ঢাকা ও চট্টগ্রামভিত্তিক ৪০টি প্রতিষ্ঠান রপ্তানি আয় থেকে উপার্জিত ৫৮৮ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা দেশে আনেনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্য রয়েছে ক্রিসেন্ট, বিসমিল্লাহ এবং বেক্সিমকোসহ ঢাকা ও চট্টগ্রামের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন অনিয়ম ও প্রতারণার মাধ্যমে এ অর্থ দেশে আনেনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ঢাকাভিত্তিক শীর্ষ ২০টি প্রতিষ্ঠান ৫৫৯ মিলিয়ন ডলার দেশে আনেনি। আর চট্টগ্রামভিত্তিক শীর্ষ ২০ প্রতিষ্ঠান প্রায় ৩০ মিলিয়ন ডলারের রপ্তানি আয় আনেনি। সব মিলিয়ে ৫৮৮ মিলিয়ন ডলার, যা দেশীয় মুদ্রায় প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা। ঢাকার প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৬৪ দশমিক ৭৬ মিলিয়ন ডলার দেশে আনেনি ক্রিসেন্ট গ্রুপের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান রিমেক্স ফুটওয়্যার। জনতা ব্যাংক থেকে পাঁচ হাজার কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ক্রিসেন্ট গ্রুপের এম এ কাদের ও তার ভাই জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আব্দুল আজিজের বিরুদ্ধে।
এদিকে তাদের আরও দুটি প্রতিষ্ঠান ক্রিসেন্ট লেদার প্রোডাক্টস এবং রূপালী কম্পোজিট লেদারওয়্যার এক্সপোর্ট যথাক্রমে ৫৬ দশমিক ২৫ মিলিয়ন ডলার এবং ৫১ দশমিক ৭১ মিলিয়ন ডলার দেশে আনেনি। ক্রিসেন্ট গ্রুপ রপ্তানি করেও দেশে আনেনি ১৭৩ মিলিয়ন ডলার বা দুই হাজার কোটি টাকার বেশি রপ্তানি আয়।
ভুয়া রপ্তানি বিল তৈরি করে জনতা ব্যাংকসহ পাঁচ ব্যাংক থেকে এক হাজার ১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে অভিযুক্ত বিসমিল্লাহ গ্রুপের চারটি প্রতিষ্ঠান থেকে রপ্তানি আয়ের প্রায় ১২৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা এক হাজার ৪৬৩ কোটি টাকা দেশে আনেনি। বিসমিল্লাহ গ্রুপের আলপ্পা কম্পোজিট টাওয়েল ৫৮ দশমিক ১ মিলিয়ন ডলার, বিসমিল্লাহ টাওয়েল ৪১ দশমিক ৪৫ মিলিয়ন ডলার, হিন্দুলওয়ালী টেক্সটাইল ১৪ দশমিক ৫৪ মিলিয়ন ডলার এবং সাহাবিশ কম্পোজিট টাওয়েল ৯ দশমিক ৬৯ মিলিয়ন ডলারের রপ্তানি আয় দেশে আনেনি।
দেশে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন সুবিধা আদায় করে নেওয়া বেক্সিমকো গ্রুপ প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে- বেক্সটেক্স গার্মেন্টস ২৪ মিলিয়ন ডলার, ইন্টারন্যাশনাল নিটওয়্যার অ্যান্ড অ্যাপারেলস ২৫ দশমিক ১৮ মিলিয়ন ডলার, অ্যাসেস ফ্যাশন ২৪ দশমিক ৪৫ ডলার এবং অ্যাপোলো অ্যাপারেলস ২৩ মিলিয়ন রপ্তানি আয় দেশে ফেরত আনেনি।
আকিজ গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান আকিজ জুট মিলস রপ্তানি আয়ের ২০ দশমিক ৮৩ মিলিয়ন ডলার দেশে আনেনি। দেশে আসেনি লেনি ফ্যাশনের ৩২ দশমিক ৫৮ মিলিয়ন ডলার, এসবি এক্সিমের ৩১ দশমিক ৬৫ মিলিয়ন ডলার, এসকিউ সেলসিয়াসের ২৭ দশমিক ২৮ মিলিয়ন ডলার, অ্যাপোলো অ্যাপারেলসের ২৩ মিলিয়ন ডলার, কুন টং অ্যাপারেলসের ১৫ দশমিক ১ মিলিয়ন ডলার, কাদেনা স্পোর্টসওয়্যারের ১০ মিলিয়ন ডলার, রেডপয়েন্ট জ্যাকেটসের ৯ দশমিক ৯৮ মিলিয়ন ডলার, জেপডক’সর ৯ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার এবং জেন’সর ৪ মিলিয়ন ডলার এবং এসকিউ বিরিছিনার ৮ দশমিক ৮৩ মিলিয়ন ডলারের রপ্তানি আয়।
এছাড়াও, চট্টগ্রামভিত্তিক শীর্ষ ২০টি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দেশে আসেনি নর্থপোল বিডি ১০ দশমিক ৮৩ মিলিয়ন ডলার, নর্ম আউটফিট অ্যান্ড অ্যাকসেসরিজ ৩ দশমিক ৩৪ মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার, ভেলটেক্স ইন্টারন্যাশনাল ২ দশমিক ৮৩ মিলিয়ন ডলার, মোডিস্টে (চট্টগ্রাম ইপিজেড) ২ দশমিক ৬২ মিলিয়ন ডলার এবং এসএন ফ্যাশন ১ দশমিক ৬২ মিলিয়ন ডলারের রপ্তানি আয়।