যোগ,বিয়োগ,গুন আর ভাগ অংক কষে বড় হয়েছেন তিনি। আর দু’জন মানুষের মতো নয়- গনিত শেখাকে নিয়েছেন পরিচয় গড়ার হাতিয়ার হিসেবে। গনিত শেখা আর জটিল সমস্যার সরল সমাধানে নিরলস প্রচেষ্টা চালানো গনিতাঙ্গনের এই তরুণীর নাম সায়মা ইসলাম।
গনিতের প্রতি তার আগ্রহের মাত্রা অনেকটা রুপচর্চার মতো। গনিতই যেন তার রুপযত্নের মূখ্য উপকরণ। বছর কুড়ি ছুঁইছুঁই বয়সে গনিতের এক একটি শাখা আয়ত্ত্ব করে ঝুড়ি ভর্তি করাই যেন সায়মার নেশা।
ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ছে এই সায়মা ইসলাম। গনিতের সাথে রয়েছে তার বহু আগের প্রেমময় মমতার বন্ধনও। সেই প্রেমচিত্রই যেন ২১শে জুলাই ধারণ করলো পরিণয়ের রুপ। নিজ জেলা লক্ষ্মীপুরে লক্ষ্মীপুর ম্যাথ ক্লাবের গনিত অলিম্পিয়াডে লিখিত পরীক্ষায় সায়মা ইসলাম অর্জন করে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব। অবিস্মরণীয় জয়ে উচ্ছ্বসিত সায়মার গনিতের প্রতি ভালোবাসা এরই মধ্যে নেমেছে আকাশ ছোঁয়ার প্রতিযোগিতায়।
রহস্যময় প্রতিভাধর এই মেধাবী জেলার গনিত অলিম্পিয়াডে স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠ প্রিন্সিপাল কাজী ফারুকী কলেজের হয়ে করে প্রতিনিধিত্ব। গনিতের প্রতি তার প্রবল আগ্রহ আর নিজ জেলার গনিত শক্তির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতেই রীতিমতো সায়মা ইসলাম লক্ষ্মীপুরের গনিত কন্যা হিসেবে সর্বসাধারণ্যে চর্চিত হচ্ছেন। অলিম্পিয়াডের উপজেলা বাছাইপর্বে শীর্ষ নম্বর পেয়ে সায়মা পৌঁছায় জেলা পর্যায়ের দ্য ব্যাটল অব ম্যাথের চুড়ান্ত সীমায়। গনিতের রণকৌশল জানা সায়মা শুধু চালিয়েন মেধার অস্ত্র। সূত্র, মেধা আর তাৎক্ষনিক বুদ্ধির এ লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত বয়ে আসে এক অনন্য সম্মান। গনিতের সকল অংশই তার সমান প্রিয়। চেষ্টা আর পরিশ্রমে বীজগনিত এবং পাটিগণিতে তার দখল রয়েছে তুলনামূলক বেশি।
গনিতাঙ্গনের এ লড়াইয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর লক্ষ্মীপুরের গনিত কন্যা হিসেবে তিনি পরিচিত অর্জন করলেও বাবা-মায়ের কাছে সেই শৈশবের সময় থেকে এখন পর্যন্ত সায়মা -লক্ষ্মী কন্যা হিসেবেই সমাদৃত হয়ে আসছেন। এবার এ আদুরে সমাদরের সাথে লক্ষ্মীপুরের গনিত কন্যা যুক্ত হয়ে সায়মা পেয়েছেন নতুন এক সংমিশ্রিত নাম- লক্ষ্মীপুরের লক্ষ্মী কন্যা। সায়মার এ অর্জনে উচ্ছ্বসিত তার শিক্ষক ও পড়ুয়া প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও। সায়মার ইসলামের অধ্যয়নরত কলেজের অধ্যক্ষ নুরুল আমিন গনিত অলিম্পিয়াডে সায়মার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার এ কৃতিত্বকে দেখছেন- বিশাল অর্জন হিসেবে। জেলার গন্ডি পেরিয়ে বিশ্ব গনিতবিদের কাতারে নাম লেখাবেন সায়মা- এমন প্রত্যাশা সকলের।
আনন্দবাজার/শহক