ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করছাড়ে আরও কঠোর হলো আইএমএফ

করছাড়ে আরও কঠোর হলো আইএমএফ

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) দেশে বার্ষিক লেনদেন তিন কোটি টাকার বেশি হয়, এমন প্রতিষ্ঠানের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব দিয়েছে। এ নিয়ে আসছে বাজেটে আইসিটি খাত, রপ্তানিমুখী পোশাক ও চামড়াশিল্প, এলপিজি ও মোবাইল ফোনশিল্পের করছাড় তুলে দিতে কঠোর অবস্থানে সংস্থাটি। এমনকি প্রবাসী আয়ে কর বসানোর প্রস্তাব করেছে সংস্থাটি।

আগারগাঁওয়ের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট ও আয়কর বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আইএমএফের গবেষণা বিভাগের উন্নয়ন সামষ্টিক অর্থনীতি শাখার প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিওয়ের নেতৃত্বে একটি দল গতকাল রোববার (২৮ এপ্রিল) সভা করেন। সভায় এসব পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এ সময় এনবিআরও ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের তৃতীয় কিস্তি পাওয়ার আগে সংস্থাটির দেয়া শর্ত বাস্তবায়নের নানা দিক তুলে ধরে।

এদিকে এনবিআর কর ফাঁকি ধরা ও রাজস্ব আয়ের পূর্বাভাস তৈরির কৌশল ঠিক করতে সংস্থাটির সহায়তাও চেয়েছে। জানা যায়, আইএমএফ আসছে বাজেটেই বাস্তবায়ন করতে হবে এমন কিছু বিষয় পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনার মাধ্যমে এনবিআর কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তুলে ধরে। এতে বলা হয়, আসছে বাজেটেই বাড়তি জিডিপির শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ বেশি রাজস্ব আদায় করার ঘোষণা থাকতে হবে।

একই সঙ্গে কীভাবে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর বাড়ানো যায়, তার একটি দীর্ঘ ও স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা থাকতে হবে, যা আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে হবে। আসছে বাজেট থেকেই সব বড় কোম্পানির ই-রিটার্ন ও অনলাইনে করের টাকা জমা দেয়া বাধ্যতামূলক করতে হবে। না হলে ওই সব প্রতিষ্ঠান করছাড় ও রেয়াতি হারে কর দেয়ার সুযোগ পাবে না। আইএমএফ তাদের উপস্থাপনায় আসছে অর্থবছরের পর আর কোনোভাবেই ওই খাতে দেয়া কর অবকাশের মেয়াদ বাড়ানোর পক্ষে নয়।

এছাড়া, আইসিটি খাতের কর অবকাশ আসছে জুনে শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। সংস্থাটি এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে। তৈরি পোশাক খাত, চামড়া খাত, এলপিজি ও মোবাইল ফোন তৈরি শিল্প খাতে শুল্ক-কর ও ভ্যাট রেয়াত-সুবিধা দেয়া আছে। আইএমএফ মনে করে, এসব সুবিধা আর থাকা উচিত নয়। এনবিআরের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত একাধিক বৈঠকে তারা এসব প্রস্তাব ও শর্তের ব্যাপারে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে। পরে এনবিআরের পক্ষ থেকেও তাদের শর্তের বাস্তবায়ন ও সামনে কী কী পদক্ষেপ নেয়া হবে, তার একটি পৃথক উপস্থাপনা তুলে ধরা হয়।

ওই উপস্থাপনা থেকে জানা যায়, এনবিআর আইএমএফের দেয়া শর্তের বেশির ভাগই বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছে। আসছে বাজেটে অনেক সাহসী পদক্ষেপ নেয়া হবে জানিয়ে এনবিআর জানায়, কিছু সামনে বাস্তবায়ন করা হবে। বাড়তি রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা পূরণে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, সক্ষম করদাতাকে করের জালে আনতে বাধ্য করা, ঢালাও কর অবকাশ কমিয়ে আনা, কর ফাঁকি কমিয়ে আনা, নতুন করদাতা খুঁজে বের করা, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অনলাইন সম্পৃক্ততা বাড়ানো।

সংবাদটি শেয়ার করুন