ঢাকা | শুক্রবার
১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চলনবিলে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত চাষীরা

চলনবিলে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত চাষীরা

চলনবিলে মাঠের পর মাঠ সরিষার হলুদ ফুলে ভরে উঠেছে। যেন হলুদ শাড়ি পড়েছে ক্ষেত। মধু চাষীরাও ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন সরিষার ক্ষেত থেকে মধু সংগ্রহে। চলনবিলে বিভিন্ন এলাকায় ফসলের মাঠ ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ক্ষেতের পাশে পোষা মৌমাছির শতশত বাক্স থেকে মধু সংগ্রহ করছেন চাষীরা। সাধারণত পছন্দের একটি সরিষা ক্ষেতের পাশে খোলা জায়গায় চাকভরা বাক্স ফেলে রাখেন চাষীরা। একেকটি বাক্সে মোম দিয়ে তৈরি আট থেকে ১০টি মৌচাকের ফ্রেম রাখা হয়। তার ভেতর রাখা হয় একটি রাণী মৌমাছি। রাণী মৌমাছির কারণে ওই বাক্সে মৌমাছিরা আসতে থাকে। মৌমাছিরা ফুল থেকে মধু এনে বাক্সের ভেতরের চাকে জমা করে। আর এ চাক থেকেই মধু সংগ্রহ করেন মৌমাছি চাষীরা। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলে মধু সংগ্রহ। মৌ চাষের মাধ্যমে চাষীরা একদিকে যেমন আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন, অন্যদিকে দূর হচ্ছে বেকারত্ব। সরিষা ফুলের মধু খাঁটি ও সুস্বাদু হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থানসহ বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।

তাড়াশ উপজেলার মহেশরৌহালী গ্রামে আসা মৌ-চাষী জিন্নত শাহ্ বলেন, ‘আমরা সরিষাক্ষেত থেকে বছরে চার মাস মধু সংগ্রহ করে থাকি। অন্য আট মাস কৃত্রিম পদ্ধতিতে চিনি খাইয়ে মৌমাছিদের পুষে রাখা হয়। ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সরিষা থেকে মধু সংগ্রহের উপযুক্ত সময়। তখন জেলার সর্বত্রই সরিষার ফুল ফোটে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আকার ভেদে একটি বাক্সে ২০ থেকে ৪০ কেজি পর্যন্ত মধু পাওয়া যায়। এখানে মৌ চাষের বিশেষ বাক্স কলনি রয়েছে ১০০টি। প্রতিটি কলনিতে খরচ হয় আট থেকে ১০ হাজার টাকা। প্রতিকেজি মধু বিক্রি করা হয় ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা দরে। এতে প্রতিকলনিতে লাভ হয় প্রায় ৫ হাজার টাকা। চলনবিল এলাকায় আরও বেশ কয়কটি চাষীর দল রয়েছে। সব মিলিয়ে চাষীরা প্রতিমৌসুমে প্রায় ২০ লাখ টাকার মধু সংগ্রহ করে থাকেন।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মতে, ‘সরিষা ক্ষেতের পাশে মৌমাছির চাষ হলে সরিষার ফলন ১০ ভাগ বেড়ে যায়। তাই সরিষার ফলনও ভালো হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সরিষাক্ষেত থেকে বিনা খরচে মধু সংগ্রহ লাভজনক ব্যবসা। এতে মৌমাছি ব্যবসায়ী যেমন অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন, অন্যদিকে সরিষার ফলনও বাড়ছে।

আনন্দবাজার/এম.আর

সংবাদটি শেয়ার করুন