বৈদেশিক লেনদেনে বাণিজ্য ঘাটতি কমলে আর্থিক হিসাবে রেকর্ড ঘাটতিতে পড়েছে দেশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) আর্থিক হিসাবে ঘাটতির পরিমাণ সাত বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।
শুধু জানুয়ারি মাসে এই হিসাবে ঘাটতি বেড়েছে ২১১ কোটি ডলার। রোববার (১০ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক লেনদেনের হালনাগাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদন দেখা যায়, চলতি হিসাবে উদ্বৃত্তাবস্থা বজায় থাকলেও আর্থিক হিসাবে ঘাটতি কমছেই না। উল্টো জানুয়ারি মাসে ঘাটতি বেড়েছে প্রায় ২১১ কোটি ডলার। সব মিলে চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে আর্থিক হিসাবে ৭৩৫ কোটি ৪০ লাখ ডলারের ঘাটতি তৈরি হয়েছে।

গত ডিসেম্বর পর্যন্ত এই ঘাটতির পরিমাণ ৫২৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার। যদিও নভেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরে আর্থিক হিসাবে ঘাটতি ৮ কোটি টাকা কমেছিল।
ডিসেম্বরে আইএমএফ, এডিবিসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থার কাছ থেকে ১২০ কোটি ডলারের বেশি ঋণ সহায়তা এসেছিল। ফলে আগের ঋণ পরিশোধের চাপ থাকার পরও আর্থিক হিসাব ঘাটতি কিছুটা কমেছিল। তবে গত অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে এ হিসাবে মাত্র ৮১ কোটি ডলারের ঘাটতি ছিল।
আর্থিক হিসাবে ঘাটতি বৃদ্ধির পেছনে বিদেশি বিনিয়োগ ও ঋণ কমে যাওয়া এবং আগের ঋণ পরিশোধের চাপ বৃদ্ধিকে দায়ী করা হচ্ছে।
দেশে চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে আমদানি ব্যয় হয়েছে ৩ হাজার ৬০২ কোটি ডলার। গত অর্থবছরে একই সময়ে আমদানিতে ব্যয় হয়েছিল ৪ হাজার ৪০২ কোটি ডলার।
অন্যদিকে প্রথম সাত মাসে রপ্তানি আয় বেড়েছে ২ দশমিক ৫০ শতাংশ। এ সময়ে রপ্তানি আয় হয়েছে ৩ হাজার ১৩৯ কোটি ডলারের। গত অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি আয় হয়েছিল ৩ হাজার ৬৩ কোটি ডলার। এতে বিদেশের সঙ্গে দেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমে দাঁড়িয়েছে ৪৬২ কোটি ৮০ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল প্রায় ১ হাজার ৩৩৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার। যদিও শুধু জানুয়ারি মাসে নতুন করে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে প্রায় ৩১ কোটি ডলার।
এছাড়া প্রতিবেদন অনুযায়ী, আমদানি ব্যয় ও রপ্তানি আয়ে ব্যবধান কমার সঙ্গে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর ভর করে প্রথম সাত মাসে চলতি হিসাবে ৩১৪ কোটি ৮০ লাখ ডলারের উদ্বৃত্ত বজায় রয়েছে। তবে গত অর্থবছরের একই সময়ে চলতি হিসাবে প্রায় ৪৬৪ কোটি ডলারের ঘাটতি ছিল।