করোনায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ফুল বিক্রেতারা। তবে এ ক্ষতি ধীরে ধীরে কাটিয়ে উঠছেন ফুল চাষিরা। গত এপ্রিলেও বিক্রি না হওয়ায় অনেক টাকার ফুল ফেলে দিতে হয়েছিল। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন অনুষ্ঠান শুরু হলে আবারও বেড়ে যায় ফুলের চাহিদা। ফলে টানা পাঁচ মাসের মন্দা সরে গিয়ে ফিরে এলো প্রাণচাঞ্চল্য।
দেশের প্রায় ৫০ লাখ মানুষ ফুল উৎপাদন, বাজারজাতকরণ ও খুচরা ফুল ব্যবসার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত থেকে জীবিকা নির্বাহ করছে। এখন আবার ফুল বিক্রি শুরু হওয়ায় ফুল চাষিরা শেড তৈরি, চারা রোপণ ও পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
এই খাতটি গতিশীল করতে করোনাভাইরাসের কারণে বন্ধ থাকা সব সামাজিক অনুষ্ঠান চালু করে দেওয়াসহ এ খাতে সরকারি প্রণোদনা জরুরি বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটি।
রাজধানীর শাহবাগের ফুল ব্যবসায়ী ও অনন্যা পুষ্পবিতানের মালিক মো. লোকমান হোসেন বলেন, স্বাভাবিকের তুলনায় এখন প্রায় ৫০ শতাংশ ফুল বিক্রি হচ্ছে। সামনের মাসে আরো বাড়বে। কিছু কমিউনিটি সেন্টারে বুকিং চলছে। কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠান শুরু হলে আমরা ফুল বিক্রিতে কিছুটা হলেও স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে যেতে পারব।
করোনার প্রভাবে দীর্ঘদিন পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও জাতীয় অনুষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় ফুল বিক্রি একদম বন্ধ ছিল। সে কারণে ফুল চাষি থেকে শুরু করে এ খাতের সঙ্গে যারা জড়িত সবাই অনেক ক্ষতির মধ্যে ছিল।
বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি মো. আব্দুর রহিম বলেন, করোনার কারণে দীর্ঘ পাঁচ মাস সব ধরনের অনুষ্ঠান বন্ধ থাকায় ফুল বিক্রি হয়নি। চাষি ও বিক্রেতাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এখন আবার ফুল বিক্রি শুরু হয়েছে। বিক্রি শুরু হওয়ায় চাষিরাও ফুলের চারা রোপণ ও পরিচর্যায় মনোযোগ দিয়েছেন। গত অর্থবছরে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে। কয়েক বছর ধরে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতেও কিছু ফুল রফতানি হয়।
তিনি আরও বলেন, সরকারের কাছে আমাদের একটি দাবি, করোনা পরিস্থিতি যেহেতু সহজে শেষ হচ্ছে না তাই করোনার কারণে যেসব সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে, সেগুলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে পালনের অনুমতি দিলে আমরা তিন থেকে চার মাসের মধ্যে ঘুরে দাঁড়াতে পারব।
আনন্দবাজার/ইউএসএস