- লেনদেন সেরা ওরিয়ন ফার্মা
- লেনদেন ডিএসইতে ১৮শ কোটি টাকা
- সিএসইতে ৪০ কোটি টাকা
- বেশির ভাগ কোম্পানির দরে পতন
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল রবিবার সব ধরনের সূচক উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) একটি বাদে বাকি চার ধরনের সূচক উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন দুই স্টকের লেনদেন পরিমান বেড়েছে। ডিএসইর লেনদেন কমে ১৮শ কোটি টাকায় ঘরে অবস্থান করেছে। সিএসইর লেনদেন কমে ৪০ কোটি টাকার ঘরে চলে এসছে। তবে এদিন দুই স্টকের বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর কমেছে।
পুঁজিবাজার গুটিকয়েক বাদে অধিকাংশ খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর পতন হয়েছে। এর মধ্যে ব্যতিক্রম শুধু বিমা খাত। বিমা খাতের ৮৫ ভাগ কোম্পানি দর বেড়েছে। এধরনের বৃদ্ধি পাওয়ায় বীমার ওপরে ভর করে পুঁজিবাজার ঊর্ধ্বমুখী। এছাড়া সিরামিক, আইটি, পাট এবং ভ্রমন অবসর খাতের অধিকাংশ কোম্পানিগুলোর শেয়ার দরও বেড়েছে।
সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার লেনদেনের শুরুতে শেয়ারবাজারে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়লেও শেষ পর্যন্ত দরপতনের তালিকা বড় হয়েছে। যদিও এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ছিল বিমা খাতের কোম্পানিগুলো। এ খাতের প্রায় সবকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বেড়েছে। ফলে দরপতনের তালিকা বড় হলেও বিমা খাতের ওপর ভর করে ঊর্ধ্বমুখী থেকেছে শেয়ারবাজার।
সরকারের নতুন সময় সূচির প্রথম কার্যদিবস গত ২৪ আগস্ট (বুধবার) পতন হয়েছিল। যা আগের টানা ছয় কার্যদিবস উত্থানের পর এই মন্দা। পতন পরের গত দুই কার্যদিবস (বৃহস্পতিবার ও রবিবার) ধরে উত্থানে রয়েছিল পুঁজিবাজার। ওই সময় লেনদেন দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছিলো। পরেরদিন সোমবার লেনদেনে ভাটা পড়ে। সেখান থেকে পরের দুই কার্যদিবস লেনদেন কিছুটা বাড়ে। এর পরেরদিন লেনদেন কমে। পরের কার্যদিবস লেনদেন বেড়ে ২৩শ কোটি টাকায় ওঠেছিল। কমে ফের লেনদেন ১৩শ কোটি টাকার ঘরে অবস্থান করেছিল। গত বুধবার লেনদেন বেড়ে ২২শ কোটি টাকার ঘরে ছিল। গত বৃহস্পতিবার লেনদেন ১৯শ কোটিতে নামে। লেনদেন কমে গত ১১ সেপ্টেম্বর (রবিবার) ১৬শ কোটি টাকা, সোমবার ১৩শ কোটি টাকা, মঙ্গলবার ১৪শ কোটি টাকা, বুধবার ১৩শ কোটি টাকা এবং বৃহস্পতিবার ১২শ কোটি টাকার ঘরে চলে এসেছিল। সেখান থেকে লেনদেন কমে গতকাল রবিবার ১৮শ কোটি টাকায় চলে এসেছে। এদিন ডিএসইর সব ধরনের সূচকের পতন হয়েছে। তবে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে। এদিন বিক্রয়ের চাপ তুলনামূলক বেশি ছিল।
গতকাল রবিবার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৮১৩ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার। আগের কার্যদিবস বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ২৪২ কোটি ৭৭ লাখ টাকার শেয়ার। এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৭ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৫১৫ দশমিক শূন্য ১ পয়েন্টে। এছাড়া এদিন ডিএসই-৩০ সূচক ১৩ দশমিক ১১ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস সূচক ১২ দশমিক শূন্য ২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ২ হাজার ৩৪৬ দশমিক ৩৫ পয়েন্ট এবং ১ হাজার ৪২৯ দশমিক ৫৫ পয়েন্টে।
গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭১টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ১০৯টি এবং কমেছে ১৪০টির। শেয়ার পরিবর্তন হয়নি ১২২টির। এদিন ডিএসইতে ওরিয়ন ফার্মার শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। ফলে লেনদেন শীর্ষে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। এদিন ওরিয়ন ফার্মা ২২০ কোটি ৫১ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা এদিন অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে বেক্সিমকো ১৩৪ কোটি শূন্য ১ লাখ টাকা, জেএমআই হসপিটাল ৭৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকা, ওরিয়ন ইনফিউশন ৪৬ কোটি ৯৫ লাখ টাকা, ইস্টার্ন হাউজিং ৪৪ কোটি ৭২ লাখ টাকা, জেনেক্স ইনফোসিস ৪৪ কোটি ২৫ লাখ টাকা, বিডি কম ৪২ টাকা ৪৪ লাখ টাকা, ইউনিক হোটেল ৪২ কোটি ৬ লাখ টাকা, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন ৩৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকা এবং লার্ফজি-হোল্ডসিম ৩৪ কোটি ৪১ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।
অপরদিকে সিএসইতে গতকাল বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছে ৩৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা শেয়ার। আগের কার্যদিবস রবিবার ১৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৬৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ৭৫টি, কমেছে ১০১টি এবং পরিবর্তন হয়নি ৯০টির। এদিন সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৫৯ দশমিক ৮৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ২০০ দশমিক ৮৬ পয়েন্টে। সিএসই-৫০ সূচক ৫ দশমিক ৭৬ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স সূচক ৩৫ দশমিক ৬৬ পয়েন্ট এবং সিএসআই সূচক ৮ দশমিক ৮১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৪০৪ দশমিক ৩২ পয়েন্টে, ১১ হাজার ৫০৮ দশমিক ৪৭ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ২৪২ দশমিক ৩৯ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসই-৩০ সূচক ২১ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৪৯০ দশমিক ২১ পয়েন্ট।
এদিন সিএসইতে ওরিয়ন ফার্মার শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। ফলে লেনদেন শীর্ষে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। এদিন ওরিয়ন ফার্মা ৫ কোটি ৬২ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা এদিন অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে বেক্সিমকো ২ কোটি ৪৩ লাক টাকা, বিডিকম ২ কোটি ৭ লাক টাকা, জেএমআই হসপিটাল ১ কোটি ৫১ লাখ টাকা, আইএফআইসি ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা, জেনারেশন নেক্সট ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা, আইপিডিসি ফাইন্যান্স ১ কোটি ৫ লাখ টাকা, ইবনে সিনা ৯৯ লাখ টাকা, ওয়ান ব্যাংক ৯২ লাক টাকা এবং লার্ফাজ-হোল্ডসিম ৮৭ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।