শনিবার, ১৪ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পেঁয়াজ সংরক্ষণে সহযোগিতা চান চাষীরা

বাজারদর ভালো থাকায় এবছর পাবনায় বেড়েছে পেঁয়াজের আবাদ। গত বছরের চেয়ে এবছর প্রায় ১২ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার বেশী জমিতে আবাদ ও অনূকুল আবহাওয়ায় কাঙ্খিত ফলন পেলে উৎপাদন রেকর্ড ছাড়াবে বলে মনে করছেন চাষীরা। কৃষিবিভাগ বলছে, মার্চের মাঝামাঝিতে পুরোদমে এই পেঁয়াজ বাজারে এলে স্বস্তি ফিরবে মানুষের মাঝে। তবে, ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে আমদানী বন্ধ ও সংরক্ষণে সরকারী সহযোগীতা চেয়েছেন চাষীরা।

পেঁয়াজ ভান্ডারখ্যাত পাবনার গাজনার বিল, ঘুঘুদহ বিলসহ নয়টি উপজেলার ৫১ হাজার হেক্টর জমিতে এবছর পেঁয়াজ আবাদ করেছেন চাষীরা। মার্চের মাঝামাঝিতে উত্তোলন শুরু হবে এসব পেঁয়াজ। তাই আগাছা পরিষ্কার সেচ, সার, কীটনাশকে শেষ মূহুর্তের পরিচর্যায় দম ফেলার ফুসরত নেই চাষীদের। গত মৌসুমে প্রাকৃতিক দূর্যোগে ফলন ভাল হয়নি। পাশাপাশি বৃষ্টিতে ভেজা পেঁয়াজ পঁচে যাওয়ায় সংরক্ষণ করতে পারেননি চাষীরা। তবে, এবার বাজারদর ভালো থাকায় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বাড়তি জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করেছেন চাষীরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভাল ফলনের সম্ভাবনার কথাই জানালেন তারা।

সুজানগরের কয়েকজন কৃষক আলাপকালে জানান, এবার আবহাওয়া ভাল থাকায় গতবারের তুলনায় আবাদও বেশি হয়েছে, ফলনও বেশি হবে। দাম বেশি থাকার কারণে অনেকে ধানের আবাদ বাদ দিয়ে এবার পেঁয়াজ আবাদ করেছেন। এবার এক বিঘা জমি থেকে প্রায় ৫০ মণ পেঁয়াজ উৎপাদনের আশা করছেন কৃষকরা।

চাষীরা জানান, প্রতি মণ পেঁয়াজ চাষে খরচ ১ হাজার থেকে ১২শ’ টাকা। সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় মণপ্রতি উত্তোলন মৌসুমে সে পেঁয়াজ কমদামে বিক্রি করে লোকসান গুণতে হয় তাদের। তবে এবছর দুই হাজার টাকা মণও যদি পেঁয়াজের বাজারদর থাকে তাতেও লাভের মুখ দেখবেন কৃষকরা। এছাড়াও রমজানকে সামনে রেখে সরকার পেঁয়াজ আমদানী করলে ক্ষতির মাত্রা আরো বাড়বে। তাই বিদেশী পেঁয়াজ আমদানী বন্ধের দাবী চাষীদের। সেইসাথে বড় পরিসরে পেঁয়াজ সংরক্ষণে, সরকারী সংরক্ষণাগার গড়ে তোলার দাবীও জানান তারা।

আরও পড়ুনঃ  ভোলায় তরমুজের বাম্পার ফলনে খুশি চাষিরা

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি পাবনার উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ আজাহার আলী জানান, মার্চে পেঁয়াজ বাজারে আসলে ক্রেতাদের মাঝে স্বস্তি ফিরবে। যদিও ইতিমধ্যে দাম কমতে শুরু করেছে। তারপরও সরকারের পরিকল্পনা মাফিক উৎপাদন বাড়িয়ে আমদানী নির্ভরতা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে কৃষি বিভাগ কাজ করছে বলে জানান তিনি।

জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, গত বছর জেলায় ৩৯ হাজার ৩১৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদের বিপরীতে উৎপাদন হয়েছিল ৬ লাখ ৫৮ হাজার ৮৫৩ মেট্রিকটন। আর এবছর ৫১ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদের বিপরীতে সম্ভাব্য উৎপাদন লক্ষ্যামাত্রা ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৮২ হাজার ৮৩০ মেট্রিকটন।

 

আনন্দবাজার/এফআইবি

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন