শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশের মাটিতেই ভালো ফলন বিদেশি ফলের

দেশের মাটিতেই ব্যাপক ভাবে আশা জাগাচ্ছে বিদেশি ফল। বর্তমানে দেশের মাটিতেই এখন বাণিজ্যিক ভাবে চাষ করা হচ্ছে ড্রাগন, স্ট্রবেরি, থাই কুল, থাই পেয়ারা, মাল্টা, কমলা, থাই পেঁপে, মেলন, অ্যাভোকাডো, রাম্বুটান—এই ১০ রকম ফল। স্বাদ এবং ফলের ভালো ফলন হওয়াতে আমদানি করা ফলের সাথে প্রতিযোগিতা করে ১৫-২০ শতাংশ পর্যন্ত  দেশের বাজার দখল করে নিয়েছে এ ফল গুলো।

দেশে বর্তমানে আমদানি এবং উৎপাদন মিলিয়ে এসকল ফল ১২ মাসই পাওয়া যায়। মুূল্যও মধ্যবিত্তের একদম নাগালের মধ্যে। এ ছাড়াও স্টার ফ্রুট, পার্সিমন, আঠাবিহীন লাল কাঁঠাল, খেজুর ও থাই শরিফার চাষ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। ৪/৫ বছরের মধ্যে এগুলো বাজারজাত করা সম্ভব হবে বলেও জানান কৃষিবিদরা।

কৃষিবিদ ও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের অভাব, আস্থার ঘাটতি, সংরক্ষণ ব্যবস্থার অপ্রতুলতা এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক প্রকল্প না থাকাসহ বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে আমাদের। যেগুলো নির্মূল করতে পারলে এসকল ফলের উৎপাদন ও বাজার আরও বৃদ্ধি করা সম্ভব। এ ছাড়া উদ্যোক্তাদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য কিছু নীতিগত সহযোগিতাসহ প্রয়োজনে মূলধনের ব্যবস্থাও করতে হবে।

তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, দেশে প্রধান এবং অপ্রধান মিলিয়ে ২৫-৩০ জাতের বিদেশি ফল আমদানি হয়। তবে এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আমদানি হয় মাল্টা, আঙুর, খেজুর, কমলা,আপেল, আনার এবং নাশপাতি। সারা বিশ্বের ৪৬টি দেশ থেকে ওই ছয়টি ফল আমদানি করা হয়। এর মধ্যে চীন, অস্ট্রেলিয়া, মিসর, ভারত, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, নিউজিল্যান্ড, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, ভুটান,দক্ষিণ আফ্রিকা অন্যতম। এসব ফলের মধ্যে এখন সবচেয়ে কম দামে পাওয়া যাচ্ছে সবুজ কমলা ও মাল্টা।

আরও পড়ুনঃ  দেশের উন্মুক্ত জলাশয়ের হুমকি ভয়ংকর সাকার ফিশ

বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুট ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম জানান, আঙুর, আপেল, আনার নাশপাতি, সহ মাত্র কয়েকটি ফলের চাহিদা মেটাতে শতভাগ আমদানির ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে আমাদের। বাকি প্রায় সকল ফলই কিছু না কিছু উৎপাদন হচ্ছে।  এমনকি চাহিদাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই সাথে এগুলোর আমদানিও কমেছে।

ডিএইর কৃষিবিদ নুরুল ইসলাম জানান, কিছু ফলের ক্ষেত্রে দ্রুত হিমাগারে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করার প্রয়োজন হয়। একই সাথে সেগুলোর সরবরাহ করতে হয় নির্দিষ্ট তাপমাত্রার ভ্যানে করে। নয়ত সেগুলো পচে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। এর মধ্যে স্ট্রবেরি অন্যতম। কিন্তু আমাদের সে ব্যবস্থা নেই। এ ছাড়াও দেশে উন্নত জাতের চারা উৎপাদন ও বিতরণের জন্য যে পরিমাণ হর্টিকালচার সেন্টার প্রয়োজন সেটাও নেই।

এছাড়া দেশে বর্তমানে ৬০টির মতো অ্যাবাকাডোর গাছ আছে। থাইল্যান্ডের উচ্চ ফলনশীল স্টার ফুড, আম, লিচু ও শরিফা,  আঠা ছাড়া লাল কাঁঠাল, উন্নত জাতের জাম্বুরা দেশে অল্পবিস্তর উৎপাদন হচ্ছে। অনেকে বাণিজ্যিক ভিত্তিতেও চাষ শুরু করেছে। কয়েক বছরের মধ্যে বিদেশি আরও কয়েকটি ফল দেশীয় উৎপাদনের তালিকায় যোগ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আনন্দবাজার/এইচ এস কে

সংবাদটি শেয়ার করুন