ঢাকা | শুক্রবার
২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রংপুরে উদ্বোধনের অপেক্ষায় দৃষ্টিনন্দন বাস টার্মিনাল

রঙরসে ভরপুর তার নাম রংপুর। এ কথাটির যেন সার্থক রুপ দেওয়া হয়েছে নবনির্মিত রংপুর কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনালে। আধুনিক সকল সুবিধা সম্বলিত এ বাসটার্মিনাল এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়। চলছে রঙ ও বাউন্ডারিতে

রঙরসে ভরপুর তার নাম রংপুর। এ কথাটির যেন সার্থক রুপ দেওয়া হয়েছে নবনির্মিত রংপুর কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনালে। আধুনিক সকল সুবিধা সম্বলিত এ বাসটার্মিনাল এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়। চলছে রঙ ও বাউন্ডারিতে আলোকসজ্জার কাজ। ভবনের অসমাপ্ত কাজগুলো চলছে দ্রুতগতিতে। সব ঠিকঠাক থাকলে ৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে নবনির্মিত রংপুর কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনালটি উদ্বোধন হবে মার্চে। উদ্বোধন করবেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি।

সংশ্লিষ্টরা জানায়, জাইকা ও জিওবির অর্থায়নে ২৫ কোটি ৮১ লাখ ৭৭ হাজার ৩৩০ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি শুরু হলেও শেষ হচ্ছে প্রায় ৩১ কোটি টাকায়। ২০১৮ সালের ১৭ অক্টোবর সর্বাধুনিক রংপুর কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনালের নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২৯ হাজার ৬৪৫ বর্গফুট আয়তনের দ্বিতল নবনির্মিত রংপুর কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনালের মূলভবনে থাকছে ওয়ার্কশপ, ড্রাইভার ও কন্ডাকটর রিফ্রেশমেন্ট এবং পর্যাপ্ত পার্কিং ব্যবস্থা।

এছাড়াও রয়েছে নিচতলায় ১৪টি টিকিট কাউন্টার, তিনটি এটিএম বুথ, নারীদের নামাজ ঘর, একটি ডে-কেয়ার সেন্টার, ছয়টি খাবারের দোকান, একটি ওষুধের দোকান, দু’টি পাবলিক টয়লেট, যাত্রীদের বসার স্থান এবং একটি লাগেজ এরিয়া। ভবনটির দ্বিতীয় তলায় থাকছে একটি অত্যাধুনিক মানসম্মত খাবার হোটেল, একটি শিশুদের খেলার রুম, সাতটি দোকান, অত্যাধুনিক ট্রাফিক বিভাগ, কন্ট্রোল রুম, টেকনিক্যাল বিভাগ, প্রশাসনিক বিভাগ, অত্যাধুনিক সভাকক্ষ, একটি পাবলিক টয়লেট, ভিআইপি লাউঞ্জ ও ভিআইপি রুম।

রংপুর কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল থেকে দেশের প্রায় সব জেলাতে গাড়ি চলাচলা করে থাকে। সেই সঙ্গে টার্মিনালটি উত্তরাঞ্চলের মধ্যে বৃহৎ বাসটার্মিনাল হিসেবে পরিচিত। টার্মিনালটি মহাসড়ক ঘেঁষা হওয়ায় প্রায় সময় সড়কে যানজট লেগে থাকতো এবং দূর্ঘটনা ঘটতো। নবনির্মিত সর্বাধুনিক বাসটার্মিনাল নির্মাণের ফলে মহাসড়কে যানজট নিরসন হওয়ার পাশাপাশি যাত্রীসেবার মানও বাড়বে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বাসচালক আব্দুর রহিম জানান, আগে রংপুর কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনালটি ছিল অগোছালো এবং অল্প জায়গা নিয়ে। বর্তমানে এর পরিধি বেড়েছে অনেক। গাড়ি রাখার সমস্যা নিরসনের পাশাপাশি খানা-খন্দও না থাকায় টার্মিনাল এলাকায় কাদাঁ-পানি জমে থাকার কোনো সুযোগ নেই। টিকিট মাষ্টার জিলহাজ হোসেন জানান, বাসের টিকিট কাটতে আগে যাত্রী সাধারণের দাঁড়ানোর জায়গা ছিল না, ঝড়বৃষ্টিতে কোনমতে দোকানের বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকতে হত। তবে আধুনিক এ টার্মিনাল হওয়ায় সেই দুর্ভোগে আর পড়তে হবেনা।

রংপুর থেকে রাজশাহীগামী এক যাত্রী জানান, খুব সুন্দর লাগছে রংপুর বাসটার্মিনালটি। দৃষ্টিনন্দন এ টার্মিনালের কোনো গাড়ির যানজট নেই। শ্রমিক নেতা টিটুল জানান, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে রংপুরের ব্যাপক উন্নয়ন করেছে, এরই ধারাবাহিকতায় পুরাতন রংপুর কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনালটি ভেঙে বৃহৎ পরিসরে একটি সর্বাধুনিক বাসটার্মিনাল নির্মাণ করা হয়েছে। এত সেবারমান বাড়ার পাশাপাশি যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, মহাসড়কে যানজট দূরীকরণসহ যাত্রীদের বিড়ম্বনা দূর করে সেবার মান উন্নয়নের কথা মাথায় রেখে আধুনিক সকল সুবিধা নিশ্চিত করতে রংপুর কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনালটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। এটি এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়। দৃষ্টিনন্দন ও সর্বাধুনিক রংপুর কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনালটি চলতি (ফেব্রুয়ারী) মাসের মাঝামাঝি উদ্বোধনের পরিকল্পনা ছিল, কিন্তু বর্তমানে করোনা পরিস্থিতিতির কারণে সম্ভব হচ্ছে না। আগামী মার্চ মাসে উদ্বোধন হবে আশা করছি।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি’র সঙ্গে কথা বলে মার্চ মাসেই উদ্বোধনের চুড়ান্ত পরিকল্পনা রয়েছে। সেই সঙ্গে আধুনিক এ বাসটার্মিনালটি পরিস্কার-পরিছন্ন রাখতে মটরমালিক, মটরশ্রমিক, প্রশাসনসহ যাত্রীদের কাছে সহযোগিতা চান তিনি।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন