দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আবারও নীতি সুদহার বাড়িয়েছে। ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে রেপোর সুদ ৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ করা হয়েছে। এ ছাড়া স্পেশাল রেপোর সুদ ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ করা হয়েছে।
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল (২৬ নভেম্বর) এ খবর জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংক এর আগে গত জুন মাসে রেপো ও স্পেশাল রেপোর সুদ ৭৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়ানো হয়। গ্রাহক পর্যায়ে স্মার্টের সঙ্গে এখন থেকে যোগ হবে ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ, যা আগে ৩ দশমিক ৫০ শতাংশ ছিল। এর ফলে গ্রাহক পর্যায়ে সুদহার বাড়বে। দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি চলতি বছরের ডিসেম্বর শেষে পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে ৮ শতাংশে এবং ২০২৪ সালের জুন শেষে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনা এবং বিনিময় হার ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে সুদহার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পলিসি রেট তথা ওভারনাইট রেপো সুদহার বিদ্যমান শতকরা ৭.২৫ শতাংশ থেকে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি করে ৭.৭৫ শতাংশে পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। নীতি সুদহার করিডোরের ঊর্ধ্বসীমা স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটি (এসএলএফ) সুদহার বিদ্যমান শতকরা ৯.২৫ শতাংশ থেকে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি করে ৯.৭৫ শতাংশে পুনর্নির্ধারণ হলো। নীতি সুদহার করিডোরের নিম্নসীমা স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি (এসডিএফ) সুদহার বিদ্যমান শতকরা ৫.২৫ শতাংশ থেকে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি করে ৫.৭৫ শতাংশে পুনর্নির্ধারণ এবং ঋণের সুদহার নির্ধারণের ক্ষেত্রে সব খাতে স্মার্ট রেটের সঙ্গে প্রযোজ্য বিদ্যমান মার্জিন ২৫ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিনিময় হারকে বাজারমুখী করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের চলমান প্রচেষ্টা জোরদারকরণ এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, নীতি সুদহার করিডোর পুনর্নির্ধারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সভাপতিত্বে বুধবার অনুষ্ঠিত সভায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তা ছাড়াও অর্থনীতিবিদরা অংশ নেন। অর্থনীতিবিদরা বাজারভিত্তিক বিনিময় হার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণ এবং ব্যাংকিং খাতে ক্রমবর্ধমান নন-পারফর্মিং লোন সমস্যা মোকাবিলায় বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নেওয়ার পক্ষে সভায় গুরুত্বারোপ করেন।
এ ছাড়াও উক্ত সভায় বর্তমানে বিরাজমান উচ্চ মূল্যস্ফীতিসহ বিনিময় হার এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ প্রশমনে বাংলাদেশ ব্যাংকের চলমান প্রচেষ্টাকে অব্যাহত রাখার ব্যাপারে একমত পোষণ করেন। সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গৃহীত নীতি পদক্ষেপ, বিশ্ববাজারের পণ্য মূল্যে নিম্নমুখী গতিধারা, আসন্ন আমন ধানের ফলন ভালো হওয়ার সম্ভাবনা এবং শীতকালীন ফসল সরবরাহ বৃদ্ধির সূত্রে আগামী মাসগুলোতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি সহনীয় মাত্রায় নেমে আসবে বলে সভায় আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।