করোনাভাইরাসের কারণে দেশে চলছে সরকার অঘোষিত লকডাউন। ফলে বন্ধ গণপরিবহনসহ সবকিছু। এতে বিরূপ প্রভাব পড়েছে সবজি কৃষকদের উপর। প্রতিবছরই গ্রীস্মকালীন সবজিতে অধিক লাভ করেন কৃষকরা। তবে এবছর গ্রীস্মকালীন সবজি বাঁধাকপি নিয়ে শঙ্কায় কৃষকরা। এসব বাঁধাকপি বিক্রি করে শ্রমিকের খরচও উঠছে না। শ্রমিকের খরচ এবং পরিবহনের কথা চিন্তা করে কৃষকের বাঁধাকপি এখন ক্ষেতেই পঁচে যাচ্ছে।
স্থানীয় বাজারে এসব বাঁধাকপির দাম ২ থেকে ৫ টাকা। মাঠ থেকে বাঁধাকপি আনতেই খরচ হয়ে যায় ৩ থেকে ৪ টাকা। ফলে খরচের ভয়ে এসব বাঁধাকপি মাঠ থেকে আনছেন না কৃষকরা।
কৃষকরা জানান, করোনা ভাইরাসের কারণে বাঁধাকপি জেলার বাইরে পাঠাতে পারছেন না। বাইরে থেকে পাইকারি ক্রেতারাও আসতে পারছেন না। তাই বাঁধাকপি না কাটার কারণে ক্ষেতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার একজন বাঁধাকপি কৃষক বলেন, প্রতিবছরই এই এলাকায় বাঁধাকপির দাম বেশ ভালো থাকে।এবার করোনার কারণে একদম কম। আমরা ক্ষেত থেকে বাঁধাকপি তো তুলবো কিন্তু বেঁচবো কোথায়। ১ টাকা ২ টাকা দামে বিক্রি করতে হবে। এর চেয়ে জমিতে থাকায় ভালো। লেবার খবর, গাড়ি ভাড়া ঘর থেকে দিতে হবে এমন হলে।
আরেকজন কৃষক বলেন, এবছর গ্রীস্মকালীন বাঁধাকপি চাষ করে আমরা বিপাকে পড়েছি। দাম নেই বাজারে। বাঁধাকপি কাটা, বাজারে নিয়ে যাওয়া যে খরচ সেটাও ঘর থেকে দিতে হবে মনে হচ্ছে। প্রতিবছর ক্রেতারা জমিতে এসে বাঁধাকপি নিয়ে যেতো। করোনার কারণে বাইরে থেকে ক্রেতারা আসতে পারছেন না।
মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রমেশ চন্দ্র ঘোষ বাংলানিউজকে জানান, গ্রীস্মকালীন বাঁধাকপি চাষটা বেশ লাভজনক হওয়ায় মিরপুরের বেশ কয়েকজন কৃষক এ বাঁধাকপির চাষ করে থাকেন। প্রতিবছর তারা বেশ ভালো দাম পেয়েছেন। বিঘাপ্রতি খরচ বাদ দিয়ে ৫৫ থেকে ৬০ হাজার টাকা করেও লাভ করেছেন। বিগত বছর দেখা গেছে পাইকারি ক্রেতারা এসে কৃষকদের জমি থেকেই ভালো দামে বাঁধাকপি কিনে নিয়ে গেছে। তবে এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে একটু অসুবিধা হচ্ছে। দাম অনেকটাই কম। তবে কৃষকরা যাতে ন্যায্য দামে বাঁধাকপিসহ অন্যান্য সবজি বিক্রি করতে পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ঢাকার পাইকারি বাজারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।
আনন্দবাজার/ টি এস পি