঁথিয়ায় কাশিনাথপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অফিসকক্ষে সভাপতি আব্দুল বাতেন মিয়ার সামনেই ন্যাক্কারজনক এ ঘটনা ঘটে। এ সময় চোখে প্রচন্ড আঘাতপ্রাপ্ত হন তিনি। প্রধান শিক্ষক ইসলাম উদ্দিন সাঁথিয়া থানায় ঐ দিনই সন্ধায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পুলিশের কোনরুপ সহযোগীতা না পেলে আদালতের দারস্থ হবেন বলেও জানান আহত প্রধান শিক্ষক।
প্রধান শিক্ষক ইসলাম উদ্দিন জানান, কাশিনাথপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে কম্পিউটার ল্যাব পদে লোক নিয়োগকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার দুপুরে প্রধান শিক্ষককের অফিস কক্ষে আলোচনায় বসেন সভাপতিসহ অন্যান্য সদস্যগণ।
এ সময় সদস্য রাশেদ তার নিজের লোককে অর্থের বিনিময়ে নিয়োগের জন্য পাবনা ডিজির প্রতিনিধির নিকট যেতে বলে প্রধান শিক্ষককে। এতে প্রধান শিক্ষক বলেন, সভাপতি মহোদয়ের সাথে কথা হয়েছে বৃহস্পতিবারে যাব। যেহেতু রেজুলেশন লেখা হয় নাই। ওই টা লিখে রেডি করে তারপর যাবো। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে সে আমার চোখে প্রচন্ড জোরে ঘুষি মারে। এতে আমি সজ্ঞাহীন অবস্থায় চেয়ারের উপর পড়ে যাই। পরে সহকর্মীরা আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
প্রধান শিক্ষক অভিযোগে আরও বলেন, এর আগে আমাকে একটি অনৈতিক প্রস্তাব দেয় সদস্য রাশেদ। তারা প্রার্থীর নিকট থেকে মোটা অংকের অর্থের লেনদেন করেন যা আমাকেও ভাগ নিতে বলে। এতে আমি অস্বীকার করলে পরে একজনের মাধ্যম দিয়ে আমাকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করে।
আমি এতেও অস্বীকার জানালে সে সভাপতির সামনেই আমাকে অশ্লিল ভাষায় গালাগাল করেন। আমি এর প্রতিবাদ করে সভাপতির নিকট উপস্থাপন করতেই আমার চোখের উপর ঘুষি মারলেন। তিনি বলেন, আমি চোখে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে সাঁথিয়া থানায় এসে অভিযোগ দিলে ওসি বলেন, আমি দেখতেছি আপনি যান। আমি এর বিচার চাই। প্রয়োজনে আমি আগামীকাল আদালতের শরনাপন্ন হব।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সদস্য রাশেদ এর সঙ্গে কথা হলে মারধোরের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, বিদ্যালয়ের জায়গা ট্রাস্টের নামে থেকে বিদ্যালয়ের নামে করার জন্য একটা প্রতিবেদন চান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। প্রধান শিক্ষক ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের কাউকে না জানিয়ে একতরফাভাবে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন এ জন্য একটু কথাকাটাটি হয়ে মাত্র।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল বাতেন মিয়ার সাথে মুঠোফোনে একাধীকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে কল কেটে দিয়ে ফোন বন্ধ করে রাখেন।
এ ব্যাপারে সাঁথিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ রফিকুল ইসলামের সরকারী নম্বরে বেশ কয়েকবার ফোন করে তাঁকে না পাওয়ায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। প্রধান শিক্ষক ইসলাম উদ্দিন সাঁথিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি জানালে, তিনি তাকে আইন এর আশ্রয় নিতে বলেন। এবং শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টা জানানোর পরে তিনি ও আইন এর স্বর্ণপূর্ণ হতে বলেছেন। বিষয়টি নিয়ে আজ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের উপর অতর্কিত হামলা প্রতিবাদে মানব বন্ধন করেন। মুঠো ফোনে সাঁথিয়ার উপজেলার নির্বাহী অফিসার কে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে, তাকে মুঠো ফোনে পাওয়া যায়নি।