বুধবার, ৪ঠা অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
হিমশিম সাধারণ মানুষ

দাগনভূঞা লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজার

দাগনভূঞা লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজার

বৃষ্টি এবং সরবরাহের ঘাটতির অজুহাতে পবিত্র ঈদুল আজহার পর ফেনীর দাগনভূঞা বাজার গুলোতে বেড়েছে মাছ,সবজি ও ডিমসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্যের দাম। তবে কিছুটা দাম কমেছে মুরগি ও আদার। তবে ছ কাঁচা মরিচের দাম ও বেশি। এছাড়া চাল ও রসুনের দাম আগের মতোই অপরিবর্তিত রয়েছে।

রবিবার (১৬ জুলাই) দাগনভূঞা সবজির বাজার ঘুরে দেখা যায়, কিছু সবজির দাম কমলেও, বেশিরভাগ সবজির দাম ঈদের পর বেড়েছে। এর জন্য বৃষ্টি এবং সরবরাহের ঘাটতিকে দুষছেন বিক্রেতারা।

তারা জানান, বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি ধুন্দুল ৬০ টাকা, পেঁপে ৬০ টাকা, করলা ১০০ টাকা,বেগুন ৬০-৯০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, পটল ৪০-৫০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা, টমেটো ১৪০- ১৬০টাকা, শসা ৫০-৫৫ টাকা, গাজর ১৫০-১৭০ টাকা, লতি ৭০ টাকা,কুমড়া ৫০ টাকা ও কাকরোল ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতি পিস লাউ ৬০-৮০ টাকা, চাল কুমড়া ৫০ টাকা, বাধাকপি ৬০ টাকা ও লেবুর হালি ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি আটি পুঁই শাক ৩০ টাকা, কুমড়ার শাক ৩০-৪০ টাকা, লাল শাক ৩০ টাকা, কলমির শাক ৩০ টাকা এবং ডাটা শাক ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এক সবজি বিক্রেতা বলেন, টমেটো, গাজর, কাকরোল, বেগুনসহ বেশকিছু সবজির দাম কেজিতে বেড়েছে। শুধু টমেটোর দামই ঈদের পর কেজিতে ৫০ টাকা বেড়েছে। দাম বাড়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ঈদের পর এখনো বিভিন্ন জেলা থেকে সবজির ট্রাক আসাও পুরোপুরি শুরু হয়নি। ফলে বাজারে সবজির ঘাটতি রয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  পাইকগাছায় বস্তা প্রতি চালে বেড়েছে ৩/৪'শ টাকা

এদিকে সবজির দাম বাড়ায় বিপাকে পড়ছেন ক্রেতারা। বাজার করতে আসা নাসের বলেন, ঈদের আগে আর পরে কি? সবসময়ই তো দাম বেশি। ৭০-৮০ টাকার নিচে তো কোনো সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা একটি বাজেট নিয়ে বাজার করতে আসি। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সে বাজেটের দেড় গুণ বেশি টাকা দিয়েও চাহিদামতো বাজার করা যায় না। সবজি কিনতেই ৫০০ টাকার বেশি খরচ হয়ে যায়।

শুধু সবজি নয়, দাম বেড়েছে আলু ও পেঁয়াজের। ঈদের আগে ১৮০ টাকায় বিক্রি হওয়া প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) আলু এখন বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। ১৫০ টাকায় বিক্রি হওয়া ভারতীয় পেঁয়াজের পাল্লা এখন বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৩০ টাকায়। তবে রসুনের দাম ১৬০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কমেছে আদার দাম। ঈদের আগে ৬০০ টাকায় বিক্রি হওয়া আদা এখন ৩০০-৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আলুর দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে এক পাইকারি বিক্রেতা বলেন, ঈদের পর এখনো আলুর ট্রাক পুরোপুরি আসা শুরু হয়নি। বাজারে আলুই নেই। তাই দাম বেশি।

পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে এক বিক্রেতা বলেন, ঈদের সময় বর্ডার বন্ধ ছিল। যার কারণে ভারতীয় পেঁয়াজ আসেনি। তাই দাম বেড়েছে। এখন আবার আমদানি শুরু হয়েছে। দুই-তিন দিনের মধ্যে দাম কমে যাবে।

ঈদের পর প্রতি হালি ডিমেও দাম বেড়েছে দুই টাকা। বর্তমানে প্রতি হালি লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫২ টাকা।তবে বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৫০-১৬০ টাকা, লাল মুরগি ২৫০- ২৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ  দামের চাপে এক কাতার

মুরগির দাম কমার কারণ জানতে চাইলে এক বিক্রেতা বলেন,মানুষের ফ্রিজে এখনো কোরবানির মাংস রয়েছে। যার কারণে মুরগির চাহিদা এখন কম,দামও কমেছে।

এদিকে আগের মতোই অপরিবর্তিত আছে সব ধরনের চালের দাম। বর্তমানে প্রতি কেজি মিনিকেট চাল ৬৫ থেকে ৭৫ টাকা, নাজিরশাইল ৭০ থেকে ৭৮ টাকা, আটাশ ৫২ থেকে ৫৪ টাকা, নবাব পাইজাম ৫৮টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ব্যাপকভাবে দাম বেড়েছে মাছের। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি রূপচাঁদা ৯০০ থেকে এক হাজার টাকা, ইলিশ ১৫০০ থেকে ৩০০০ টাকা, কোরাল ৯০০ টাকা, রুই ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, কাতল ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, পুঁটি ১২০০ টাকা, বোয়াল ৪০০ টাকা, চিড়িং ৭৫০ টাকা, পাবদা ৩০০ টাকা, শিং ৩৫০ টাকা, পাঙ্গাস ২০০-২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারা বলছেন, বাজারে কোনো কিছু কিনেই শান্তি নেই সব কিছু দাম বেশি। মাছ, মাংস, সবজি থেকে শুরু করে সব কিছুর দাম বাড়তি। বাজারে ৫০-৬০ টাকার নিচে কোন সবজি পাওয়া যায় না।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন