পটুয়াখালী শহরের একটি জনবহুল স্থান পটুয়াখালী লঞ্চ ঘাট। প্রতিদিন ঢাকার উদ্দেশ্যে পটুয়াখালী লঞ্চ টার্মিনাল থেকে ছেঁড়ে যায় তিনটি লঞ্চ। এতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বহু মানুষের ভিড় জমে এখানে। মানুষের সঙ্গে জমা হয় নানা ধরনের ময়লা-আবর্জনা।
টার্মিনালে ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট কোনো স্থান না থাকায় বিস্কুট-চিপস-চানাচুরের প্যাকেট, কলার ছোলা, সিগারেটের প্যাকেট, পানির বোতলসহ নানা ধরনের ময়লা আবর্জনায় পরিপূর্ণ থাকে পুরো লঞ্চ টার্মিনাল। সারাদিনের শেষে রাতে এসব ময়লা আবর্জনা চলে যায় নদীর পানিতে।
সারেজমিনে দেখা যায়, রাতে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা টার্মিনালের সব ময়লা কুড়িয়ে সরাসরি ফেলে দিচ্ছে নদীতে। পটুয়াখালী শহর গড়ে উঠেছে শহরের উত্তর পাশে বয়ে যাওয়া লাউকাঠী আর পূর্ব পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া লোহালিয়া নদীর পাড় ঘেঁষে। লোহালিয়া নদীর পাড়ের উত্তর অংশে গড়ে উঠেছে পুরানবাজার আর লাউকাঠী নদীর পাড়ে গড়ে উঠেছে নিউমার্কেট বাজার
পটুয়াখালী শহরের অত্যন্ত জনবহুল দুটি বাজার পুরান বাজার ও নিউমার্কেট। এ দুই বাজারে নেই বর্জ্য ফেলার নির্দিষ্ট কোনো স্থান। প্রতিদিন যে পরিমাণ বর্জ্য উৎপন্ন হয় তা পুরোটাই চলে যায় নদীর পাড়ে এবং নদীতে। পটুয়াখালী শহরে প্রতিদিন উৎপাদিত ময়লা আবর্জনার বেশ বৃহৎ একটি অংশ নদীতে ফেলায় প্রতিনিয়ত দূষিত হচ্ছে লোহালিয়া ও লাউকাঠী নদী। এতে দিন দিন অপরিষ্কার ও নোংড়া হচ্ছে নদীর পানি। পাশাপাশি এসব বর্জ্য নদীতে ফেলার কারণে দিন দিন ভরাট হয়ে যাচ্ছে নদীর পাড়। অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে শহরের পাড় ঘেঁষে বয়ে যাওয়া লোহালিয়া লাউকাঠী নদী।
পটুয়াখালী পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী জসিমউদ্দীন আরজু বলেন, গত দু বছর আমরা একটি নিরবিচ্ছিন্ন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি। আমরা ইতিমধ্যে আমাদের নিজেদের অর্থায়নে একটি ট্রান্সফারস্টেশন তৈরি করেছি। ট্রান্সফারস্টেশনটি পটুয়াখালী চক্ষু হাসপাতালের পেছনে তৈরি করা হয়েছে। এর আগে শহরের বিভিন্ন স্থানে ময়লা আবর্জনা স্তুপ করে রাখতে হতো যা এখন নির্দিষ্ট একটি স্থানে ফেলা যাবে। পটুয়াখালী শহরে মোট পাঁচটি ট্রান্সফারস্টেশন তৈরি করার পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে, অতিদ্রুত এগুলো তৈরি হয়ে যাবে। এগুলো তৈরি হয়ে গেলে শহরের ময়লা আবর্জনা আর নদী, খাল-বিলে ফেলা হবেনা, আর আমাদের পরিবেশেরও কোনো ক্ষতি হবেনা।
আনন্দবাজার/শহক