নানামুখী উদ্যোগ পরও বেড়েছে ব্যাংকিং খাতের খেলাপি ঋণ। এ সময়ে নতুন করে ২২ হাজার ৩৭৭ কোটি টাকার ঋণ খেলাপি হয়েছে ব্যাংকগুলোতে। দেশের ব্যাংকিং খাতে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা। যার মধ্যে মন্দ মানের খেলাপি ১ লাখ ৪৭৩ কোটি টাকা।
গত বছরে ব্যাংকিং খাতে মন্দ ঋণ বেড়ে ছিলো ১৭ হাজার ৮৩৮ কোটি টাকা। যদিও গত জানুয়ারিতে খেলাপি ঋণ বাড়বে না বলে অর্থমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন। এছাড়াও ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানিয়েছিলেন তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত নয় মাসে শুধু পরিমাণ নয়, খেলাপি ঋণের হারও বেড়েছে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর শেষে দেশে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের হার ছিল ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ। তবে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে এ হার দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৯৯ শতাংশে ।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করা হয়েছে ২১ হাজার ৩০৮ কোটি টাকার। কিন্তু পরবর্তী তিন মাসে তা রেকর্ডসংখ্যক ঋণ পুনঃতফসিল করা হয়েছে। তার পরও কোনো ভাবে কমেনি খেলাপি ঋণের হার ও পরিমাণ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে দেশের ব্যাংকিং খাতে বিতরণ করা ঋণের দাঁড়িয়েছে ৯ লাখ ৬৯ হাজার ৮৮২ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়ে গেছে ১ লাখ ১৬ হাজার ২৮৮ কোটি টাকার ঋণ।
জুন শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ১২ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা। সে হিসাবে শেষ তিন মাসে দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর শেষে ৯৯ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ ছিল দেশের ব্যাংকিং খাতে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের সংস্কৃতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে। খেলাপি ঋণ কমানোর জন্য যেসব কথা বলা হচ্ছে, সেগুলো অর্থহীন।
তিনি বলেন, ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের কারণেই সংকট তৈরি হয়েছে দেশের ব্যাংকিং খাতে। অথচো তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিয়ে পুরস্কৃত করা হচ্ছে। এ জন্য অন্যরাও এতে উৎসাহ পাচ্ছে। খেলাপিদের যদি ভালো গ্রাহকদের তুলনায় বেশি সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয় তাহলে পরিস্থিতি খারাপই হবে।
আনন্দবাজার/এম.কে