ঢাকা | শুক্রবার
২৯শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান

নীলফামারীর ডিমলায় নাউতারা কৈ পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে শিক্ষাকার্যক্রম ও পাঠদান। এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ভবন এতই ঝুঁকিপূর্ণ যে, সব সময় দুর্ঘটনার আতঙ্কে থাকেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

ভবনটির ভিতরে গেলে চোখে পড়ে ছাদে ও দেয়ালের পলেস্তার খসে পড়ার চিত্র। দেখা যায় আরসিসি পিলার ও গ্রেট বিমগুলোতে বিস্তৃত ফাটল। একতলা এই ভবনে চারটি কক্ষের সবগুলোই ঝুঁকিপূর্ণ। বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন জেনেও সেখানে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। এ কারণে সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়ে আতঙ্কে থাকেন অভিভাবকরাও।

জানা যায়, উপজেলার নাউতারা ইউনিয়নে ১৯৭৩ ৬৪শতাংশ জমির ওপর নাউতারা কৈ পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়।১৯৯৩ সালে চার কক্ষের একতলা ভবনটি নির্মাণের পর থেকে এখানেই স্কুলের কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। ২০১৩ সালে স্কুলটি জাতীয়করণ হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক আছেন ৫ জন এবং শিক্ষার্থী আছেন ১৪৩ জন।

গতকাল সরেজমিনে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের ত্রুটিপূর্ণ ভবনের কক্ষগুলো জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। ছাদ ও দেয়ালের পলেস্তরা খসে পড়ছে। বৃষ্টির সময়ে ছাদ ছুঁয়ে পানি পড়ছে মেঝেতে। ফলে সব সময় আতঙ্কে থাকেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।এ অবস্থা দিনদিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। পাঠদান চালু রাখার স্বার্থে ঝুঁকিপূর্ণ তিনটি কক্ষে চলছে পাঁচটি শ্রেণির পাঠদান।তবে শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ থেকে ওই ভবন পরিদর্শন বা ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়নি। এমনকি বিষয়টি জানা নেই উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার।

বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, অনেক দিন ধরে বিদ্যালয়ের ভবন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তারপরও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ক্লাস কার্যক্রম চলছে।শিক্ষার্থীরা ভয়ে ভয়ে ক্লাস করে থাকে। ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় অনেক অভিভাবক তাদের ছেলেমেয়েকে বিদ্যালয়ে আসতে দিতে চান না।আন্জুমান আরা নামে এক অভিভাবক বলেন, স্কুলের পলেস্তারা খুলে খুলে পড়ছে। যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা হতে পারে। তাই সন্তানকে স্কুলে পাঠিয়ে সারাক্ষণ আতঙ্কের মধ্যেই থাকি।
পন্ঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদেকুল ইসলাম জানায়, ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটিতে তারা ভয়ে ভয়ে ক্লাস করে।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফরোজা সুলতানা বলেন, ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার জানিয়েও এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে রাখা সম্ভব নয়। যেকোনো সময় বড় কোনো দুঘর্টনা ঘটতে পারে।

তিনি আরও বলেন,কয়েকদিন আগে পুজোর ছুটিকালীন সময়ে অফিস কক্ষের ছাদের পলেস্তার ধ্বসে পড়ে ছিল মেঝেতে।ভাগ্যিস স্কুল বন্ধ ছিল। ফলে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

ডিমলা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ বলেন,ঝুঁকিপূর্ন ভবনের বিষয়টি আমার জানা নেই। বিষয়টি জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি। বিদ্যালয়ের এ দুরাবস্থা থেকে উত্তরণের দাবি জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও স্থানীয়রাও।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন