বগুড়ার ধুনট উপজেলার নিমগাছী ইউনিয়নের নান্দিয়ার পাড়া গ্রামে থাই পেয়ারা চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার আশা করছেন গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম ও সরোয়ার হোসেন নামে উৎসাহী তরুণ দুই যুবক। উপজেলার নিমগাছী ইউনিয়নের নান্দিয়ার পাড়া গ্রামের ফসলি মাঠে এ পেয়ারার চাষ শুরু করেছে তারা।
তরুণ কৃষক জাহাঙ্গীর আলম জানান, লোকমুখে তিনি জানতে পারেন যে, দেশে বারোমাসি থাই পেয়ারা চাষ করে করে অনেকেই স্বাবলম্বি ও লাভবান হচ্ছেন। সে মোতাবেক বগুড়ার শেরপুর উপজেলার স্থানীয় একটি নার্সারি থেকে এ জাতের পেয়ারার চারা সংগ্রহ করে এক একর (৩ বিঘা) জমিতে চাষ শুরু করেন। ১ বছরের মাথায় গাছে ফুল ও ফল আসে। ফল আসার ২৫-৩০ দিন পর থেকে ৬০ থেকে ৮০ টাকা দরে প্রতিসপ্তাহে ৫ থেকে ৭ মণ করে পেয়ারা তুলে বিক্রি করা যায়। যার বাজার মূল্য ২৪০০০-২৬০০ টাকা।
উপজেলার নান্দিয়ার পাড়া গ্রামের কৃষক আলমউদ্দিন মিয়ার ছেলে সরোয়ার হোসেন ও মন্তেজার সরকারের ছোট ছেলে জাহাঙ্গীর আলম। সরোয়ার হোসেন এইচএসসি পাস করে বাড়িতেই বেকার ছিলেন। চাকরির পিছনে না ছুটে তিনি বেছে নেন কৃষিকাজ।
জাহাঙ্গীর আলম স্থানীয় একটি স্কুলের দপ্তরি কাম নৈশ প্রহরী চাকরিরত থাকার পাশাপাশি কৃষিকাজ তার খুব পছন্দের তালিকায় থাকায় শুরু করেন থাই পেয়ারা চাষ।
এক বছর বয়সের প্রতিটি গাছেই থোকায় থোকায় ঝুলছে পেয়ারা। কম সময়ে বেশি লাভজনক থাই পেয়ারা চাষে। এর আগে এলাকায় প্রথম ভারতীয় বল সুন্দরি কূল চাষ করে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন এ যুবক।
পেয়ারাগুলো গাছেই প্যাকেটজাত করায় পোকামাকড় দমনে কীটনাশক তুলনামূলকভাবে কম দিতে হচ্ছে। এতে ফলের রং সুন্দর থাকে। সাংবাদিকদের তিনি আরও জানান, এ জমি থেকে মৌসুমে প্রায় ২ থেকে ৩ লাখ টাকার পেয়ারা বিক্রি করার আশা প্রকাশ করছেন।
তরুণ দুই কৃষক জানান, ৩ বিঘা জমিতে ৯শ’ পেয়ারার চারা লাগানো হয়েছে। এ জাতের পেয়ারা গাছ সহজেই পরিচর্যা করা ও ফল সংগ্রহ করা যায়। তিনি বলেন, মাস খানেক পরে এ মৌসুমের ফল তোলা শেষ হয়ে যাবে। ওই সময় ডাল ছেটে কলমের চারা তৈরি করে প্রায় ২-৩ হাজার কলম করা পেয়ারার চারা বিক্রি করা সম্ভব হবে। সেখানেও একটি প্রফিট আশা করা যায়। সুমিষ্ট ও সুস্বাদু এ ফলের ব্যাপক চাহিদাও রয়েছে বাজারে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও সরকারি সহায়তা পেলে আরো সহজ হবে। তরুণ ও উদীয়মান কৃষক জাহাঙ্গীরসহ যারাই এ ধরনের বারোমাসি থাই পেয়ারার চাষ করছেন, তাদের সকলকেই সার্বিকভাবে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে সহায়তা করার জন্য আকুল আবেদন জানিয়েছেন।