এডিবির মূল্যায়ন–
অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে এশিয়ায় এগিয়ে বাংলাদেশ
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের প্রভাবে বিশ্ব অর্থনীতির বিপর্যয় ঘটেছিল আশঙ্কাজনকভাবে। তবে সম্প্রতি করোনার প্রভাব কাটিয়ে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বিশ্ব। এক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশে। বিশেষ করে এশীয় দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ঘটেছে। যা রীতিমতো প্রশংসনীয় হয়ে ধরা দিচ্ছে বিশ্বের কাছে। বিশ্বসংস্থাগুলোর বিচারে শক্তিশালী এ পুনরুদ্ধারে সরকারের দেওয়া প্রণোদনা, সাপোর্টিভ ফিসক্যাল পলিসি, প্রবাসী আয়ের ওপর প্রণোদনা এবং সঠিক মুদ্রানীতি নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে। এমনটাই মনে করছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
এডিবির পূর্বাভাস মতে, চলতি অর্থবছর শেষে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধি দাঁড়াবে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ। আগামী ২০২২-২০২৩ অর্থবছর শেষে তা দাঁড়াতে পারে ৭ দশমিক ১ শতাংশে। সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি, বেসরকারি খাতের সক্রিয় অংশগ্রহণ, অভ্যন্তরীণ চাহিদা ও রপ্তানি এ প্রবৃদ্ধির পেছনে ভূমিকা রাখছে বলে জানিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। বাংলাদেশের অর্থনীতি টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের ‘সঠিক পথেই’ আছে বলে মনে করছে সংস্থাটি।
গতকাল বুধবার সংস্থাটির ঢাকা কার্যালয়ে ‘এশীয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক ২০১৮’ এর এক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়। এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিং ভার্চুয়ালি এ তথ্য তুলে ধরেন। সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটি জানায়, ইউক্রেন-রাশিয়ার মধ্যে চলমান যুদ্ধ ও দেশের বাজারে অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি আগামী দুই অর্থবছর সরকার নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি হবে। আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যপণ্য, ভোগ্যপণ্য, গ্যাস ও তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় ২০২২ অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি বেড়ে হবে ৬ শতাংশ।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের প্রভাব কাটিয়ে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের দিক থেকে এশীয় দেশগুলোর তুলনায় এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। যা রীতিমতো প্রশংসনীয় বলে মনে করছেন এডিমন গিন্টিং। তিনি বলছেন, বাংলাদেশে অর্থনীতির শক্তিশালী পুনরুদ্ধারের পেছনে নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে সরকারের দেওয়া প্রণোদনা, সাপোর্টিভ ফিসক্যাল পলিসি, প্রবাসী আয়ের ওপর প্রণোদনা এবং সঠিক মুদ্রানীতি।
এডিমন গিন্টিং আরো বলেন, বাংলাদেশ মধ্য আয়ের ফাঁদ এবং ঋণের ফাঁদে পড়ার সম্ভাবনা নেই। তবে আর্থিক ব্যবস্থাপনা, ঋণ ব্যবস্থাপনার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। একইসঙ্গে রাজস্ব আদায় বাড়াতে শুধু ভ্যাট নির্ভর হয়ে থাকলে চলবে না। কর জাল বাড়াতে হবে। আউটলুকে বলা হয়, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের ফলে সারাবিশ্বের অর্থনীতি আক্রান্ত। তেল গ্যাসের দাম বেড়ে গেছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জে রয়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। জলবায়ু পরিবর্তন ও চলমান করোনা মহামারি থেকে উত্তরণে বেসরকারি খাতের অংশ গ্রহণ দরকার। জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে অবশ্যই বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এছাড়া শুধু তৈরি পোশাক খাতের ওপর নির্ভরশীল না থেকে রপ্তানি বহুমুখী করতে হবে।