ঢাকা | মঙ্গলবার
৭ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
২৩শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অর্থ মন্ত্রণালয়ে ১০ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাব / সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীতকরণের পরিকল্পনা

নীলফামারীর সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার পরিকল্পনা নিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এ জন্য ১০ হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। বরাদ্দ পেলে আগামী ৫ বছরের মধ্যে এটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পরিণত হবে। ভারত, নেপাল, ভুটানের পাশাপাশি বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগে আসবে নতুন গতি। উত্তরাঞ্চলের একমাত্র বিমানবন্দরটি দেশের অন্যতম এভিয়েশন হাব হয়ে উঠবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বেবিচকের প্রধান প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, অর্থ বরাদ্দ পেলে দেড় থেকে দুই বছর লাগবে জমি অধিগ্রহণসহ টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করতে। এর পর রানওয়ে সম্প্রসারণ, নতুন রানওয়ে নির্মাণ এবং আন্তর্জাতিক মানের সেবা নিশ্চিতে অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণে আরও তিন থেকে চার বছর লাগবে।

বেবিচক কর্মকর্তারা জানান, সৈয়দপুর বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হলে নেপাল, ভুটান ও ভারতের উত্তর-পূর্বের সাতটি রাজ্যের সঙ্গে বহুমুখী যোগাযোগ বাড়বে। দেশের অবহেলিত উত্তরাঞ্চলের মানুষ পাবে অর্থনৈতিক ও যোগাযোগে নানা সুবিধা।
সৈয়দপুর বিমানবন্দর নিয়ে নেপাল, ভুটান ও ভারতের আগ্রহও রয়েছে। ২০২০ সালের নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদীপ কুমার গাইওয়ালি বাংলাদেশ সফরে সৈয়দপুর বিমানবন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব করেন। আর ভুটানের অর্থনীতিবিষয়ক সেক্রেটারি কারমা শেরিং ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ সফরকালে সৈয়দপুর বিমানবন্দর ব্যবহারের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। সৈয়দপুর বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক হলে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যসহ যোগাযোগে ব্যাপক সুবিধা পাওয়া যাবে বলেও জানায় দেশ দুটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

বেবিচকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, সৈয়দপুর বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক হলে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব হবে। সৈয়দপুরের কাছেই রয়েছে ভারতের কলকাতা বিমানবন্দর। এখানে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট নামতে না পারায় কলকাতার বিমানবন্দরে যায়। এতে কলকাতা বিমানবন্দরের চাপ তাদের সক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। এখন সৈয়দপুরে আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর থাকলে দুই দেশই উপকৃত হবে। বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পথও সুগম হবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশের সবচেয়ে উত্তরের বিমানবন্দরটি ১৩৬ দশমিক ৫৯ একর জমিতে প্রতিষ্ঠিত। রাজধানী ঢাকা থেকে আকাশপথে ২৬০ কিলোমিটারের এ দূরত্ব যেতে লাগে ৪৮ মিনিট। ৬ হাজার ফুট রানওয়ের বিমানবন্দরটি অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট কার্যক্রম শুরু করে ১৯৭৯ সালে। দেশের অন্যতম ব্যস্ত এ বিমানবন্দরে প্রতিদিন ৩০-৩৫টি ফ্লাইট উড্ডয়ন-অবতরণ করে। রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা বাংলাদেশ বিমানের পাশাপাশি বেসরকারি ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ও নভোএয়ার এখান থেকে নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করছে।

এ বিষয়ে বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া জানান, জমি অধিগ্রহণের জন্য প্রয়োজন সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা। আর অন্যান্য কাজে লাগবে ৫ হাজার কোটি টাকা। সব মিলিয়ে বিমানবন্দরটি আন্তর্জাতিক মানে উন্নয়ন কাজে ব্যয় হবে অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকা। এ প্রস্তাবনা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

আনন্দবাজার/ এমকে

সংবাদটি শেয়ার করুন