ঢাকা | বৃহস্পতিবার
১লা মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
১৮ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দাঁড়াও পথিকবর, আমার নাম ‘কাইজেলিয়া’

কাইজেলিয়া একটি দুর্লভ প্রজাতির ঔষধি গাছ। বাংলাদেশে এই গাছের সংখ্যা রয়েছে মাত্র কয়েকটি। এরমধ্যে প্রায় শতবর্ষী দুটি কাইজেলিয়া গাছ রয়েছে রংপুর কারমাইকেল কলেজ ক্যাম্পাসে। একটি গাছ রয়েছে কারমাইকেল কলেজের প্রধান ফটক থেকে ৫০০ গজ দক্ষিণে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বিপরীত দিকে।

কাইজেলিয়া একটি দুর্লভ প্রজাতির ঔষধি গাছ। বাংলাদেশে এই গাছের সংখ্যা রয়েছে মাত্র কয়েকটি। এরমধ্যে প্রায় শতবর্ষী দুটি কাইজেলিয়া গাছ রয়েছে রংপুর কারমাইকেল কলেজ ক্যাম্পাসে। একটি গাছ রয়েছে কারমাইকেল কলেজের প্রধান ফটক থেকে ৫০০ গজ দক্ষিণে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বিপরীত দিকে।

গাছটিতে ঝুলানো সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে ‘দাঁড়াও পথিকবর, আমার নাম ‘কাইজেলিয়া’। অপর গাছটি রয়েছে কলেজ মসজিদের সম্মুখে। এই কাইজেলিয়া গাছের আদি নিবাস আফ্রিকা মহাদেশের সেনেগালের দক্ষিণাঞ্চলে। আফ্রিকার বাইরে এই গাছটির অস্তিত্ব খুব বেশি দেখা যায় না। পৃথিবীর বিরল প্রজাতির বিখ্যাত গাছগুলোর মধ্যে ‘কাইজেলিয়া’ একটি অন্যতম নাম। এটি ‘বিগনোনিয়াসিয়া’ গোত্রের গাছ। এর বৈজ্ঞানিক নাম ‘কাইজেলিয়া আফ্রিকানা’।

কারমাইকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার শুরুর দিকে ১৯১৬-১৯২০ সালে কোনো এক বৃক্ষপ্রেমী কাইজেলিয়ার দুটি চারা রোপণ করেছিলেন। বর্তমানে গাছ দুটির উচ্চতা প্রায় ২০ থেকে ২৫ মিটার। কাইজেলিয়ার ফলকে প্রক্রিয়াজাত করে আলসার, সিফিলিস, সাপে কাটা রোগীর ওষুধ, বাত, ছত্রাক দমন, চর্মরোগ ও মেয়েদের প্রসাধনী এমনকি ক্যান্সারের চিকিৎসাতেও ব্যবহার করা হয়।

বিলুপ্ত এই কাইজেলিয়া বৃক্ষের নামানুসারে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে প্রতিশ্রুতিশীল সংগঠন কারমাইকেল কাইজেলিয়া শিক্ষা-সংস্কৃতি সংসদ (কাকাশিস)। এই সংগঠনের নেতা রবিউল আলম রবি জানান, বেশ কয়েক বছর আগে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কারমাইকেল কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের একদল কৃষি বিজ্ঞানী টিস্যু কালচার পদ্ধতিতে বিলুপ্ত কাইজেলিয়ার বেশ কয়েকটি চারা উদ্ভাবন করেছিলেন।

কিন্তু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ময়মনসিংহে সেই চারাগুলো রোপণ করলেও সেগুলোকে আর বাঁচাতে পারেনি। প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান থেকে দেশি-বিদেশি পর্যটক ও বৃক্ষপ্রেমী দর্শনার্থীরা এই কাইজেলিয়া গাছ দেখতে আসেন। কারমাইকেল কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের প্রধান প্রফেসর নাজমা বেগম জানান, কাইজেলিয়া বিরল প্রজাতির একটি ঔষধি গাছ। বর্তমানে কাইজেলিয়া বিলুপ্তির পথে থাকায় এর চারা উৎপাদনের মাধ্যমে বংশবৃদ্ধির চেষ্টা চলছে।

ঢাকায় কর্মরত কারমাইকেল কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী ইসমত আরা বলেন, মনোমুগ্ধকর ক্যাম্পাসের সেই সময়ের নানা স্মৃতি আজও মানস্পটে ভেসে ওঠে। মনে দোলা দেয় কারমাইকেলের সেই কাইজেলিয়া গাছ।

দুর্লভ প্রজাতির কাইজেলিয়া গাছের কথা প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের আজও মনে করিয়ে দেয় উল্লেখ করে কারমাইকেল কলেজের অধ্যক্ষ ড. শেখ আনোয়ার হোসেন বলেন, সুযোগ পেলেই অনেকে আসেন প্রিয় ক্যাম্পাসে নানা স্মৃতি বিজরিত এই কাইজেলিয়া গাছ দেখার জন্য।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন