ঢাকা | শুক্রবার
১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আখের দেশে পান চাষে সফল যে নারী

আখের দেশে পান চাষে সফল যে নারী

তারুণ্যের এ সময়টায় ঘুরতে কার না ভালো লাগে। তেমনই একদিন ঘুরতে গিয়ে চোখে পড়লো এক নারী পান চাষীর জীবন সংগ্রামের দৃশ্য। তিনি পান চাষের সাথে গত এক যুগ ধরে আছেন জড়িত। চাঁদপুরে ফরিদগঞ্জ উপজেলার এই সংগ্রামী নারীর নাম তপতী মজুমদা

জানা গেল, তার স্বামীও করেন রোজগার। তবে স্বামী রোজগার করলেও পাশাপাশি পরিবারের বাড়তি আয়ের জন্য স্বামী-সন্তান এবং নিজের প্রত্যক্ষ পরিচর্যায় প্রতিবছর তপতী করেন পানের চাষ। দীর্ঘ জীবন সংগ্রামে নানান চড়াই-উতরাই পার করার জন্য বছর ৩০ উর্ধ্ব এই নারীর জীবন সংগ্রামের স্বর্ণকথা মুগ্ধ করবে যে কারো মন। রুপকথার ফিনিক্স পাখির মতো সংগ্রামী নারী তপতী মজুমদার জন্মেছিলেন লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার ক্যাম্পেরহাটের একটি সনাতন হিন্দু পরিবারে।

তার কাছ থেকে জানা যায়, ক্যম্পেরহাট এলাকায় অন্যান্য চাষীদের মতো পান চাষ করেন তার বাবাও। ঘাম ঝরিয়ে শ্রম দিয়ে করেন পানের বরজের পরিচর্যা। এক্ষেত্রে মেয়ে তপতীর অনুপ্রেরণার উৎস তার বাবা- এমনটিই জানান তপতী মজুমদার। বাবার পেশাকে ছোটো করে না দেখে বাবার পরামর্শে স্বামীর বাড়ি চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার চরমুরালি গ্রামে শুরু করেন পানের চাষ। বাবা ও স্বামীর বাড়িতে তপতী মজুমদারের পান চাষের এ সময়কাল ছাড়িয়েছে দীর্ঘ ১ যুগেরও বেশি সময়। ভারত-বাংলাদেশেরের আন্তঃসীমান্ত নদী ডাকাতিয়ার কোল ঘেষে রায়পুর-ফরিদগঞ্জের বর্ডার রেখা এলাকায় অবস্থিত তার এই পানের বরজ।

ফরিদগঞ্জ মুলত আখ চাষের জন্য বিখ্যাত। আখের দেশে সংগ্রামী নারী তপতী মজুমদারের টানাপোড়েনের সংসার হলেও পান চাষে পরিবারে বিরাজ করছে কিছুটা স্বস্তি। সন্তানরাও করছে পড়াশোনা। দুঃখের বিষয় হলো, অনেক সময় পরিশ্রম অনুযায়ী পানের দাম পান না সংগ্রামী তপতী মজুমদারের মতো পান চাষীরা। তপতী মজুমদারের মতো অনেক পান চাষীর বরজও পড়ে চোখে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে চাষীরা পান প্রেরণ করেন দেশের বিভিন্ন জায়গায়। পান চাষে অনেক পরিবারে কিছুটা আর্থিক সচ্ছলতা এলেও সরকারি-বেসরকারি নজরদারির অভাবে অনেকেই হারাচ্ছেন পান চাষের আগ্রহ। চাষীরা জানান, এ অঞ্চলে সাধারণত এপ্রিল, মে এবং জুন মাস পানের অধিক হারে বেড়ে ওঠা এবং অন্যান্য মৌসুমের তুলনায় অধিক উৎপাদনের সময়

সংগ্রামী নারী তপতী মজুমদার এবার প্রায় ১০ শতাংশ জমিতে করেছেন পানের চাষ। পান একবার চাষ করলে ১-৫ বছর আবার কোনো কোনো সময় ১০ বছরেও বীজ চিটানোর প্রয়োজন হয়না- কথোপকথনে এমনটিও জানান বছর ৩০ বয়সী এ সংগ্রামী নারী। বাড়তি আয়ের বিষয়টি সফলতার অংশ হিসেবেই দেখছেন তিনি। শুধু যে পান চাষের সাথে জড়িত এ যুগের সংগ্রামী নারী তপতী মজুমদার- তা কিন্তু নয়। গৃহস্থালির কাজকর্ম দেখাশোনার পাশাপাশি করেন হাঁস-মুরগি পালন। পশু পালনেও রয়েছে বেশ আগ্রহ। তার অদম্য আগ্রহ আর মনোবল দেখে অনেকেই করছেন তার প্রশংসা।

সংবাদটি শেয়ার করুন