ঢাকা | সোমবার
৭ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
২২শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অধ্যক্ষের পদ নিয়ে টানা-হেঁচড়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের পদ নিয়ে নাটকীয় পরিবেশের সৃষ্টি হচ্ছে। ওই কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু জামাল মঙ্গলবার অবসরে চলে যাওয়ার প্রাক্কালে তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিধি মেনে সহকারি অধ্যাপক ওয়াহিদ সারোয়ারকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের চলমান দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন। এরপর পর এ কলেজে জ্যেষ্ঠ শিক্ষক অধ্যাপক হুমায়ুন কবির মোল্লা বিধি না মেনে তিনিও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দাবি করেণ। এনিয়ে কলেজে এক নাটকিয় অবস্থা তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে শিক্ষক অভিভাবক শিক্ষার্থীদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

এদিকে এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে বুধবার কলেজ হলরুমে সংবাদ সম্মেলন করেণ কলেজের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক অধ্যাপক হুমায়ুন কবির মোল্লা। বিধি অনুযায়ী জ্যেষ্ঠতার বিচারে তাকে এ কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে কলেজের অধিকাংশ শিক্ষকরা স্বত:স্ফুর্তভাবে উপস্থিত ছিলেন।

এসময় তারা অধ্যাপক হুমায়ুন কবির মোল্লাকে অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে হুমায়ুন কবির মোল্লা বলেন, আমি কলেজের জ্যেষ্ঠতম শিক্ষক। তবে, কলেজের সদ্য অবসরে যাওয়া ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বিধি মোতাবেক আমার কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর না করে আরেকজন শিক্ষকের কাছে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের রুটিন দায়িত্ব দিয়ে গেছেন। যা বৈধ নয়। এজন্য কলেজের অধিকাংশ শিক্ষকরা আমাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব নেওয়ার অনুরোধ করেণ। বিষয়টি ২০২২ সনের ২৫ জানুয়ারিতে জারিকৃত সরকারি প্রজ্ঞাপনের বিধি মোতাবেক হওয়ায় এবং প্রশাসনিক পদ শূণ্য থাকতে পারে না বিধায় আমি দায়িত্ব গ্রহণ করলাম।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তার পূর্ণ দায়ত্বি পালন কালে একটিও স্টাফ কাউন্সিলরের মিটিং করতে পারেন নি। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী কলেজে শিক্ষকের নিকট দায়িত্ব হস্তান্তরের কথা ছিল । তবে, ওই দিন তিনি অনুপস্থিত থেকে জ্যেষ্ঠতা লঙ্গন করে চলমান দায়িত্ব ওয়াহিদ সারোয়ারের কাছে হস্তান্তর করেন।

এদিকে সংবাদ সম্মেলনে চলাকালে  অধ্যক্ষের কার্যালয় তালা থাকলেও কলেজে ক্লাস চলমান ছিল।

কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বপ্রাপ্ত ওয়াহিদ সারোয়ার বলেন, আমি ও হুমায়ুন মোল্লা একই দিনে কলেজে যোগদান করি। বয়সের দিক থেকে তিনি আমার কাছ থেকে কয়েকদিনের বড়। সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু জামাল ভূঁইয়াকে তার কার্যালয়ে তালাবদ্ধ করে রাখায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। যা এখনও বিচারাধীন রয়েছে। সাবেক অধ্যক্ষের চাকরির মেয়াদকাল শেষ হওয়ায় কর্তৃপক্ষ বিধি অনুযায়ি আমার উপর চলমান দায়িত্ব অর্পণ করেন।

কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আবু জামাল বলেন, জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে এ কলেজের তিনজন শিক্ষকের নামের তালিকা মাউশিতে পাঠানো হয়। প্রস্তাবিত ওই তিন শিক্ষক হলো হুমায়ুন কবীর মোল্লা, ওয়াহিদ সারোয়ার ও শাহজাহান রহমানী। এর মধ্যে হুমায়ুন কবীরের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা বিচারাধীন থাকায় দ্বিতীয় জ্যেষ্ঠ শিক্ষক ওয়াহিদ সারোয়ারের কাছে মাউশির পরামর্শক্রমে চলমান দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার অংগ্যজাই মারমা বলেন, সাবেক অধ্যক্ষকে বলেছিলাম বিধি মোতাবেক জ্যৈষ্ঠ শিক্ষকের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর করার জন্য। তিনি যদি তা না করে থাকেন এজন্য যদি কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় তাহলে বিষয়টি আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করব। হুমায়ুন কবির মোল্লার দায়িত্ব গ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উনি যদি যোগ্যও হয়ে থাকেন তাহলেও বিধি মোতাবেক আদেশ বলে তাকে দায়িত্ব নিতে হবে। নিজে নিজে দায়িত্ব নিলে সেটা ঠিক  হবে না।

সংবাদটি শেয়ার করুন